রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অর্জন অনেক। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে কোন স্বাধীন ভূখণ্ড ছিল না। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীন বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগ অতুলনীয় রাজনৈতিক গুণাবলীসম্পন্ন বিশ্বমানের একজন নেতা তৈরি করেছে। বিশ্ব রাজনীতির হাজার বছরের ইতিহাসে একটি রাজনৈতিক দলের একজন নেতার একক নেতৃত্বে মাত্র ২২ বছরের কম সময়ের মধ্যে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার কোনো দ্বিতীয় নজির নেই। শেখ মুজিব তার ৪ দশকের রাজনৈতিক জীবনে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন।
আওয়ামী লীগের ৭০ বছরকে মোট দু’ভাগে ভাগ করা যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পুরোভাবে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। মাঝখানে ৬ বছর বাদ দিয়ে ৩৮ বছর ধরে দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
কঠিন চড়াই-উতরাইয়ের ভেতর দিয়ে ৭০ বছরের আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে আনতে নিঃসন্দেহে পিতা-কন্যাই সর্বোচ্চ অবদান রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যথার্থই বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন। আর দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।’
যদ্দুর জানা যায়, গণতান্ত্রিক বিশ্বে ভোটের মাধ্যমে এভাবে অন্য কোন নেতা শেখ হাসিনার মতো ৪ বার নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়নি।
আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ গঠনের পর থেকেই পশ্চিমা শোষক, শাসক ও পাকিস্তান সামরিক চক্র এ দলের বিরোধিতা করে আসছে।
পাকিস্তানের ২২ বছরে প্রায় ১২ বছর শেখ মুজিবকে জেলে অন্তরীণ রাখা হয়। শুধু পূর্ব বাংলার মানুষের পক্ষে ন্যায্য কথা বলার জন্য শেখ মুজিবকে দু’বার ফাঁসির মঞ্চে যেতে হয়েছে। শেখ মুজিব তার কঠিন রাজনৈতিক জীবনে কোনদিন আত্মগোপনে যাননি। তিনি যে কতবার গ্রেফতার হয়েছেন, এর সঠিক হিসাব এ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি।
জেল থেকে বের হয়ে নৌকায়, সাইকেলে ও হেঁটে সারা বাংলা ঘুরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছেন।
আওয়ামীলীগের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার সবচেয়ে বড় কারণ হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তা। এই উপমহাদেশে যত নেতা আবির্ভূত হয়েছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং বাঙালির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম, কোন কোন ক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্যারিশমাটিক। তিনি হ্যামিলনের বংশীবাদকের মত পুরো বাঙালি জাতিকে জাগাতে পেরেছেন।
আওয়ামীলীগের তুমুল জনপ্রিয়তার অন্য কারণ গুলোর মধ্যে তার সাংঘঠনিক বিন্যাস,সময়ের সাথে আধুনিকায়ন, ও সকল পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়া অন্যতম।
সকল ধর্ম, শ্রেণী -পেশার মানুষকে এক সঙ্গে ধারণ করার মত একটি দল হল আওয়ামীলীগ। একারণেই ৭০ বছর পেরিয়েও সমান জনপ্রিয় আওয়ামীলীগ। ৭১এ পা রেখেও আওয়ামীলীগ এখনো তারুণ্যদীপ্ত।