Sharing is caring!
বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি:গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষকের নামে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে একাধিক শিক্ষার্থীকে ইকুইভ্যালেন্স সার্টিফিকেট প্রদান করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক শিক্ষক সমিতির প্রচার সম্পাদক ও ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ( ইটিই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আরিফুজ্জামান রাজীব।
জানা যায়, সম্প্রতি সময়ে তিনি একাধিকবার ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সভাপতি ড. মো. আব্দুল্লাহ আল আসাদের অজান্তেই তার পদ, স্বাক্ষর ও বিভাগীয় প্যাড জালিয়াতি করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরু থেকে বিভিন্ন সময়ে তিনি ঐ বিভাগের সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ২০১৩ -১৬ সালের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থীকে এই সার্টিফিকেট প্রদান করেন। সার্টিফিকেটধারী শিক্ষার্থীরা ইটিই বিভাগের হলেও এই সার্টিফিকেট থাকার কারণে তারা ইইই বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থী হিসেবে বর্তমানে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত রয়েছেন।
এর আগে,দীর্ঘদিন ইটিই বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০২১ সালে ইটিই বিভাগকে ইইই বিভাগের সাথে একীভূতকরণ করা হয়। তবে রূপান্তরিত বিভাগকে ইইই(সি) দিয়ে লেখা হলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক দাপ্তরিক কাগজপত্রে অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের পরিচয় ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রদান করেন। এছাড়াও ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বামপন্থী শিক্ষক রাজনীতি ও শেখ রাসেল হলে সংযুক্তি বিহীন অবৈধ শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক আবাসিকতা প্রদান নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ঐ স্বাক্ষর জালিয়াতি ও এর শাস্তির দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ইইই বিভাগের সভাপতি ড. মো. আব্দুল্লাহ আল আসাদ। একই পত্রে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. মো. শাহজাহান, প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বশির উদ্দিন নিবেদক হিসেবে স্বাক্ষর করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ড. আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন, আমি যা করেছি শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্য করেছি। শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই এসব সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুল্লাহ আল আাসাদ জানান, আমার অজান্তেই আমার পদ, সীল ও প্যাড নিয়ে যে প্রতারণা করা হয়েছে সেটা বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমি এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করি।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমরা এ বিষয়ে উপাচার্যের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উল্লেখ্য, দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪৬৩ ধারায় এ জালিয়াতিকে একটি শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।এ আইন অনুযায়ী প্রতারণা করার অভিপ্রায় বা প্রতারণা সংঘটিত হতে পারে; যেকোনো ধরনের প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে যে কোনো ধরনের ডকুমেন্টস তৈরি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এর শাস্তি হচ্ছে দুই বছর পর্যন্ত যে কোনও বর্ণনা কারাবাস বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড।আবার প্রতারণার প্রয়োজনে জালিয়াতি করা হলে সেই ক্ষেত্রে যে কোন বর্ণনায় অর্থদণ্ডসহ সত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে৷