Sharing is caring!
স্টাফ রিপোর্টার, শেখ আসাদুজ্জামান আহমেদ টিটু
নীলফামারীর, সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যেত না ট্রেনের টিকেট। একটি চক্র এখানে টিকেট বানিজ্য সিন্ডিকেট তৈরি করে। তারা কাউন্টার ম্যানকে ম্যানেজ করে টিকেট সংকট সৃষ্টি করে। পরে বাড়তি দামে ওই টিকেট বিক্রি করা হত। কোন ভাবেই ওই সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে পারেনি কেউ। ফলে ট্রেন যাত্রীরা পড়েছিল চরম ভোগান্তিতে। কিন্তু আজ তার অবসান ঘটেছে।
এখন স্টেশনে টিকেট কাটতে গেলে কাউন্টার থেকে কেউ বলে না টিকেট নেই। কেন হঠাৎ করে এটি পাল্টে গেল তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রতন জানান, এ স্টেশন থেকে প্রতিদিন ৭টি ট্রেন চলাচল করে।ঢাকা গামী আন্তঃনগর নীলসাগর ও চিলাহাটি এক্সপ্রেস, খুলনা গামী আন্তঃনগর রুপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস, রাজশাহী গামী আন্তঃনগর বরেন্দ্র ও তিতুমীর এক্সপ্রেস এবং খুলনা মেইন নামে একটি ট্রেন।
বাসে দুর্ঘটনা এড়াতে অনেকে বেছে নেয় রেলপথ।
তাই রেলপথে বেড়ে যায় যাত্রীর সংখ্যা। ফলে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টশন থেকে বাড়ানো হয় ট্রেনের সংখ্যাও।
এদিকে নীলফামারী, ডোমার, চিলাহাটি এবং ডিমলার জনগনের দাবিতে অবশেষে চিলাহাটি পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করে।
তবে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের বড় একটি সমস্যা দেখা দেয়। সেটি হল টিকেট সিন্ডিকেট। সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের টিকেট কাটতে এলে পাওয়া যেত না কোন টিকেট। কাউন্টার থেকে বলা হত টিকেট নেই, টিকেট নেই। অথচ ওই রেলওয়ে স্টেশনের কতিপয় লোকের সাথে পরিচয় থাকলে বাড়তি দামে সহজেই পাওয়া যেত যে কোন ট্রেনের টিকেট। বলা চলে সিন্ডিকেট ছাড়া কেউ টিকেট পেয়েছেন কি না তা সন্দেহ।
দীর্ঘদিনের জনতার অভিযোগ ছিল সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে একটি টিকেট বানিজ্য সিন্ডিকেটের। ওই সিন্ডিকেট আগেই কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়ে নিত। তারপর এরা ট্রেনের টিকেট সংকট তৈরী করতো। পরে সময়ে সুযোগে কম দামের টিকেট দ্বিগুন দামে বিক্রি করা হত। প্রশাসনের নজরদারি থাকার পরও টিকেট সংকট সমস্যার কোন সমাধান পায়নি সাধারণ যাত্রীরা।
কারা ওই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত তাও কিন্তু প্রকাশ পায়নি। সিন্ডিকেট ছিল অনেকটা আড়ালে।
কতিপয় টিকেট কালোবাজারি ধরা পড়লেও টিকেট সংকট সমস্যার সমাধান কোন ক্রমেই হয় না। অবশেষে বাধ্য হয়ে সৈয়দপুরের মানুষ টিকেট সংগ্রহ করে থাকে কালোবাজারির কাছ থেকে সেটা বেশী দামে। অনেকে আবার টিকেট করতো পঞ্চগর ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস। তারা ট্রেন ধরতো পার্বতীপুর থেকে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের টিকেট ছিল যেন সোনার হরিণ। টিকেট সিন্ডিকেটের কারণে ভোগান্তির শেষ ছিল না যাত্রীদের।
১৭ আগস্ট সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় ভিন্নচিত্র। কাউন্টারে নেই দীর্ঘ লাইন। কাউন্টারের আশপাশে কোন ভীর নেই। কালোবাজারিদের আনাগোনাও নেই। টিকেট কাউন্টার থেকে যেন সহজেই মিলছে যে কোন ট্রেনের টিকেট। এ যেন আমূল পরিবর্তন। জয়পুরহাট যাবেন এমন এক যাত্রী জানালেন টিকেট সিন্ডিকেট এখন নেই। কাউন্টার থেকে এখন আর কেউ বলে না টিকেট নেই। যে আসছে দেয়া হচ্ছে টিকেট।
অনিক এ মন্ডল জানান, কয়েক সপ্তাহ আগেও টিকেট কাটতে এলে বলা হত টিকেট নেই। টিকেট নেই। এ শব্দটি শোনার পর অনেকের সাথে কাউন্টার ম্যানের ঝগড়া হত। কিন্তু আজ দেখছি ভিন্নচিত্র। কোথায় যাবেন বলার সাথে সাথেই দেয়া হচ্ছে টিকেট। এ যেন এক অবাক করা কান্ড মনে হল। যেখানে বাড়তি টাকা দিয়েও টিকেট মেলে না সেখানে সরকারী মুল্যে অনায়সে মিলছে ট্রেনের টিকেট। তবে এ নিয়ম যেন আবার পরিবর্তন না হয় সেদিকে নজর রাখতে প্রশাসনের প্রতি অনেকের অনুরোধ।
সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রতন জানান, কেউ যদি টিকেট নিয়ে কোন ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নেয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।