Sharing is caring!
মনির সরকার. বিশেষ প্রতিনিধি
বহু অপকর্মের হোতা কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী
রহমত আলীকে গ্রেফতার করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। ৭ ফেব্রুয়ারী রাত আনুমানিক ৮ টায় চুনারুঘাট বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করেন চুনারুঘাট থানার এএসআই আঃ বাতেন ও এএসআই ইমন মিয়া উস্তার। মাদক মামলা সহ
বহু অপকর্মে সিদ্ধহস্ত রহমত আলীর দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন চুনারুঘাটবাসী। কয়েকবছর আগেও যে গাছ চুরিতে সক্রিয় ছিলো। অদৃশ্য কারনে সে হয়ে যায় কাঠ ব্যবসায়ী। দিনে দিনে হয়ে উঠে বিত্তভৈববের মালিক। কিন্তু এতেও থেমে থাকেনি তার অর্থনেশা। জড়িয়ে পড়ে ডাকাতিতে। বিধিবাম। জনতার হাতে ধরা পড়ে যেতে হয় তাকে কারাগারে।
তাতে কী? জেল থেকে বেরিয়ে এসে নতুন উদ্যমে নেমে পড়ে মাদক ব্যবসায়। বেশ কিছুদিন মাদক ব্যবসার এক পর্যায়ে পুলিশের হাতে ধরাও পড়ে।
তার বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় ৩০/১১এর ১৯(ক) দ্বারা মামলা রুজু হয় । যার তারিখ-১৮/৪/২০১৯ইং।
পরে নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে জাহির করতে ফন্দিফিকির করে ভাগিয়ে নেয় চুনারুঘাট পৌর কৃষকলীগের পদ। শুরু হয় তার নতুন পথচলা। ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে শুরু করে দালালি ও ধাপ্পাবাজি। সবদিক থেকে এগিয়ে থাকা রহমত আলী তবুও থামেনি। করে একাধিক বিয়েও। সে ভালো মানুষের আড়ালে মাদক বিক্রি করে থাকতো বলে এলাকাবাসির অভিযোগ।
বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলে নিজেকে প্রভাবশালী নেতা হিসাবে জাহির করতে মরিয়া হয়ে উঠে। বিভিন্ন শালিস বৈঠকে গায়ে পড়ে যেতে শুরু করে। অনেকটা গায়ে মানে না আপনি মোড়লের মতো।
জানা যায়, গত বছর সে উপজেলার ভোলারজুম গ্রামের মৃত মফিজ উল্লাহর পুত্র আব্দুল হাই মীরের তালাক দেওয়া স্ত্রীর কাবিন ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধের ২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার সালিশ করে রহমত আলী। কিন্তু একটি টাকাও আব্দুল হাই’র স্ত্রীকে সে দেয়নি। সমুদয় টাকা আত্মসাত করে।
এ নিয়ে অনেক দেনদরবারের পর আঃ হাই মীরকে ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেও বাকী টাকা আত্মসাৎ করে। এ ব্যাপারে আঃ হাই বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান রজব আলী, পৌর কমিশনার হরমুজ আলী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি লুৎফুর রহমান চৌধুরীসহ আরো কয়েকজন মুরুব্বীর সামনে এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করবে বলে সময় চাইলেও সে টাকা আর ফেরত দেয়নি।
গত বছর সে গড়ে তোলে সামাজিক সংগঠন হৃদয়ের বন্ধন একতা যুব সংঘ। নিজেকে ওই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি করে সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে। সে চাঁদা ফান্ডে না জমিয়ে নিজের পকেট ভারী করতে শুরু করে। যা সদস্যরা আঁচ করতে পেরে অনেকেই সঞ্চয় বন্ধ করে দিয়েছেন।
রহমত আলী শুধুই মানুষের সাথেই অপকর্ম করেনি। নিজ পিতার সাথে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগে থানা হাজতে যেতে হয় তাকে। পরে মুছলেকা দিয়ে বেরিয়ে আসা রহমত আলী গত ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে এগারোটায় প্রকাশ্যে গাঁজা বিক্রয়কালে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পলিথিনে মোড়ানো দুই কেজি গাঁজা ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানায় মামলা দায়ের হয়েছিল।
নিজেকে সমাজ সেবক রহমত আলী তালুকদার পরিচয় দেওয়া রহমত আলী উপজেলার আমুকান্দি গ্রামের খোরশেদ আলীর পুত্র।
এলাকাবাসি তার গ্রেফতারের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানা সূত্রে জানা যায়, পূর্বে তার বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। একটি ডাকাতি মামলায় হাতেনাতে গ্রেফতার হয়েছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সে চুনারুঘাট থানা হাজতে ছিল।