স্বাস্থ্যের ডিজিকে হাইকোর্টে তলবের পর কারাগারে চিকিৎসক পদায়ন
শেখ তিতুমীর পিআইডি মহানগর : স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে (ডিজি) হাইকোর্টে তলবের পর সারা দেশের কেন্দ্রীয় ও জেলা কারাগারগুলোতে মোট ৯০ চিকিৎসককে পদায়ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তাদের আগামী তিন দিনের মধ্যে কর্মস্থলে যোগ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে অধিদফতর। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. মাহমুদুল বাশার ও পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি দেখতে ক্লিক করুন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এসব চিকিৎসক সংযুক্তিতে জেলার কেন্দ্রীয় কারাগার বা জেলা কারাগার হাসপাতলে কাজ করবেন। সংযুক্তিতে কর্মরত অবস্থায় তৃণমূল কর্মস্থল থেকেই বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করবেন।
এতে বলা হয়, পদায়ন, বদলিকৃত পদে বা পদসমূহে কোনো কর্মকর্তা মুভইন না করা অবস্থায় কর্মরত থাকলে তিনি পরবর্তী পদায়নের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট বিভাগে ন্যস্ত হবেন।
এ প্রজ্ঞাপন জারির দুই কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন; অন্যথায় তৃতীয় দিন থেকে সরাসরি অবমুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন।তবে যেসব কর্মকর্তা অর্জিত ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে রয়েছেন, তারা ছুটি ভোগ বা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে ছাড়পত্র গ্রহণপূর্বক পদায়িত কর্মস্থলে যোগদান করবেন।
এর আগে দেশে কারা হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় তার ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তলব করেন হাইকোর্ট। আগামী ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন , অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন; আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। এ বিষয়ে আইনজীবী জে আর খান রবিন মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ৭ জানুয়ারির মধ্যে এ নিয়োগ দিতে বলেছিলেন; কিন্তু এখনও শূন্যপদে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ কারণে আদালত স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে তলব করেছেন। এর আগে অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন বলেছিলেন, কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছে।কারাগারগুলোতে ৯৩ চিকিৎসক নিয়োগ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্যপদে নিয়োগের জন্য সময় প্রয়োজন। পরে আদালত একদিন সময় বাড়িয়ে ৮ জানুয়ারির মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেন। ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি দেশে কারাবন্দিদের চিকিৎসার জন্য কারা হাসপাতালগুলোতে কত চিকিৎসক প্রয়োজন তা জানাতে কারা কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চিকিৎসক নিয়োগের বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন দিয়ে আদালতকে জানান, কারাগারের হাসপাতালগুলোতে মোট ২৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন। যদিও হাসপাতাল অনুসারে চিকিৎসক প্রয়োজন ১৪১ জন। পরে বাকি ১১৭ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। এর পরপর আরও চিকিৎসক নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই নিয়োগের পরে সেখানে মোট চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১২। কিন্তু এর মধ্যে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।চিকিৎসক নিয়োগের পর তা প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী জেআর খান রবিন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।