১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ওসমানী স্টেডিয়াম এখন যেন একটা দ্বীপ

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৫, ২০১৯
ওসমানী স্টেডিয়াম এখন যেন একটা দ্বীপ

 

মোঃ শাকিল আহম্মেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ঃ২৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামটি ২০০৬ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ বনাম কেনিয়ার আন্তর্জাতিক ওডিআই ম্যাচের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।
একই বছরের ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম ভারতের একটি ওডিআই ম্যাচের মাধ্যমে শেষ হয় এর আন্তর্জাতিক ওডিআই ইতিহাস। ২০০৬ সালের ৯-১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্ট ম্যাচের মাধ্যমে শুরু হয় টেস্টের ইতিহাস। ২০১৫ সালের ১০-১৪ জুন বাংলাদেশ বনাম ইন্ডিয়ার টেস্ট খেলার মাধ্যমে শেষ হয় এ স্টেডিয়ামের টেস্ট ম্যাচের ইতিহাস। এখনো পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। বর্তমানে মাঠটিতে দুই একটি ক্লাবের খেলা ও ছোটোখাটো টুর্নামেন্ট ছাড়া আর কোনো খেলা অনুষ্ঠিত হয় না। নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় মাঠটির নেই কোনো দেখভাল। অবহেলায় পড়ে থাকতে থাকতে এখন মাঠটি পুরোপুরি আন্তর্জাতিক ম্যাচের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
ফতুল্লায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলার একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। কিন্তু দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার সমস্যায় স্টেডিয়ামটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্টেডিয়ামটি যেন এক টুকরো দ্বীপ। চারদিকে পানি থৈথৈ করছে। আর সেই পানি ভরে আছে জলজ উদ্ভিদ ও কচুরিপানায়। পানিতে নষ্ট হচ্ছে মাঠ। এতে করে হুমকির মুখে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক এই ক্রিকেট ভেন্যুর ভবিষ্যত।
কয়েকদিন আগে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্টেডিয়ামটির এমন ভয়াবহ চিত্র। স্টেডিয়ামের লিংক রোড সংলগ্ন গেট দিয়ে প্রবেশের মুখেই দেখা গেল ময়লার স্তূপ। লিংক রোড ও স্টেডিয়ামের মাঝে থাকা পানি নিষ্কাশনের ক্যানেলটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। স্টেডিয়ামের কমেন্ট্রি বক্স ও অন্যান্য স্থাপনার গ্লাসগুলো ভাঙাচোরা। গ্যালারির দর্শকদের রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচানোর ছাউনি কবে ভেঙে গেছে তা হয়ত ভুলেই গেছে কর্তৃপক্ষ।
বাইরে থেকে আসা যে কারো কাছে মনে হবে এটি একটি পরিত্যক্ত জায়গা। বাইরের প্র্যাকটিস করার জায়গার অবস্থা আরো খারাপ। বৃষ্টির পানি ও ডিএনডি খালের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পকারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিতে এই জায়গাটি এখন ডোবা-নালায় পরিণত হয়েছে। গেট পার করে স্টেডিয়ামে যেতে পায়ে হাঁটা ৩ মিনিটের পথ পুরোটাই পানির নিচে। রাস্তার পাশে থাকা ড্রেন থেকে আসা মানববর্জ্য রাস্তার ওপর ভেসে বেড়াচ্ছে। বছরের পর বছর এভাবেই আটকে আছে পানি। দুর্গন্ধে সেখানে টেকা দায়। আর জমে থাকা পানি এখন নানা পোকামাকড় আর এডিসসহ অন্যান্য মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, মাঠটি নির্মাণের সময় বড়ো ধরনের ভুল করা হয়েছে। মাঠের জায়গাটি একসময় জলাভূমি ছিল। ডিএনডির ভয়ঙ্কর জলাবদ্ধতার মধ্যে এটি পড়ে গেছে। নির্মাণের সময় আশেপাশে বসতবাড়ি বেশি না থাকলেও এখন বসতবাড়ির পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ফলে অন্যান্য জায়গা থেকে জায়গাটি নিচু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় যে ক্যানেল দিয়ে এ মাঠের পানি নিষ্কাশন হওয়ার কথা এখন সেই খাল দিয়েই বৃষ্টির পানি এসে তলিয়ে যাচ্ছে স্টেডিয়াম ও এর আশপাশের এলাকা।
এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত যেন স্টেডিয়ামের পাশে থাকা ময়লা অপসারণ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয় এবং নিয়মিত স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করা হয়। এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য স্টেডিয়ামটিতে কর্তব্যরত কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাক্ষাত্ পাওয়া যায়নি

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30