আব্দুর রহিম রানা, যশোরঃ চলতি আমন মৌসুমে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়ম ভেঙ্গে কৃষকদের থেকে অতিরিক্ত ধান নিচ্ছে। সরকারের খাদ্য মন্ত্রনালয় ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনার ঘোষনা দিলেও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এ উপজেলাতে প্রকৃত কৃষকেরা।
এদিকে যাদের নাম লটারিতে ওঠে এসেছে তারা গুদামে ধান দিতে গেলে বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। ধানে ১৪ ভাগের বেশি আদ্রতা থাকার সত্বেও এক মণে এক কেজি সাত শত গ্রাম ধান বেশি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রায়পুর ইউনিয়নের আজমেহেরপুর গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন গুদামে ধান বিক্রয় করেছেন। তিনি জানান, আমি ২৫ মণ ধান বিক্রি করছি। প্রতি মণে এক কেজি পাঁচশত গ্রাম ধান বেশি দিতে হয়েছে।
বন্দবিলা ইউনিয়নের ধর্মগাতীর শামীম জানান, আমার ধানের আদ্রতা ঠিক থাকলেও প্রতি মণে ২ কেজি বেশি দিতে হয়েছে।
কথা হয় একই ইউনিয়নের ঘোপদূর্গাপুরের কৃষক সোবহান আলীর সাথে। তিনি অনেকটা ক্ষোভের সাথে জানান, আমার ধান কড়কড়ে করে শুকানো। সেখানে প্রতি মণে এক কেজি বেশি নিলে একটা কথা থাকে। তবে তার অধিক ধান নেওয়াটা অনিয়ম।
খাজুরা বাজারের আড়ৎ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকের থেকে ধান নিয়ে যে বস্তায় ভরে গুদামজাত করা হচ্ছে তার ওজন সর্বোচ্চ ৬০০ গ্রাম হবে।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ইন্দ্রা গ্রামের বিছালী ব্যবসায়ী আমিনুর রহমানের এবার আমনে ধান চাষ করেনি। বর্গা নিয়ে তিনি এখন বোরো চাষের জন্য জমি প্রস্তুতের কাজ করছে। একই এলাকার চায়ের দোকানদার আনোয়ার হোসেনের ও কোন ধান চাষই নেই। অথচ তার নাম লটারিতে এসেছে।
সূত্রের দাবী, ২০১৪ সালের কৃষক তালিকা থেকে লটারির মাধ্যমে বাছাই করা অধিকাংশ কৃষকের ধান চাষ নেই। এদের কৃষি কার্ড এক শ্রেণির মৌসুমে ব্যবসায়ীরা দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় কিনে খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করছে। পরে কৃষকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিল তুলে নিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করছে। আর প্রতারিত হচ্ছেন প্রকৃত প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা। আর এর বড় একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে খাজুরা বাজার ও তার আশপাশের এলাকার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে বাঘারপাড়ায় ১৭ হাজার ১শত ৩৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮২ হাজার ২শত ৪৮ মেট্রিক টন। উপজেলায় মোট কৃষকের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৮শত ৭৬ জন।
এ মৌসুমে সরকারিভাবে ১ হাজার ৮শত ৭৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। উপজেলা ধান ক্রয় কমিটির সিদ্ধান্তে একজন চাষি ৫শ কেজি থেকে সর্বোচ্চ এক মেট্রিক টন ধান বিক্রি করতে পারবেন। এ বছর সরকার প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে ২৬ টাকা। লটারির মাধ্যমে এ উপজেলায় ১ হাজার ৮শত ৭৭ জন কৃষক নির্বাচিত হয়েছে। ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৯১ জন কৃষক তাদের ধান গুদামে বিক্রি করছে। সে হিসাবে ৪শ ৮৬ টন আটশ কেজি ধান গুদামে ডুকছে।
এ ব্যাপারে জানতে বাঘারপাড়ার খাজুরা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসি এল এস ডি) নুরে আলম সিদ্দিকীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফাতেমা সুলতানা জানান, বস্তার একটা ওজন আছে, তাই একটু বেশি নিতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবু সুফিয়ান জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে ফের বাদ পড়া কৃষকদের মধ্যে হতে লটারি করা হবে। ধান বেশি নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
<p>ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক -শেখ তিতুমীর আকাশ।<br>সহকারী সম্পাদক-নাসরিন আক্তার রুপা।<br>বার্তা সম্পাদক-মোঃ জান্নাত মোল্লা।<br>প্রধান উপদেষ্ঠা: আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মওলা নকশে বন্দী ।<br><br>প্রকাশ কর্তৃক : এডভানসড প্রিন্টং - ক-১৯/৬, রসুল বাগ, ঢাকা। মহাখালী ঢাকা হতে মুদ্রিত এবং ১৭৮, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা-১২১৭ হতে প্রকাশিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ অফিসঃ ৩৮৯ ডি আই.টি রোড (৫ম তলা) পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা ১২১৯ ,<br>মোবাইল: - ০১৮৮৩২২২৩৩৩,০১৭১৮৬৫৫৩৯৯</p><p>ইমেইল : abhijug@gmail.com ,</p>
Copyright © 2024 Weekly Abhijug. All rights reserved.