Sharing is caring!
মঞ্জুরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা প্রতিনিধি:-
দুই ব্যক্তির নামের সাথে ‘মাকসুদুর রহমান’ যুক্ত আছে। একজনের পুরো নাম মাকসুদুর রহমান মাসুদ ভূইয়া, যিনি ক্যাসিনোর ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত আর অন্যজন হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান মাকসুদ। নামের এমন মিল থাকায় সুযোগ সন্ধানী মহলের নানা রকম ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়তে হচ্ছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান মাকসুদকে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভূইয়ার আপন ছোট ভাই মাকসুদুর রহমান মাসুদ ভূইয়া। যিনি খালেদের সকল ব্যবসা বানিজ্য দেখাশুনা করতেন ও ক্যাসিনোর ক্যাশিয়ার ছিলেন।
ক্যাসিনো অভিযানে অনেক পত্রিকায় ও মিডিয়ায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান মাকসুদ কে জড়িয়ে বার বার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন যুবলীগের মাকসুদ।
যুবলীগ নেতা মাকসুদ জানান, “আমি খালিদের ক্যাসিনো ক্যাশিয়ার হতে যাবো কেন? একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করেছি,এমবিএ পাশ করেছি। খালিদতো ছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর আমিও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
সাবেক ছাত্রনেতা ছিলাম। আমি তার ক্যাশিয়ার হতে যাবো কেন? সুস্পষ্ট ভাবে বলতে পারি ক্যাসিনো ক্যাশিয়ার হলো খালিদের আপন ছোট ভাই মাকসুদুর রহমান মাসুদ ভূইয়া। আমি বুকে হাত রেখে বলতে পারি, ক্যাসিনো ক্যাশিয়ার মাকসুদুর রহমান মাসুদ ভূইয়ার সাথে আমার কোন প্রকার যোগাযোগ কিংবা সম্পৃক্ততা নেই।পরে যুবলীগ নেতা মাকসুদুর রহমান আওয়ামী লীগের দুঃসময়-সুসময়ে তার রাজপথের বিভিন্ন অবদান কথা তুলে ধরেন।
রাজপথের গল্পে মাকসুদুর রহমান মাকসুদ জানান, “আমি ১৯৯৩ সালে নবম শ্রেনীতে পড়ি,তখন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম। ১৯৯৮ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়ে ঢাকার রাজপথে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৯৯৮-২০০৩ (দেবাশীষ-স্বপন) কমিটিতে কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলাম। ২০০৩-২০১১ (রিপন-সাঈদ) কমিটিতে সম্পাদক মন্ডলির সদস্য।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী ২০০৭-২০১১(রিপন-রোটন) কমিটিতে সহ সম্পাদক ছিলাম। ২০০১ সালের পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বহুবার মিথ্যা মামলার স্বীকার হই।
২০০৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী আওয়ামী লীগের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সফল করতে গিয়ে গুরুতর আহত হই। ১৩ ফেব্রুয়ারী পুরান ঢাকার সুমনা হাসপাতালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা হাসপাতালে দেখতে আসেন এবং চিকিৎসার খোজ খবর নেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সহ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম সতের বছর।
২০০৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরান ঢাকার সুমনা হাসপাতালে মাকসুদুর রহমান মাকসুদের চিকিৎসার খোজ খবর নেয়ার মুহূর্তে।
তিনি বলেন, ২০১১ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ এর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আট বছর। বর্তমানে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ এর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছি।দীর্ঘ রাজনীতির জীবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাজপথের পরীক্ষিত সৈনিকেরা কখনো অন্যায় অপরাধ করেনা। তিনি আরও বলেন,আমার পিতা ছিলেন ১৯৬২ সাল থেকে আমিনাবাদ ইউনিয়ন বোর্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক।
তখন আমার জন্মস্থান চরফ্যাশন উপজেলা ছিল না। লালমোহন উপজেলার অধীনে ছিল চরফ্যাশন। চরফ্যাশন তিনটি ইউনিয়ন বোর্ডে বিভক্ত ছিল।তিনি ছিলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, আদর্শবান স্কুল শিক্ষক। তিনি ১৯৯৫ সালে ইন্তেকাল করেছেন।
মৃত্যু পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পিতার আদর্শে বড় হয়েছি। কখনো কোন অন্যায় করিনি,অন্যায় কে প্রশ্রয় দেইনি।
আমরা যারা মমতাময়ী নেত্রী,মানবতার জননী রাস্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাজপথের কর্মী,আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে রাজপথ থেকে সরাতে পারবে না।
মাকসুদ বলেন,গত কিছুদিন ধরে কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায়,অনলাইন পত্রিকায় ও মিডিয়ায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন নিউজ করা হয়েছে আমার সাংগঠনিক পোস্ট উল্লেখ্য করে। নামে নামে জমে টানার মতো অবস্থা। সকলের কাছে অনুরোধ আমি পত্রিকার মাকসুদুর রহমান নই।
পত্রিকায় যেই মাকসুদুর রহমান এর নাম ক্যাসিনো সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা এসেছে তিনি খালিদের আপন ছোট ভাই। বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র কারীরা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাজপথের তৃণমূলের পরীক্ষিত সৈনিকদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার রাজপথে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে যারা আমাকে চিনেন, তারা যানেন আমি জীবনে কোন ক্লাবে যাইনি,ক্যাসিনোর সাথে আমার কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই।
তিনি আরও বলেন, ২০০৭ সালের ১/১১ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যখন আমার মায়ের মতো নেত্রীকে ১৬ জুলাই গ্রেফতার করা হয় প্রিয়নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন করতে গিয়ে রাস্ট্রদ্রোহি মামলার আসামী ছিলাম।যৌথ বাহিনী বহুবার চেষ্টা করেছে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল।
কিন্তু স্থির ছিলাম নেত্রীর মুক্তি ছাড়া রাজপথ ছাড়বো না। মাকসুদ বলেন, আমার আত্নবিশ্বাস আছে, ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। ষড়যন্ত্র আগেও বহুবার হয়েছে,এখনো চলছে। অন্য জনের নামের সাথে আমার নাম ও সাংগঠনিক পদকে ব্যবহার করে আমাকে রাজনৈতিকভাবে আমায় হেওপতিপন্ন করতে একটি মহল বার বার মিথ্যা ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টা করছে।
এসময় তিনি দেশের গনমাধ্যম মিডিয়া ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য মাকসুদ বলেন,সাংবাদিক ভাইয়েরা হলো জাতির বিবেক,সেই বিবেকের দিকে তাকিয়ে থাকা আমিও একজন এদেশের নাগরিক হিসেবে অনুরোধ করছি,কোন অনুমান করে বা কাউকে খুশি করতে সংবাদ প্রকাশ নয়।দেশ ও জনগনের সার্থে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে দেশের গনমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান তিনি।