২৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪
খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকা

Sharing is caring!

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋণ পুনঃ তফসিলের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাত থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে দেওয়ার পর খেলাপি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির বিষয়টি হঠাৎ করে সৃষ্ট কোনো সমস্যা নয়। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসার ধারাবাহিকতা। কয়েক বছর ধরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। করোনা শেষে বিশেষ সুবিধা তুলে নেওয়ার পর এটি বড় একটা লাফ দিয়েছে। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ঋণ পুনঃ তফসিল ক্ষমতা বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দেন, যা খেলাপিকে উসকে দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে এ হার বেড়ে হয় মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। আর সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপির হার দাঁড়ায় মোট বিতরণকৃত ঋণের ৯ শতাংশ।

খেলাপি ঋণের এসব তথ্য আন্তর্জাতিক মানের নয় বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে অনেক তথ্য থাকে না। খেলাপি কম দেখাতে অনেক তথ্য যোগই করা হয় না এখানে। ঋণ পুনঃ তফসিল, পুনর্গঠন ও ঋণ অবলোপন করার তথ্য দেওয়া হয় না। পাশাপাশি বিশেষ ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হয়। বিশেষ কৌশলে নানা ছাড় দিয়ে খেলাপি ঋণ কমানো হয়।

খেলাপি ঋণ কম দেখাতে নানা কৌশল নেওয়ার পরেও সরকারি ব্যাংকে খেলাপির হার এখনো ২১ শতাংশ, আর বেসরকারি ব্যাংকে ৬ শতাংশ। যদিও সরকারি ব্যাংকের খেলাপির ১০ শতাংশ ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার শর্ত দিয়েছে আইএমএফ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমাতে অনেক দিন ধরে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ আদায় বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে নীতি সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। এসব নীতি সহায়তার কারণে খেলাপি ঋণ শেষ প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে।