২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঝালকাঠিতে চাকুরী ও বিয়ের প্রলোভনে বরিশালে বাসা রেখে ৩বৎসর ধর্ষণ, অবশেষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত আগস্ট ২৬, ২০২০
ঝালকাঠিতে চাকুরী ও বিয়ের প্রলোভনে বরিশালে বাসা রেখে ৩বৎসর ধর্ষণ, অবশেষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

Sharing is caring!

ঝালকাঠিতে চাকুরী ও বিয়ের প্রলোভনে বরিশালে বাসা রেখে ৩বৎসর ধর্ষণ, অবশেষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

 

 

সৈয়দ রুবেল, ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি:

 

 

ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির এবং তার সকল অপকর্মের বিশ্বস্ত সহযোগী তথা অঘোষিত পিএস মিঠু সিকদারের বিরুদ্ধে  নারী কেলেংকারির অভিযোগ করা হয়েছে।

 

 

কাঠালিয়ার আমুয়া গ্রামের মিতু আক্তার দোলা  নাম  এক তরুনী (২১) কে প্রথমে চাকুরী ও পরে বিয়ের প্রলোভনে বরিশালের একটি বাসায় রেখে ৩বছর ধরে ধর্ষন করে।

 

গত ২৫/০৮/২০২০ইং তারিখ  মঙ্গলবার  ধর্ষনের  অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মিতু আক্তার দোলা নিজে বাদী হয়ে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

 

আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ মামলাটি আমলে নিয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

 

 

মিতু আক্তার দোলা অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে তৎকালীন কাঁঠালিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এমাদুল হক মনিরের সাথে চাকুরী সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কলেজ পড়ুয়া এ তরুনীর সাথে তার প্রথম পরিচয় হয়।

 

এসময় মনিরের গনিষ্ট বন্ধু আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের অধিবাসী মিঠু সিকদার বরিশাল শহরের কাকলীর মোড়ের শাহীন প্লাজায় তার (বর্তমান প্রিয়জন নাম) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেয়। সেখানে (তৎকালীন ভাইসচেয়ারম্যান) বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরের বন্ধু মিঠু সিকাদারের মাধ্যমে তাদের পরিচয় ও মিঠুর মধ্যস্ততায় প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রলোভনে মিঠুর মাধ্যমে বরিশাল শহরের আগরপুর রোডে বাসা ভাড়া করে রেখে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় বসবাস শুরু করে।

কখনও বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে ঢাকা যাতায়াতকালে কেবিনে রাত্রী যাপনকালে লাগাতার ধর্ষণ করেন।

 

 

নির্যাতিতা তরুণী জানায়, বিগত ৩ বছর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মনির তাকে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে আসলেও বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিলে নানান অজুহাতে কালক্ষেপন করাসহ বন্ধু মিঠুকে নিয়ে নানা নাটকীয়তার আশ্রয় নিতো। ইতিপূর্বে একবার বৈধভাবে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বন্দু মিঠুর সহযোগীতায় একটি সাদা কাগজে তরুনীর স্বাক্ষর নেয় ও আল্লাহর নামে ধর্মীয় ভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবিও করে।

 

 

কিন্তু পরবর্তীতে অসহায় এই তরুণী সামাজিক স্বীকৃতি চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মনির নানা টালবাহানা ও নিজের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পুরো ঘটনা ধাঁমাচাঁপা দেয়ার ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছিল।

 

 

ইতিমধ্যে কাঠালিয়া উপজেলাবাসী বা আওয়ামীলীগের সকল নেতাকর্মীর কাছে গোপন রেখে তার সকল অপকর্মের বিশ্বস্ত সহযোগী বন্ধু মিঠু সিকদারের সহযোগীতায় উপজেলা আ’লীগ সাধারন সম্পাদক ও চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির অপর এক মেয়েকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করে। বিষয়টি এককান-দুকান করে ধর্মীয় ভাবে বিয়ে করা বরিশালে বসবাসকারী তরুনীর কানে পৌছলে সে দিশেহারা হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে জীবন-যৌবন সর্বস্ব হারানো তরুণী আইনের আশ্রয় নিতে বরিশাল কোতয়ালী থানা পুলিশের দ্বারস্থ হলেও পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ না করে আদালতে যেতে বলে।

 

 

সর্বশেষ তরুনীকে থামাতে গত ১৯ আগস্ট বরিশালের সিনিয়র আইনজীবী ওবায়দুল্লাহ সাজু উভয় পক্ষ নিয়ে সমঝোতার জন্য বৈঠকে বসলেও সমাধানে আসতে না পারায় মঙ্গলবার নারী ও শিশু আদালতের দ্বারস্থ হয়।

 

 

তবে নারী কেলেংকারির এই বিষয় জানতে ঝালকাঠি-কাঠালিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকরা মঙ্গলবার দিনভর কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনিরের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বহুবার কল দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

 

তবে তার গনিষ্ট দুএক জনের মাধ্যমে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ বা মামলার ঘটনাটি সম্পূর্ন মিথ্যা-বানোয়াট। তার প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ রাজনৈতিক ভাবে তাকে হয়রানির ও তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশে তার বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্র করছে। উক্ত তরুণীর দায়েরকৃত এই মামলাটি সেই ষড়যন্ত্রের একটি অংশ বিশেষ।