২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেট পাসপোর্ট অফিসে ভোগান্তি

অভিযোগ
প্রকাশিত জুন ২৪, ২০১৯
সিলেট পাসপোর্ট অফিসে ভোগান্তি

অভিযোগ ডেস্ক :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস। এই অফিসে আসা মানুষজনকে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনিয়ম যেখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। জরুরি পাসপোর্ট ১১ দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট ২১ দিনে দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা অনেক কিছু হয় না। সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটবাসীর সেবার মান বৃদ্ধির জন্য ভাড়া বাড়ী ছেড়ে পাসপোর্ট অফিসকে বিগত ২০১৫ সালের আগষ্টে নিজস্ব ভুমিতে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়। তৎকালিন সময় থেকে অফিসের দায়িত্বে থাকা পরিচালক বিভিন্ন ভাবে দুর্ণীতি সাথে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমান পরিচালক সাঈদুল রহমান বিরুদ্ধে সেবার বদলেই দূর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানিসহ গ্রাহক ও স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে অশুভ আচরণের অভিযোগ রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে পাসপোর্ট অফিসে ফের শুরু হয়েছে বিশৃখংলা। নতুন পরিচালক হিসেবে এই বছরই যোগদেন সাঈদুল রহমান। অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে দৈনিক ৩ থেকে সাড়ে ৩শ’ আবেদন জমা পড়ে। পাসপোর্ট করতে আসা গ্রাহকরা পরিচালকের নিজস্ব সিন্ডিকেট নির্ধারিত মার্কা (চেনেল) ছাড়া ফরম জমা করতে গেলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কাউন্টার থেকে উপ-সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও সুপারেন্টন জাকির হোসেন এবং পরিচালকের পিএস শুভন আবেদন ফিরিয়ে দেন। এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০টি আবেদন ‘মার্কা’ (পাবলিক) ছাড়া জমা হয় এবং বাকি সবই ‘চ্যানেল মার্কা’ দিয়ে জমা দেওয়া হয়ে থাকে। সুত্রে জানা গেছে, অফিসের নিযুক্ত কর্মচারী, আউটসোসিং নাইট গার্ড আনোয়ার-ইমরান ও এমএলএসএস বহিরাগত দালালদের মাধ্যমে আবেদন ফাইল প্রতি ১১শত টাকা নিয়ে নির্ধারিত মার্কার মাধ্যমে আবেদন ফরম জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। উপ-সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও সুপারেন্টডেন্ট জাকির হোসেন এবং পরিচালকের পিএ শুভন ফাইলগুলো গ্রহণ করে থাকেন। বিকেলে মার্কা দেয়া ফাইলগুলো পৃথক করে তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে টাকা গ্রহণ করা হয়। যাদের ফাইলে ‘মার্কা’ নেই সেগুলো আলাদা করে অফিস সহকারীর আলমিরার মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। পরিচালকের নির্দেশে মার্কা ছাড়া ফাইলগুলো পৃথক করে সপ্তাহ থেকে দশদিন পর্যন্ত বাক্সবন্দি করে রাখার পর পুলিশ অফিসে প্রেরণ করা হয়। প্রেরণকালে পুলিশ প্রতিবেদনের জন্য পাঠানো ফাইল থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন জরুরী কয়েকটি কাগজপত্র ছিড়ে ফেলে দেওয়া হয় গ্রাহকদের হয়রানীতে ফেলার জন্য। পুলিশ প্রতিবেদন যাওয়ার পর আবার সপ্তাহ-দশদিন বন্দি রেখে পরে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়ে থাকে। যার ফলে সরকারি ফি পরিশোধ করেও নির্ধারিত সময়ের ৩/৪ মাসপর পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট নিতে আসলে ডেলিভারী কাউন্টার থেকে জসিম উদ্দিন পাসপোর্ট আসেনি বলে হয়রানী করেন। আবার ৪/৫ শত টাকা নিয়ে পাসপোর্ট প্রদান করেন। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বার বার ধর্না দিতে হয় অফিসের কর্তাব্যক্তি ও কর্মচারীদের কাছে। সরকারি নিধারিত ফি থেকে দ্বিগুণ-তিনগুন টাকা গুনতে হয় আবেদনকারীদের। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, অনেক সময় মার্কা ছাড়া পাবলিক ফাইল গুলো উধাও হয়ে যায়। পরে বের করে দেয়ার নামে আলাদা টাকাও হাতিয়ে নেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। গ্রাহকদের সাথে অফিসের কম্পিউটার অপারেটারসহ অফিসের অন্যান কর্মচারীরা খারাপ ও অশুভ আচরণ করে থাকেন। পাসপোর্ট অফিসে আসা ভূক্তভোগি গ্রাহকরা জানান ফাইলে সবকিছু ঠিক থাকলেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তা ফেরত দেওয়া হয়। ৩/৪ দিন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের হয়রানীর পর ১৫শত টাকা দিয়ে মার্কার মাধ্যেমে জমা দেওয়া হয়। সককিছু ঠিক করে পরের দিন নিয়ে যাওয়ার পার অফিস সহকারী প্রাইভেট সার্ভিসের সনদপত্র সঙ্গে দেওয়া কথা বলে ফাইলটি ফেরত প্রদান করেন। পরবর্তিতে এই ফাইলটি অফিস সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা দিয়ে জমা প্রদান করেন। বিষয়টি নিয়ে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক সাঈদুল রহমান সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন অফিসের কোন ব্যাক্তি যদি অনিয়মের সাথে জড়িত থাকেন তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media
March 2024
T W T F S S M
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031