২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধাঞ্জলি;কবি ও কবিতায় সংগ্রামী চেতনায় – কবি ডা.মিজানুর রহমান মাওলা

admin
প্রকাশিত আগস্ট ৩১, ২০২০
বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধাঞ্জলি;কবি ও কবিতায় সংগ্রামী চেতনায় – কবি ডা.মিজানুর রহমান মাওলা

Sharing is caring!

বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধাঞ্জলি;কবি ও কবিতায় সংগ্রামী চেতনায়
– কবি ডা.মিজানুর রহমান মাওলা।

 

কবিতা-১”শোকাহত বাঙ্গালী”
রচনায়- কবি ডা.মিজানুর রহমান মাওলা।

 

স্বাধীনচেতানায় বিজয়ের বেশে,
উদয়মান সুর্যের আকস্মিক অস্তে
জাতি রক্তের দায় চিরঋণী অবশেষে।

 

ক্ষতবীক্ষত বাংঙ্গালী আজ
বইছে শোকের ছায়া,
আগষ্ট তুমিতো শোকের মাস
বিরহ বেদনায় লেগেছে বঙ্গবন্ধুর মায়া।
ওরা মুখোশধারি যুদ্ধাপরাধী ওরা বেইমান
ওরা পাষণ্ড সিমার ক্ষমতালোভি সন্ত্রাস,
ওরা চক্রান্তকারী নর পিচাস ওরা খুনি
ওরা শেখ মুজিবকে মেরে করেছে সর্বনাশ।

 

যার ডাকে আমরা পেয়েছি স্বাধীন একটি সোনার বাংলাদেশ,
তিনি ছিলো বাঙ্গালী জাতির পিতা ও শ্রেষ্ঠ বাঙালি সংগ্রাম প্রিয় দেশ।
যার চেতনায় জাগ্রত হলো বাঙ্গালী আমরা বুলন্ঠিত তার প্রেরণায়,
তিনি চেয়েছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকার প্রজাতন্ত্র চেতনায়।

 

ওরা সকল আশা ভরসা নস্যাৎ করে দিল হানাদারদের দোষর হয়ে,
ওরা ১৫ই আগষ্ট ব্রাশফায়ারে নৃশংস হত্যা করে শেখ মুজিবুর ও তার স্ব পরিবারকে নির্দ্বয়ে।
জাতি আজ শোকাহত মুজিবুর স্মৃতির কৃপায় গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি,
শেখ মুজিবুর রহমান স্বরণে করি দোয়া মোনাজাত ও কালো পতাকায় শোকের র‍্যালি।

 

আজ আমরা মর্মাহত ক্লান্তিকর ও সমবেদনায় বলি ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন,
তিনি বাংলার প্রতিটি ঘাটিতে ও মাটিতে কৃতিত্বে রৌশান।
ওরাতো বুঝেনি মুজিবুরের আত্মহননে কোনো লাভ হয়নি,
তিনি আজ অমর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি তার লক্ষ্যও দমেনি।

 

সত্যিই তোমার আদর্শ দেশজাতির মাইল ফলক ও মানবতার আর্শীবাদ,
তুমি ধন্য ত্যাজি সাফল্যের মনোভাব তোমার হয়ে করছি দোয়া জান্নাত হোক জিন্দাবাদ।

 

কবিতা-২”বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ”
রচনায়- কবি ডা.মিজানুর রহমান মাওলা।

 

খোদার মহিমায় জেগেছিলা তুমি,
বাংলার বীর শ্রেষ্ঠ সন্তান।
তুমি সাহসী নেতা দেশ প্রতিষ্ঠাতা,
প্রতিটি আত্মার স্বাধীন গড়ীয়ান।

 

তুমি ব্রজকন্ঠে আঙ্গুল তুলে গর্জিয়াস
চেতনায় করেছ যে আওয়াজ,
“এবারের সংগ্রাম- মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম- স্বাধীনতার সংগ্রাম”।
চাইনা দলীল চাইনা প্রমাণ,
আত্নার আত্মীয় তুমি করেছ সুনাম।

 

তুমিই স্বাধীনতার ঘোষক,
বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক।
তুমি জর্ন্মদাতা বাংলার পিতা- বঙ্গবন্ধু,
বাংলার মাটিতে তুমি নিখাঁদ উৎপত্তিরসিন্ধু।

 

তোমার ঘোষণায় লাখো বাঙ্গালী,
নির্ভয়ে করেছিল আত্নদান।
তুমিইতো বলেছিলা তোমাদের
“যার কাছে যা কিছু আছে
তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ো“,
শত্রুর মোকাবেলা করো।

 

বঙ্গবন্ধু তিনি শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী,
জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান।
তোমার হুন্কার গর্জন ঐক্যবদ্ধতায়,
লাগেনা আর কোন প্রমাণ।

 

তোমরা আমার ভাই তোমরা আমার বন্ধু,
“দেশকে শত্রু মুক্ত করবো- ইনশাআল্লাহ”
আর চাইনা কোন যুক্তি,
কোটি বাঙ্গালী পরাধীনতা থেকে
সেদিনই পেয়েছে মুক্তি।

 

আজ তোমার কৃপায় তুমি নিরবে ঘুমাও,
তোমার জন্য করব দোয়া যাতে তুমি শান্তি পাও।
ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেল,
বিদ্রোহী তোমার সেই ভাষণে
ইতিহাস গড়ল।

 

অবাক পৃথিবী- অবাক বিশ্ব আর যত মহাদেশ,
রক্ত দিয়ে স্বাধীন হলো বাংলাদেশ।
তোমার প্রেরণায়- তোমার ঘোষণায়
স্বাধীন হয়েছে দেশ,
আমরা পেয়েছি সবুজের বুকে লাল সূর্য
একটি স্বাধীন সোনার বাংলাদেশ।

 

তোমার ৭১এর ৭ই মার্চের বিদ্রোহী সেই ভাষণ,
স্বাধীনতার সূচনা বিশ্ব জয়ের সন্ভাষণ।
তোমাকে ভুলিনি ভুলবনা রাখিব চিরসম্মান,
লিলাময় দুনিয়া থাকিব যতক্ষণ গাইব তোমারই গান।

 

প্রাণপণে তুমি পাবে আমৃত্যু সম্মান,
তোমার সাথে একাকার অনেকেই দিয়েছেন প্রাণ।
তুমি বাঙ্গালীর রক্তে মিশে রবে স্বরণে বরণে
অমর কৃর্তিত্তে তুমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।।

 

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বা ক্ষমার প্রসঙ্গে:-
তথ্য সংগ্রহ;কবি ডা.মিজান মাওলা।

 

বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন –এমন একটি কথা প্রায়শই কাউকে কাউকে বলতে শুনি!!
কিন্তু কেউই এর স্বপক্ষে বা বিপক্ষে জোড়ালো যুক্তি তথ্য প্রমাণ সহ জাতির সামনে তুলে ধরেন না।

 

বঙ্গবন্ধু যে নির্দিষ্ট কিছু অপরাধের ভিত্তিতে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের ঘোষণা দিয়েছিলেন তাও আমজনতার নিকট পরিকল্পিতভাবে প্রচার করা হয়না।
যুদ্ধাপরাধী /মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু অনেকবার ঘোষণা দিয়েছেন যা তৎকালীন পত্র -পত্রিকা ঘাটলেই বের হয়ে আসবে।

 

১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার হইতে মুক্ত হয়ে ঢাকায় ফিরে রেসকোর্স ময়দানে বলেন, “বিশ্বকে এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের তদন্ত অবশ্যই করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক দল এই বর্বরতার তদন্ত করুক –এই আমার কামনা।
(তথ্য সূত্র –১১ /০১ /১৯৭২, দৈনিক বাংলা)

 

১২ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর বঙ্গবন্ধু বলেন,

 

“লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের কাহিনী আমি শুনেছি, তবু বাংলার মানুষ এত নীচে নামবে না। বরং যা মানবিক তাই করবে। তবে অপরাধীদের আইনানুযায়ী অবশ্যই বিচার হবে “।
(তথ্য সূত্র –১৩ /০১ /৭২, দৈনিক বাংলা)

 

১৪ই জানুয়ারি আওয়ামী লীগ অফিসে এক বক্তব্যে বলেন, “দালালদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে “।
(তথ্য সূত্র –১৫ /০১ /৭২, দৈনিক পূর্বদেশ)

 

৬ই ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রায় ১০ লক্ষ লোকের বৃহত্তম এক জনসভায় বলেন, “যারা গনহত্যা চালিয়েছে তারা সমগ্র মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। এদের ক্ষমা করলে ইতিহাস আমাকে ক্ষমা করবেনা “।
(তথ্য সূত্র –০৭ /০২ /৭২, দৈনিক বাংলা)

 

২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু বলেন, “বাংলার মাটিতেই খুনীদের বিচার হবে “।
(তথ্য সূত্র –২৩ /০২ /৭২, দৈনিক বাংলা)

 

৩০শে মার্চ চট্টগ্রামে এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেন, “যারা গনহত্যা চালিয়েছে তারা নমরুদ “।বঙ্গবন্ধু সমবেত জনতার কাছে জানতে চান, “দালালদের ক্ষমা করা যায়??? “
সমবেত জনতা হাত তুলে বলে “না “।
(তথ্য সূত্র –৩১ /০১ /৭২, দৈনিক পূর্বদেশ)

 

৩১শে মার্চ খুলনার এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু বলেন, “বর্বর হানাদার বাহিনীর সাথে স্থানীয় সহযোগী রাজাকার, আল -বদর, জামাত প্রভৃতি যোগ দেয়। তারা জনগনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যদি কেউ দালালদের জন্য সুপারিশ করতে আসে তবে তাকেই দালাল সাব্যস্ত করা হবে। দালালদের কখনোই ক্ষমা করে দেয়া হবেনা “।
(তথ্য সূত্র –০১ /৪ /৭২, দৈ)