Sharing is caring!
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ৬ষ্ঠ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যরা ● ফাইল ছবি
অভিযোগ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ এবং যোগ্যতা সম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। যাতে তারা চাকরির পেছনে না গিয়ে নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজকে দক্ষ এবং যোগ্যতা সম্পন্ন করে তোলার লক্ষ্যে ট্রাস্টের কাছ থেকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হবে, কারণ যাতে করে তারা চাকরির পেছনে না গিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে (পিএমও) প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ৬ষ্ঠ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে একথা বলেন।
ট্রাষ্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা বলেন, চাকরির পেছনে ছোটার যে আমাদের মানসিকতা সেটার পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি যুব সমাজকে চাকরি করার চাইতে চাকরি দেয়ায় মনযোগী হওয়ারও আহবান জানান।
তিনি বলেন, আমরা মেধাবী কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীদের স্বাবলম্বী করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিবারকে আরও উন্নত করতে শিক্ষাগত সহায়তা প্রদানের জন্য এই ট্রাস্ট গঠন করেছি।
উচ্চশিক্ষার জন্য মেডিকেল, প্রকৌশল এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আর্থিক সমস্যায় পড়া দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৈঠকের আগে শিক্ষাগত সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করার সময় প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।
তিনি গণহারে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা দেয়ার বিষয়ে দ্বিমত ব্যক্ত করে বলেন, তারা যেন সরকারি ভর্তুতির ওপর নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে।
উপবৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য আপডেট করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দায়িত্ব প্রদানের নির্দেশনাও প্রদান করেন।
এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য ‘সীডমানি’ হিসেবে আরও পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবে তিনি সম্মতি দেন। এর আগেও সরকার এ লক্ষ্যে পাঁচ কোটি টাকা প্রদান করেছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন সক্ষমতা অনুযায়ী ভর্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারি না, শিক্ষার্থীরা কিভাবে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা করছে।
অর্থের অভাবে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠন করা হয়।
২০১১-১২ অর্থ বছরে ট্রাস্টের ‘সীডমানি’ হিসেবে এক হাজার কোটি টাকা প্রদান করা হয়।
২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ট্রাস্ট থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার জন্য এরই মধ্যে ৫৫০ দশমিক ৯০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
ট্রাস্ট এ বছর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২, ০৯, ৬০০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১১১ দশমিক ৪০ কোটির অধিক অর্থ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ট্রাস্টের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাকির হোসেন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. আখতারুজ্জামান, ইউজিসি চেয়ারম্যান (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতিরিক্ত সচিব নাসরিন আফরোজ ট্রাষ্টের সার্বিক কর্মকাণ্ড এবং ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ে বৈঠকে একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন।