Sharing is caring!
মোঃ সেলিম উদ্দীন, লোহাগাড়া প্রতিনিধি
দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বনবিভাগের হারবাং বিট অফিসের অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের মারধর ও বন মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চুনতি রেঞ্জের হারবাং বন বিট অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে শনিবার ২৪ ডিসেম্বর সকালে চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোঃ আরিফুল ইসলাম।
আহতরা হলেন, আনন্দ টিভির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রতিনিধি মোঃ সেলিম উদ্দিন ও সাপ্তাহিক চট্টবাণী পত্রিকার বিশেষ মোঃ আরিফুল ইসলাম।
আহত সাংবাদিক মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, রুবেল নামের এক গাড়ির চালক চুনতি রেঞ্জের হারবাং বিট অফিসের ফরেষ্ট গার্ড সৈকত মন্ডলের হাতে মারধর ও হয়রানির শিকার হয়েছে এমন অভিযোগে সংবাদ সংগ্রহ করতে যায় আমি ও আমার সহকর্মী সেলিম উদ্দিন। গাড়ির চালক রুবেলকে মারধর ও মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা জলিলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে আপনারা জানার কে? বলে হারবাং বিটের ফরেষ্ট গার্ড সৈকত মন্ডল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এবং আমাদের গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এবং বলতে থাকে ‘তুরা আমাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে তথ্য সরবরাহ করিস তুদেরকে ছাড়ব না। এক পর্যায়ে সৈকত মন্ডল আমাদের মোটরসাইকেলের চাবি কেঁড়ে নিয়ে ঘুষি দিয়ে বের করে দেয়। এবং বলে বেশি বাড়াবাড়ি করলে একজনকে তিনটি করে বন মামলা দিব।
গাড়ির চালক মোঃ রুবেল জানান, শুক্রবার ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে পুরাতন ফার্ণিচার ভর্তি একটি গাড়ি আমিরাবাদ থেকে চকরিয়া উদ্দেশ্য রওনা হয়। চকরিয়ার হারবাং বন বিট অফিসের সামনে একজন দাঁড়াতে সংকেত দিলে আমি বুঝতে না পেরে গাড়ি চালিয়ে চলে যায়। এরপর হারবাং লাল ব্রিজের পাশে একজন এসে আমার গাড়ির সামনে বেরিকেড দিয়ে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে সে আমার গাড়িসহ হারবাং বিট অফিসে নিয়ে আসে। সেখানেও আমাকে প্রচন্ড মারধর করে এবং বিশ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা দিতে না পারলে বন মামলা দিবে বলে হুমকি দেন তিনি।
চালক আরো জানান, মারধর ও মামলা থেকে বাঁচতে চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা জলিলুর রহমান ও হারবাং বিটের ফরেষ্ট গার্ড সৈকত মন্ডলকে পাঁচ হাজার টাকা দিই। তারা টাকা নিয়ে আমার কাছ থেকে জোর পূর্বক মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর মারধর ও মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানায়। প্রচন্ডভাবে মারধর করার কারণে হাঁটতে পারছি না। পায়ে প্রচুর যন্ত্রণা করছে। পরে আমি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। মুচলেকা ও বন মামলার ভয়ে আইনগতভাবে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।
যদিও অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হারবাং বিট অফিসের ফরেষ্ট গার্ড সৈকত মন্ডল ও চুনতি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জলিলুর রহমান।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, বনবিভাগের একজন কর্মকর্তা গাড়ির চালক বা সাংবাদিকের উপর হাত তুলতে পারে না। ঘটনাটি আমি জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই সংক্ষুব্ধ। শীঘ্রই তদন্ত করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
সাধারণ ডায়েরীর বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ চন্দন কুমার চক্রবর্তী।