২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

অবহেলায় পড়ে আছে শ্যামনগর সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র টি

admin
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০১৯
অবহেলায় পড়ে আছে শ্যামনগর সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র টি

Sharing is caring!

এম আকাশ, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরা জেলার সর্ব দক্ষিনের ঊপজেলার নাম শ্যামনগর, যেটি উপকুলীয় অঞ্চল বলে স্বীকৃত। আর এই উপকূলীয় অঞ্চলের ১২টি ইউনিয়নের সাড়ে চার লক্ষ মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী শ্যামনগর সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনটির জরাজীর্ণ অবস্থা, তারই মধ্য দিয়ে চলছে অসুস্থ্য রোগীদের সেবা প্রদান। আইলা, সিডর আক্রান্ত বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের সর্ববৃহৎ এই উপজেলায় একমাত্র হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবায় কয়েকবার সুনামের সহিত গৌরব অর্জন করলেও তা আজ জরাজীর্ণ , ভবন সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অসহায়, গরিব-দুঃখী মানুষ। শ্যামনগর থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রায় ৫৫ কিঃ মিঃ দূরে হওয়ায় দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে সাধারণ মানুষ জেলা সদরে যেয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে অক্ষম। তাছাড়া দূরের পথে যাবার মৃত্যুঝুকি, যাতায়াত খরচ জোগাড় ইত্যাদি সমস্যা অতিক্রম করে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে না। যার কারনে জীবন বাজি রেখে জরাজীর্ণ ভবনের ছাদের নিচে স্বাস্থ্যসেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষেরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও রোগীর অত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, জীবন বাঁচাতে এসে জীবন চলে যায় কিনা সেই আতঙ্কে থাকতে হয় সবসময়। হাসপাতালের ভিতরে রোগীরা ভালোভাবে খাওয়া-দাওয়া করতে পারেনা, উপরের সাদ থেকে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে বালুকণা। দেখা যাচ্ছে কোথাও কোথাও ছাদের রড বেরিয়ে গেছে অনেকখানেই। ডাক্তার নার্সদের সেবার প্রচেষ্টা থাকলেও আমাদের জরাজীর্ণ ছাদের নিচে থাকতে ভয়, ভয় করে। কখন না উপর থেকে ছাদ ভেঙে পড়ে মাথার উপরে চলে যায় প্রাণ। তারা আরো বলেন, তাদের সামনে ছাদ ভেঙে পড়েছে রোগীর পায়ের পাশে, অল্পের জন্য গায়ে পড়েনি। হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবায় সারা বাংলাদেশ কয়েক বার টপ টেন এর ভিতরে থেকে সুনামের সাথে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখন আর নানা প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে সে সুনামের সাথে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ অজয় কুমার সাহা মৌখিকভাবে ও লিখিত ভাবে খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূলভবন ও পুরাতন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হইয়া পড়েছে। সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন এবং সাতক্ষীরা সহকারী প্রকৌশলী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা হাসপাতালটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হলো পুরুষ, মহিলা ওয়ার্ড, গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ, শিশু বিভাগসহ সব বিভাগেই দুই শত বেশি রোগী থাকে। স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন আউটডোরে কয়েক শত রোগী। সাম্প্রতিক সারা বাংলাদেশের ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল প্রকার সরকারি ছুটি বাতিল করায় নিরলসভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। শ্যামনগরের সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতে স্বাস্থ্যসেবা না নিতে হয় তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।