২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ছাতকের দশঘর মাদ্রাসায় নিয়োগ নিয়ে সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা, বেকায়দায় সুপার

অভিযোগ
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩, ২০১৯
ছাতকের দশঘর মাদ্রাসায় নিয়োগ নিয়ে সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা, বেকায়দায় সুপার

জামরুল ইসলাম রেজা,ছাতক প্রতিনিধিঃ

সুনামগঞ্জের ছাতকের উপজেলার দশঘর রাজ্জাকিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় একজন অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। গোবিন্দগঞ্জ সৈয়দেরগাঁও ইউনিয়নের ওই মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম স্থান অর্জনকারীকে নিয়োগ দেওয়া না দেওয়া নিয়ে এ টানাপড়েন চলছে। অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও এক শিক্ষানুরাগী সদস্যের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ফলাফল শিটে অন্য প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করলেও ওই দু’জন তাদের পছন্দের ৩য় স্থান অর্জনকারীকে নিয়োগ না দেওয়ায় সাক্ষর করেনে নি। ফলে তিন মাসের মাথায় আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তাতেও জটিলতা কাটছে না। গত জুন মাসে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে প্রথম স্থান অধিকারী নিয়োগ প্রত্যাশী অভিযোগ করার পর সম্প্রতি ৩য় স্থান অধিকারী উল্টো মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানা সমালোচনা। মাদ্রাসা সুত্রে জানা গেছে, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ১৮ মার্চ অনুষ্টিত হয় নিয়োগ পরীক্ষা। এতে ২৩ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয় ৬ জনের। তাদের মধ্যে ফলাফলে ১ম স্থান লাভ করেন উপজেলার ভাতগাও রশিদপুরের ইমাদ উদ্দিন নামের এক ব্যাক্তি। দ্বিতীয় হন কুলাউড়ার কর্মদার আবু হুরায়রা ও ৩য় হন ছাতকের বিলপাড় এলাকার তাজুল ইসলাম তারেক। নিয়োগ পরীক্ষা বোর্ডে ছিলেন ডিজির প্রতিনিধি সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা সিলেটের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা এম.এ মোছাব্বির, ছাতক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায়, মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মুশাহিদ আলী, পরিচালনা কমিটির সভাপতি কমর আলী ও শিক্ষানুরাগী সদস্য আব্দুল করিম। জানা গেছে, কমর আলী ও আব্দুল করিম পরীক্ষায় ৩য় স্থান অর্জনকারী তারেককে নিয়োগ প্রস্তাব দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু নিয়োগ বোর্ডের অন্যরা তাতে রাজি না হওয়ায় সভাপতি কমর আলী ও সদস্য করিম ফলাফলশিটে সাক্ষর করেন নি। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া নানা ঘটনার পর ভেস্তে যায়। জটিলতার পর ২১ জুন আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ অবস্থায় প্রথম স্থান অর্জনকারী ইমাদ উদ্দিনকে নিয়োগ না দেওয়ায় তিনি ১৩ জুন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পর ২৪ জুন আরেকটি অভিযোগ দেন। ২৪ জুনের অভিযোগে তিনি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কমর আলী ও সদস্য আমির আলীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার উৎকোচ দাবির অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করছেন উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভুমি) তাপস শীল। তিনি জানান, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে সত্যতা সম্পর্কে জানা যাবে। এ অবস্থার মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার ৭ মাস পর গত ২৭ নভেম্বর মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ করেন নিয়োগ পরীক্ষায় ৩য় হওয়া তাজুল ইসলাম তারেক। অভিযোগ প্রসঙ্গে মাদ্রাসা সুপার মুশাহিদ আলী জানান, আমাকে হয়রানী করার জন্য অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। যিনি অভিযোগ দিয়েছেন তিনিও তো পূননিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পর আবেদন করেছেন। তা হলে কিভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতিষ্টানে তিনি আবেদন করেন।মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি কমর আলী অভিযোগ প্রসঙ্গে জানান, বিষয়টি তদন্ত চলছে। আমি দায়ি হলে দায়ভার নেবো। তিনি কাউকে নিয়োগ দিতে দাবি বা চাপ দেননি দাবি করে জানান, রিজাল্টশিটে সাক্ষরের আগে তার মতামত নেওয়া হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30