২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা চেয়ারম্যানসহ আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ

admin
প্রকাশিত জুন ১৮, ২০২৩
নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা চেয়ারম্যানসহ আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ

Sharing is caring!

নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
চেয়ারম্যানসহ আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ

মোজাম্মেল হক লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মো.দুলালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনসহ অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ এবং আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ইউনিয়নবাসী। রোববার (১৮ জুন) সকাল ১১টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাব চত্তরে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধ কর্মসূচি শেষে শহরে বিক্ষোভ করে আন্ডারচর ইউনিয়নবাসী। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা বলেন, ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনে আন্ডারচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন মো. দুলাল। একই ভোটে ৫নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনও ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় জসিম উদ্দিন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চাইলে তাঁর অন্যায় কাজের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দুলাল মেম্বার। সেই থেকে জসিমের সঙ্গে দুলাল মেম্বারের বিরোধ তৈরী হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুলাল মেম্বার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। ওই নির্বাচন থেকে দুলালের সঙ্গে চেয়ারম্যান জসিমের বিরোধ প্রকাশ্যে রুপ নেই। জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার ভাই-ভাতিজা এবং আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে পুনরায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। এতে একাধিক জায়গায় চেয়ারম্যানের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন দুলাল মেম্বার। যার কারণে বলি হতে হয়েছে দুলালকে। নিহত দুলাল মেম্বারের বড় ছেলে মো. আজিজ বলেন, আমার বাবা দুলাল মেম্বার একজন সামাজিক-ন্যায়পরায়ন মানুষ ছিলেন। চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করনে আমার বাবা। যার রেশ ধরে গত ২৫ মে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন তার বাড়িতে একটি শালিশ বৈঠকে ডেকে তার লোকজন দিয়ে আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করেন। আমার বাবা মৃত্যুর আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাকে তার হত্যাকারী জসিম চেয়ারম্যানসহ ৯জনের নাম বলে গেছেন। জসিম চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার বডিগার্ড সুমন, মো. সবুজ, ভাতিজা ফিরোজ আলম, ভাই ফারুক, ভাগিনা মমিন, তার সহযোগী ইউসূফ, সেলিম ও আরেক বডিগার্ড নুর মোহাম্মদ রবিন আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করে। আমি তাদের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ আমার মামলা গ্রহণ করেনি। পরে ওই অভিযোগ আদালতে দাখিল করলে আদালতও আমার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। আমরা কার কাছে যাব, কে আমার বাবার হত্যাকারীদেরে বিচার করবে। ২০২০ সাল থেকে নোয়াখালীর সীমান্তবর্তী আন্ডারচর ইউনিয়নে ৭টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই হত্যাকান্ডগুলোর এখানো কোন বিচার হয়নি দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, প্রক্যেকটি হত্যার কারণ হলো আধিপত্য বিস্তার। হত্যাকারীরা রাজনৈতিক নেতাদের চত্রছায়ায় থেকে এসব হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্রমেই হত্যাকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে দুলাল মেম্বারসহ অন্যান্য হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন পূর্বক আসামিদের বিচার দাবি করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে আন্ডারচর ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়। অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কোন হত্যাকান্ডই আমার কাছে কাম্য নয়, আমিও চাই দুলাল মেম্বারের খুনিদের শাস্তি হোক। কিন্তু একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে। আমি কোনভাবেই এই হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। থানার পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি দুলাল মেম্বারের ছেলের এমন অভিযোগ নাকচ করে সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তারা (দুলাল মেম্বারের পরিবার) আমার কাছে এই ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি, তারা ৯জনের নাম উল্লেখ করে কোর্টে অভিযোগ দিয়েছে। ওরা বলেছে, ওরা যে অভিযোগটা দিয়েছে, সেটা আমি জিডি নিয়েছি, মামলা নি নাই। কিন্তু আমিতো মামলাই নিয়েছি, জিডির চেয়ে বড়টাই নিয়েছি। মামলার বাদির প্রধান অভিযোগ তো স্থানীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে, তাহলে চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়নি কেন এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, ওই অভিযোগে তো চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয় নাই, অভিযোগটি অজ্ঞাতনামা হিসেবে ছিল।