১লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

অনলাইনে মদের কারবার ডেলিভারি কুরিয়ারে

admin
প্রকাশিত জুলাই ১৩, ২০১৯
অনলাইনে মদের কারবার ডেলিভারি কুরিয়ারে

Sharing is caring!

 

আব্দুল করিম চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ঃ-

অনলাইনে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেইজসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলে বেচাকেনা চলছে বিয়ার, হুইস্কি, ভটকাসহ বিভিন্ন বিদেশী ব্রান্ডের মদ। অনলাইনে অর্ডারের পর ওইসব মদ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে সুনির্দিষ্ট ক্রেতার কাছে। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ এসব কারবার অনলাইনে চলে আসলেও তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
‘বাংলাদেশ সাইবার এন্ড লিগ্যাল সেন্টার’ আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সাইবার ক্রাইমে পড়া ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন অভিযোগগুলো নিয়ে কাজ করছে। ঢাকাস্থ সংস্থাটির লিগ্যাল কনসালটেন্ট মো. মাহফুজ আজাদীকে বলেন, বর্তমানে সাইবার ক্রাইম রোধে যে ধরণের প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে, সেখানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী চাইলেই এসব কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। পেইজগুলোতে যেসব মোবাইল নম্বর ব্যবহার হয়ে থাকে, সেগুলোর তাৎক্ষণিক অবস্থান ও আইডি বের করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অসম্ভব কিছু নয়।
অনলাইনে মাদক বেচাকেনা আমাদের জন্য বড় একটা অ্যালার্মিং জানিয়ে মাহফুজ বলেন, দোকানে কিংবা স্পটে না গিয়ে ঘরে বসেই অর্ডার দিয়ে মাদক পণ্যগুলো হাতের নাগালে পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে সহজ ওই মাধ্যমটিতে যুব সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ স্বাভাবিকভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে। এটার ক্ষতিকর প্রভাব সবার ওপর পড়ছে। সহজেই হাতের নাগালে পাওয়ায় ওইসব পণ্য জোগাড়ে টাকার জন্য চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধেও জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এসব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এর পাশাপাশি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরদারির আওতায় নিয়ে আসার কথা বলেন মাহফুজ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ মাদকদ্রব্য উৎপাদন, সরবরাহ, ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিভিন্ন বার, হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সীমিত পরিমাণে বিয়ার, হুইস্কিসহ বিভিন ব্রান্ডের মদ বিক্রয় ও পরিবহনের অনুমোদন দেয় সংস্থাটি। কিন্তু অনলাইনে ওইসব মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো অনুমোদন নেই। এরপরও অনলাইনে প্রকাশ্যে চলছে এসব মাদক বেচাকেনা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনলাইনে বিশ্বব্যাপী সক্রিয় মাদক বেচাকেনার যে সাইট রয়েছে সেটি শক্তিশালী সিকিউরিটির মাধ্যমে তাদের ক্লায়েন্টদের সাথে লেনদেন করছে। দেশে সক্রিয় সাইটগুলো অবাধে করছে ব্যবসা।
অনতিবিলম্বে এসব বন্ধ করা না গেলে পরবর্তীতে তাদের কার্যক্রম ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মেট্রো উপ অঞ্চলে সহকারী পরিচালক এমদাদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অনলাইনে এই ধরণের কার্যক্রমের ওপর কোনো অনুমোদন দেয় না। তিনি বলেন, অনলাইনে মদ, বিয়ার বেচাকেনার বিষয়টি একই সাথে দুই ধরণের অপরাধের মধ্যে পড়ে থাকে। মাদকদ্রব্য আইনে অপরাধ কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এটা সাইবার ক্রাইমের মধ্যেও পড়ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে অনলাইনে সক্রিয় এসব কারবারীদের কাউকে শনাক্ত করতে না পারাসহ চক্রটির কাউকে এখনো পর্যন্ত আইনের আওতায় আনার খবর পাওয়া যায়নি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে।