৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

দশের অধিক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ’ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আটক

admin
প্রকাশিত জুলাই ৪, ২০১৯

Sharing is caring!

মোঃ ইমরান,নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকায় দশের অধিক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও যৌন নিপিড়নের অভিযোগে এক মাদ্রাসা প্রিন্সিপ্যালকে আটক করেছে র‌্যাব-১১। প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসা ২য় থেকে ৫ম শ্রেনীর কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই তার লালসার শিকার হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকমহল।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় ফতুল্লার মাহমুদপুর পাকার মাথা এলাকায় ‘বায়তুল হুদা মাদ্রাসা’ নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা মো. আল আমিন(৩৫)কে গ্রেফতার করে র‌্যাব।আল আমিন ‘বায়তুল হুদা মাদ্রাসা’র প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ছিলেন। আটকের সময় তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটার থেকে অসংখ্য পর্নো ভিডিও জব্দ করা হয়েছে।র‌্যাব-১১র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন গনমাধ্যমকে জানায়, গত ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের কান্দাপাড়া এলাকার অক্সফোর্ড স্কুলের ২০শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেফতাকৃত শিক্ষক আরিফের নিউজ ও ভিডি ফুটেজ র‌্যাব-১১র ফেসবুক পেজে আপ করার পর তা ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও চিত্র ও নিউজ ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার বায়তুল হুদা মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী ও তার মা দেখে।ওইসময় ৩য় শ্রেণীর ওই ছাত্রী তার মাকে বলে, আমার মাদ্রাসার হুজুরকে যদি টিভিতে দেখাতো তাহলে আমার ভালো লাগতো। তখন মা তাকে প্রশ্ন করলে ওই ছাত্রী জানায়, আমার মাদ্রাসার হুজুরও আমার সাথে বাজে কাজ করেছে। এরপর ওই ছাত্রীর মা ফেসবুকে ঘটনাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে জানায়।তারপরই শুরু হয় এ বিষয়ে র‌্যাবে তদন্ত। তদন্তে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক সব তথ্য। শিক্ষক মাওলানা আল-আমিন গত দেড় বছর যাবৎ বিভিন্ন সময় ২য় শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত দশের অধিক ছাত্রীদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আবার কাউকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করেছে।তার মোবাইল ও অফিসের কম্পিউটারে অসংখ্য পর্ণো ভিডিও পাওয়া গেছে। মূলত সে এগুলো দেখিয়েই শিশুদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করতো বলে শিক্ষক আল-আমিন আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। আমরা তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনে কাজ করছি।এদিকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। এসময় তারা ওই শিক্ষকের ফাঁসি চেয়ে শ্লোগানও দিতে থাকে।পরে বেলা সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয় র‌্যাব-১১র অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন, পরিদর্শক (আইসিপি) আজিমুল হক।পরে ঘটনাস্থলে এ বিষয়ে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১র অধিনায়ক কাজী শামসের উদ্দিন উপস্থিত সাংবাদিকদের জানায়, আমরা দশের অধিক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন নিপিড়নের অভিযোগে ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার বায়তুল হুদা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক আল-আমিনকে আটক করেছি। তার মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে অসংখ্য পর্ণো ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার অপরাধ স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হবে।

উল্লেখ্য,এর আগে গত ২৮ জুন ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। পরে জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষক আপত্তিকর ছবি তুলে অসংখ্য ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করার কথা স্বীকার করেছেন।