২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

নায়ক মান্নার জন্মদিন নিয়ে বিভ্রান্ত ভক্তরা!

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
নায়ক মান্নার জন্মদিন নিয়ে বিভ্রান্ত ভক্তরা!

Sharing is caring!

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার হিসেবে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন মান্না। তার সিনেমায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের কথা বলায় খুব সহজেই দর্শক হৃদয়ে পৌঁছে যান তিনি। আবার তিনি, বলতে গেলে অকালেই চলে যান। ঢাকাই সিনেমায় দীর্ঘ সময় জনপ্রিয়তা ধরে রাখা নায়ক রাজ-রাজ্জাকের পর যে নামটি আসে সে নামটিই নায়ক মান্নার।

 

 

অভিযোগ ডেস্ক : দেশিয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নায়ক মান্না এক অধ্যায়ের নাম। একাধারে নায়ক, প্রযোজক ও সংগঠক হিসেবে তার আধিপত্য ছিলো বেশ দৃঢ়। বাংলা চলচ্চিত্রের স্বার্থে সবসময় ছিলেন সচেষ্ট। সিনেমা প্রেমি এ নায়ক হঠাৎ করেই দীর্ঘ ২২ বছরের অভিনয় জীবনের ইতি টেনে হঠাৎই পাড়ি দেন না ফেরার দেশে। মৃত্যুর এক যুগ হলেও এখনও রয়েছেন তিনি সবার হৃদয়ে।

 

 

জনপ্রিয় এই নায়কের জন্মদিন কিংবা মৃত্যুবার্ষিকী আসলে ভক্তরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভুল করেন না। নায়ক মান্নার মৃত্যুবার্ষিকী নিয়ে ভক্তদের পরিস্কার জানা থাকলেও তার জন্মদিন নিয়ে রয়েছে নানা বিভ্রান্ত।

 

 

নায়ক মান্নার জন্মদিন নিয়ে ভক্তদের বিভ্রান্ত হয়ে, ফেসবুক ও অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। ভক্তদের এই বিভ্রান্ত দূর করতে অভিযোগ পক্ষ থেকে নায়ক মান্নার সঠিক জন্মদিন জানতে যোগাযোগ করা হয় তার স্ত্রী শেলী কাদের সঙ্গে।

 

 

অভিযোগকে প্রয়াত এ নায়কের স্ত্রী শেলী মান্না জানান, মান্নার জন্মদিন ১৪ এপ্রিল। আমরা বেশাখের প্রথম দিন মান্নার শুটিংয়ে কতবার জন্মদিনের কেক কেটেছি তা সবারই জানা। উইকিপিডিয়া ও পাসপোর্টে ভিন্ন-ভিন্ন তারিখ রয়েছে মান্নার জন্মদিন নিয়ে। তাই মান্নার সকল ভক্তদের বলব, মান্নার জন্মদিন ১৪ এপ্রিল। ৬ ডিসেম্বর নয়।

 

 

নব্বই দশকে নায়ক মান্না চলচ্চিত্রের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে ওঠেন। চলচ্চিত্র থেকে যখন গুণি অভিনয় শিল্পীরা সরে গিয়েছিলেন তখন নায়ক মান্না তাদের চলচ্চিত্রে ফিরিয়ে এনিছিলেন। চলচ্চিত্রের খারাপ সময়ে বহু হিট, সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন তিনি। অশ্লীলতার যুগ শুরু হলে নায়ক মান্নাই অশ্লীলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলেন। সেই প্রতিবাদে তিনি সফলও হয়েছিলেন।

 

 

১৯৮৬ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ ঢাকাই সিনেমায় যাত্রা শুরু করেন তিনি। প্রথম ছবি ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘পাগলি’। এরপর একে একে এন্ট্রি হিরো হিসেবে অভিনয় করে যান তিনি। কিন্তু ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে কাজ করেন মান্না। ছবিটি ব্যবসাসফল হওয়াতে মান্নাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

 

 

এরপর কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ ছবির মাধ্যমে তার একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। একে একে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’, ছবিগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মান্নার অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৯৯ সালে ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপারহিট ছবিতে কাজ করেন মান্না।

 

প্রযোজক হিসেবেও মান্না বেশ সফল ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান থেকে যতগুলো ছবি প্রযোজনা করেছেন প্রতিটি ছবি ব্যবসাসফল হয়েছিল। ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে লুটতরাজ, লাল বাদশা, আব্বাজান, স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ, দুই বধূ এক স্বামী, মনের সাথে যুদ্ধ, মান্না ভাই ও পিতা-মাতার আমানত।

 

 

হঠাৎ করেই ঢাকাই সিনেমায় বজ্রপাতের মতো ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন মহানায়ক মান্না।