২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নতুন সাজে লালদীঘি মাঠ,উন্মুক্ত হলো জনসাধারণের জন্য।

Weekly Abhijug
প্রকাশিত জানুয়ারি ৩, ২০২৩
নতুন সাজে লালদীঘি মাঠ,উন্মুক্ত হলো জনসাধারণের জন্য।

নুরনবী শাওন, চট্টগ্রাম

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অবহেলিত থাকার পর চট্টগ্রামের মরা লালদীঘির মাঠ যেন প্রাণ ফিরে পেলো।একমসয়ে দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের অন্যতম সূতিকাগার ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দান।বিভিন্ন কারনে সেটি অবহেলিত হয়ে থাকলেও এখন সতেজ আর সবুজে মোড়ানো হয়েছে এই লালদীঘি ময়দানকে। ছয়দফা দাবি সহ বাঙালি জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মৃতি স্মারক, টেরাকোটার কারুকাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সব মিলিয়ে এ যেন নবরুপে আবৃত মো মাঠ।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় চার কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর গত ৪ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।কিন্তু তাতেও সুযোগ মিলেনি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা কিংবা জনসাধারণের প্রবেশ। অবশেষে নতুন বছরের শুরুতে ২ জানুয়ারি(সোমবার) দুপুরে প্রকল্পটির উদ্যোক্তা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল লালদীঘির ময়দানটি উন্মুক্ত করেন।

সরকারিভাবে এই মাঠটির মালিকানা চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের থাকলেও লালদীঘি ময়দানের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে কারা থাকবে এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, চসিক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা উঠলেও শেষ পর্যন্ত শিক্ষা উপমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে মাঠের নিয়ন্ত্রণ থাকছে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছেই।

চট্টগ্রামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭৬১ সালে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চট্টগ্রামের শাসনভার গ্রহণ করে। তখন থেকেই লালদীঘিকে কেন্দ্র করে এই শহরের যত কর্মচাঞ্চল্য বিস্তার লাভ করে। লালদীঘির পাড়ের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের দপ্তরটি ব্রিটিশ আমলের। তখন এটি তহশীল দপ্তর ছিল। লাল রঙের সেই ভবনকে চট্টগ্রামের মানুষ ‘লালকুঠি’ নামে চিনত। এই ভবনের পাশে ছিল ‘লালঘর’ নামে একটি কারাগার ভবন। এ দুটি ভবনের পাশে ছিল একটি পুকুর। ব্রিটিশ শাসকরা সেই পুকুরের পরিধি বড় করে সেটাকে দিঘিতে পরিণত করেন। পাহাড়ি টিলার ওপর ‘লালকুঠি’ এবং ‘লালঘর’। আর পাশের দীঘিটির নাম তাই স্বাভাবিকভাবে হয়ে গেল লালদীঘি। তার পাশের মাঠটিকেও ‘লালদীঘি ময়দান’ নামে চিনতে শুরু করল সবাই। তাছাড়া ১৯৬৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি লালদীঘি ময়দানে প্রথম জনতার সামনে ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু।

চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান এই বাংলার ইতিহাসের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। এই ময়দান থেকেই গর্জে উঠেছে ব্রিটিশ এবং পাকিস্তানি শাসনবিরোধী নানা আন্দোলন সংগ্রামের হাজারো প্রতিবাদী কণ্ঠের। বাংলাদেশ, ভারতসহ অত্র অঞ্চলের অগুনতি নেতৃত্বের পদচিহ্ন পড়েছে এই লালদীঘির ময়দানে। ইংল্যান্ডের লর্ডস স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটারদের তীর্থস্থান মনে করে সেখানে খেলতে পারা যেমন প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন। তেমনি চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানও প্রতিটি রাজনীতিকের কাছে তীর্থস্থান। এই মাঠে বক্তব্য রাখতে পারা প্রত্যেক রাজনীতিকের কাছে গর্বের, গৌরবের। যে ময়দান চট্টগ্রামের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30