৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সার ডিলারশিপ নিয়ে বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান

Weekly Abhijug
প্রকাশিত মার্চ ১৯, ২০২৩
সার ডিলারশিপ নিয়ে বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান

সাকিব আলম মামুন

লংগদু, রাঙামাটি

নিজ ইউনিয়নে নিজেই সার ডিলার হওয়ায় এবং বিধি লঙ্ঘন করে ডিলারশিপ ব্যবসায় জড়িত থাকার দায়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের দাবি তোলা হয়েছে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এলাকার জনসাধারণের পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ আইন-২০১০’এর ২৬ ধারার ২(ছ) তে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, তিনি বা তার পরিবারের উপর নির্ভরশীল কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোনো কাজ সম্পাদনের বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন বা এতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোনো বিষয়ে তার কোনো প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে বা তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যক ডিলার হন, তাহলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এ আইনের ৩৪’এর ৪(ঙ) তে উল্লেখ আছে, এ আইনের ধারা ২৬(২) অনুযায়ী যদি অযোগ্য হিসেবে নির্বাচনের পর প্রমাণিত হয় তবে চেয়ারম্যান, সদস্যগণ সাময়িক বরখাস্ত ও অপসারণযোগ্য। গুলশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকে আজ পর্যন্ত সার ডিলার হিসাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। যা ইউনিয়ন পরিষদ আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। তাই আইন অনুযায়ী তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।

অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে স্থানীয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর।

এলাকাবাসীর পক্ষে মো. রেজাউল করিমের বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী কেউ সরকারি ঠিকাদারি বা ডিলারশিপ ব্যবসায় জড়িত থাকলে তিনি চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। কিন্তু গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম নির্বাচনের আগে থেকেই এখন পর্যন্ত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিযুক্ত একজন সার ডিলার হিসাবে লাভজনক ব্যবসায় জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে আইনানুগত কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। হলফনামায় তথ্য গোপন করে তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নির্বাচনী হলফনামায় ছেলের নামে ডিলারশিপের নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন কপি জমা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তবে এখনও নাম পরিবর্তন হয়নি। নাম পরিবর্তন হতে সময় লাগে। তিনি ২০১২ সাল থেকে সারের ডিলার হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বলে জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জমির উদ্দিন বলেন, যদি নিজ ইউনিয়নের সারের ডিলার হয়ে থাকেন এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাহলে অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়েল অনুযায়ী আইন ভঙ্গের জন্য দোষী হবেন। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের করণীয় কিছুই নেই।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সার ডিলারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কৃষি বিভাগের তদারকি থাকলেও নির্বাচন কমিশনের বিধি নিষেধের সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় আমাদের এখানে হস্তক্ষেপ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সার ডিলার পরিচালনার কারণে স্থানীয় লোকজন জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার একটি অনুলিপি দিয়েছে। প্রশাসনিক আদেশ আসলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

উল্লেখ্য যে, তিনি ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ওই ইউপিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031