১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

২৩ বছরে পা দিয়েছে বশেমুরবিপ্রবি

প্রকাশিত জুলাই ১০, ২০২৩
২৩ বছরে পা দিয়েছে বশেমুরবিপ্রবি

Sharing is caring!

দ্বীন ইসলাম,বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ প্রতিষ্ঠার ২২ বছর পেরিয়ে ২৩ বছরে পা দিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)। ২০০১ সালের ৮ জুলাই জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড কর্তৃক এ দিনটিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আইন পাসের পর ২০০১ সালের ১৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ১৯ জুলাই প্রথম ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল আলম খান। এরপর সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০২ সালের ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করে এবং ভিসির নিয়োগ বাতিল করে তাকে পূর্বের প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের নির্দেশ দেয়।

এরপর প্রায় আট বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে প্রকল্পটি পুনরুজ্জীবীত করে এবং ২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ আইন-২০০১ বাস্তবায়নের জন্য এসআরও জারি করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ ডিসেম্বর ২০১০ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান অধ্যাপক ড. এম. খায়রুল আলম খানকে পুনরায় ৪ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি বিভাগে ১৬০জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। শিক্ষার্থী সংখ্যার দিক থেকে বর্তমানে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে সাতটি অনুষদ এবং তিনটি ইনস্টিটিউটের অধীনে ৩৪টি বিভাগে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা তাদের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি একসময় দেশসেরা বিদ্যাপীঠ হয়ে উঠবে।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হোসাইন বলেন, বশেমুরবিপ্রবি মানে এক আবেগের স্থান। গোপালগঞ্জের স্থানীয় হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে আবার ক্ষমতায় আসলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। তখন আবারও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার স্বপ্ন মাথা চারা দিয়ে উঠলো। সব জটিলতাকে পাশ কাটিয়ে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে চলতে শুরু করে।

ইএসডি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আহসান ইমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে জোর দেন। তার মতে, দেখতে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়টি ২২ বছর পাড়ি দিলেও উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের মূল লক্ষ্য হোক, দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গবেষণার মান বৃদ্ধি করা।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ড. শরাফত আলী বলেন, বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, দারিদ্র্য বিমোচন, গণতন্ত্র ও আইন প্রতিষ্ঠা ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বশেমুরবিপ্রবি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশ ও জাতির উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, আমাদের লক্ষ্য থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। যাতে শিক্ষার্থীদের জনশক্তিতে পরিণত করে, বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গবেষণা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।