Sharing is caring!
মাদারীপুর: পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দেশের অন্যতম নৌরুট মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের চাপ।
ঈদের আগে পরিবহনের দুর্ভোগ কমাতে অনেকেই পরিবার-পরিজনদের আগেভাগেই পাঠিয়ে দিচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। ফলে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল থেকেই একটু একটু করে ভিড় বাড়ছে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে।
বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা যায়, ঈদকে সামনে রেখে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নৌরুটে ১৮টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও ২ শতাধিক স্পিডবোট রয়েছে। ক্রটিপূর্ণ ১০টি লঞ্চ ইতোমধ্যেই মেরামত করে ঘাটে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও যাত্রীদের চাপের ওপর নির্ভর করে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রতিটি নৌযানেই লাইফ জ্যাকেটসহ জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র লঞ্চ ঘাট সূত্র জানায়, ঈদ আসতে এখনো আরও ৬/৭ দিন বাকি। তবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার ঘরমুখো যাত্রীদের একটি অংশ আগেই ঘরে ফিরছে। বিশেষ করে পরিবারের নারী-শিশুদের আগেভাগেই বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সূত্রটি আরও জানায়, সকাল থেকে রাজধানীগামী যাত্রীদের সংখ্যা কম থাকায় কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে লঞ্চগুলো তুলনামূলক কম যাত্রী নিয়েই শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। শিমুলিয়া থেকে কিছুক্ষণ পরপরই যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো কাঁঠালবাড়ী ঘাটে এসে ভিড়ছে। ফলে সকাল থেকেই ব্যস্ত হয়ে উঠছে কাঁঠালবাড়ী ঘাট।
ঘরমুখো যাত্রীরা জানান, ঈদের দুই/তিনদিন আগে পরিবহনে প্রচণ্ড ভিড় থাকে। পথে পথে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ কারণে স্বস্তিতে আসার জন্য তারা আগেই বাড়ি ফিরছেন।
এদিকে, ঈদকে সামনে রেখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে নেওয়া হয়েছে বিশেষ প্রস্তুতি। যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার, ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম, মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক ঘাট এলাকা দায়িত্বে থাকবে। তৈরি করা হবে অস্থায়ী যাত্রী ছাউনি, স্যানিটেশন ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পরে স্পিডবোট চলাচল বন্ধে ঘাট এলাকায় নজরদারিতে থাকবে র্যাবের টিম। অস্থায়ী র্যাব ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়েছে ঘাটের পদ্মার পাড়ে।
র্যাব-৮ মাদারীপুরের কোম্পানি কমান্ডার খালেদ মাহমুদ জানান, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘাট এলাকায় র্যাবের টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। মলমপার্টি, ছিনতাইকারী, অজ্ঞানপার্টিসহ কোনোভাবে যেন যাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিক মনিটরিং করবে র্যাব। এছাড়া সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণেও র্যাবের টিম কাজ করবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া জানান, ঈদকে সামনে রেখে পর্যাপ্ত ফেরি রয়েছে। ঈদের তিন/চারদিন আগে থেকেই পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ রেখে যাত্রী পারাপার করা হবে।
বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ ঘাটের টার্মিনাল ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন জানান, গতকাল বুধবারের তুলনায় আজ লঞ্চে যাত্রীদের সংখ্যা বেশি। তবে শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ আরও বেড়ে যাবে। লঞ্চে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কোনো সুযোগ নেই।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন জানান, ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তায় ঘাট এলাকায় চারস্তুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যানবাহনে যেন যাত্রীরা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকবে। পরিবহনগুলো যাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে না পারে সে লক্ষে ভাড়ার তালিকা পরিবহনের কাউন্টারে টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।