২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দ্রুত শান্তি ফিরুক দিল্লিতে, প্রার্থনা কলকাতায়

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০
দ্রুত শান্তি ফিরুক দিল্লিতে, প্রার্থনা কলকাতায়

Sharing is caring!

কলকাতা প্রতিনিধি : চারদিন ধরে অশান্ত হয়ে রয়েছে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি। সিএএ বিরোধী এবং সমর্থকদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষে এরই মধ্যেই ২২ জনের প্রাণ গিয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে অন্তত ২০০ জনের। তাদের মধ্যে প্রায় ৯০ জনের শরীরে গুলি রয়েছে। রাজধানীতে কারফিউ জারি করে, একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশকে দেয়া হয়েছে শ্যুট অ্যাট সাইটের অর্ডার। পাথরবৃষ্টি থেকে শুরু করে দোকানপাট ভাঙচুর সবই চলছে দেদারভাবে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ‘কলকাতার শাহিনবাগ’ পার্ক সার্কাসের বিক্ষোভকারীরা। তাদের একটাই প্রার্থনা, দ্রুত শান্তি ফিরে আসুক দিল্লিতে। আবার সব স্বাভাবিক হোক। দিল্লির পরিস্থিতি মাথায় রেখে পার্ক সার্কাস এলাকার নিরাপত্তা বাডি়য়ে দিয়েছে কলকাতার পুলিশ।

 

দিল্লির শাহিনবগের মতোই কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে চলছে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন। অবস্থান-বিক্ষোভে তারা রয়েছেন প্রায় দু’মাস ধরে। দেশের অন্যত্রও সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। জামিয়া মিলিয়া, জেএনইউ, শাহিনবাগে আক্রমণ তো ছিলই, সবশেষে উত্তরপূর্ব দিল্লির পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে। এই প্রেক্ষিতে বেশ সতর্কই রয়েছে কলকাতার শাহিনবাগ। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও রকম হিংসায় তারা বিশ্বাসী নয়। তাদের একমাত্র বার্তা, দিল্লিতে এত কিছু করেও প্রতিবাদ তুলতে পারেনি কেউ। কলকাতাতেও পারবে না। এই আন্দোলন তখনই বন্ধ হবে, যখন দেশের সরকার সিএএ বাতিল করবে।

 

এ কথা বলেও দিল্লির জন্য শান্তি কামনা করেছে কলকাতা। তাদের বক্তব্য, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তি ফিরে আসুক দিল্লিতে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য প্রার্থনা করছেন তারা।

 

সন্ত্রাস-কবলিত দিল্লির চার জায়গায় ‘শ্যুট অ্যাট সাইট’ অর্ডার দেয়া হয়েছে। মৌজপুর, জাফরাবাদ, কারওয়ালনগর, চাঁদবাগে এরই মধ্যে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

 

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই উত্তরপূর্ব দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় চলছে পলিশের টহলদারি। বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত সঙ্ঘর্ষের ছবিও সামনে এসেছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এবং বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আবারও উপদ্রুত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।

 

দিল্লি হাইকোর্ট মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে এক বিচারপতির বাড়িতেই এজলাস বসিয়েছিল। অভিযোগ ছিল, আহত ও গুলিবিদ্ধদের হাসপাতালেও নিয়ে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে পুলিশকে অভিযোগ করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ পুলিশ না দেখার ভান করে রয়েছে। এরপরেই দিল্লি হাইকোর্ট মঙ্গলবার মধ্যরাতের শুনানির পর দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, আহত ব‍্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। কী ব্যবস্থা করা হচ্ছে তার একটা কমপ্লায়েন্স রিপোর্টও জমা দিতে হবে আদালতে।

 

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ফের দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, পুলিশকে তাদের কাজ করতেই হবে। আমরা কোনওমতেই দিল্লিতে আরেকটা ১৯৮৪ এর মতো ঘটনা (শিখ-বিরোধী দাঙ্গা) হতে দিতে পারি না। একই সঙ্গে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বুধবার মন্তব্য করেছে, দিল্লির পুলিশ (যা আসলে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ) অত্যন্ত অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। দেশের রাজধানীতেই এত ঢিলেঢালা পুলিশি ব্যবস্থা মেনে নেয়া যায় না। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ—দিল্লির পুলিশ ইচ্ছে করলেই এতগুলি প্রাণহানি ঠেকাতে পারত।