Sharing is caring!
সাতকানিয়া প্রতিনিধি
মোহাম্মদ হোছাইন
বিয়ের দাবিতে গিয়েছিল প্রেমিকের বাড়িতে। স্বীকৃতি তো দূরের কথা, উল্টো শিকার হয়েছে অপমানের। তাই বিষপানে আত্মহত্যা করে লাশ হয়ে হাসপাতাল মর্গে যেতে হলো প্রেমিকাকে। ঘটনাটি ঘটেছে সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বারদোনা মৌলভীপাড়া এলাকায় । প্রেমিকা হলেন রনি আক্তার (১৮)। তিনি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড ধলিয়া-ঘাটা দেলোয়ার পাড়ার জাকের আহামদের মেয়ে । প্রেমিক সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বারদোনা মৌলভী পাড়ার মৃত সাব্বির আমাদের ছেলে আমিনুর রহমান (২২)। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছেন। এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় থানায় মামলা হয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিগত এক বছর আগে কক্সবাজারের চকরিয়ায় কসমেটিকসের ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করে প্রেমিক আমিনুর রহমান। বিগত ছয় মাস আগে আমিনুরের সাথে প্রেমিকা রনি আক্তারের গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। উভয়েই বিয়ে করবে এই মর্মে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে স্বামী- স্ত্রীর মত প্রায় সময় রাত্রিযাপন করতে থাকে। সম্প্রতি প্রেমিকা বিয়ে করার চাপ সৃষ্টি করলে প্রেমিক আমিনুর তাতে রাজি হচ্ছিলনা। গত সোমবার রাত আটটার দিকে বিয়ের দাবি নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে যায় প্রেমিকা। পরে প্রেমিকের পরিবারের সদস্যরা তাকে অপমান ও ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিলে ট্যাক্সি যোগে যাওয়ার পথে প্রেমিকার সাথে থাকা বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে প্রেমিকের পরিবারের লোকজন প্রেমিকাকে উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতাল পরে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে আমিনুর এর বড় বোন মুন্নি আকতার বলেন, মেয়েটি সোমবার রাত আটটার দিকে হঠাৎ করে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে। তার পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে, আমি আমিনুর এর প্রেমিকা। সে আমাকে বিয়ে করবে। তাই তাকে আজ বিয়ে করতে আসলাম। পরে আমার ভাইয়ের সাথে তার কিছু যৌথ ছবি মোবাইল থেকে দেখাই। পরে আমার ভাই ফারুক, ভগ্নিপতি এনাম ও এলাকার ইউ.পি সদস্য ছবুর এসে তার অভিভাবক নিয়ে আসতে বলবে সে অস্বীকৃতি জানান। এভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা পর্যন্ত মেয়েটির সাথে আমাদের তর্কাতর্কি হয়। পরে সিএনজি চালিত ট্যাক্সিতে তাকে একা তুলে দিয়ে সাতকানিয়া থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে মেয়েটি ট্যাক্সির মধ্যে হঠাৎ ঢলে পরে। ট্যাক্সির পেছনে মোটর সাইকেল নিয়ে থাকা আমার ভাইরা তাকে থানায় না নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বললেন সে মারা গেছে। তাকে অপমান করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে মুন্নি বলেন,তার সাথে তর্কাতর্কি হয়েছে।তাকে অপমান করা হয়নি।
এ ব্যাপারে রনি আকতার এর ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার শালিকার সাথে আমিনুর এর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা উভয়েই বিয়ে করবে বলে এমন একটা সিদ্ধান্তও ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমিনুর বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় রনি বিয়ের দাবিতে আমিনুর এর বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তার (রনি) কথা কেউ না শুনে উল্টো তাকে চরম হেনস্তা ও অপমান করায় সে বিষ পানে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করছি।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে লাশের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যা করতে পারে। চিকিৎসকও সেভাবে আমাদের জানিয়েছেন। এ ঘটনায় আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার দিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মেয়েটির বাবা জাকের আহামদ বাদি হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।