স্টাফ রিপোর্টার টাংগাইল: বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে টাঙ্গাইলের তাঁতশিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থাকায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার তাঁতশ্রমিক। দিন যত যাচ্ছে ততই নিঃস্ব হওয়ার তালিকাও লম্বা হচ্ছে তাঁতসংশ্লিষ্টদের। আবার সরকারি নজরদারির অনুরোধ তাঁতসংশ্লিষ্ট মালিক শ্রমিকদের।
বংশপরম্পরায় তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত থেকেও ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পারেনি ৬৫ বছর বয়সী তাঁতশ্রমিক টাঙ্গাইল বাসাইল উপজেলার বাথুলি সাদী গ্রামের সমেলা বেওয়া। গত ৮ বছর আগে এক ছেলে এক মেয়ে রেখে অসুস্থ স্বামী মারা গেছেন। ছেলে বড় হয়ে বিয়ে করে তার ঘরেও বর্তমানে তিন সন্তান। সংসারে এখন সদস্যসংখ্যা ৬। তাঁতশ্রমিকের কাজ করে যা আয় হয় তাতে সংসার চলে না।
বর্তমানে আবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে একেবারে অসহায় দিনযাপন করছেন সমেলার পরিবার। ভাগ্যের চাকা পরিবর্তনের আশায় গত ২ বছর আগে অভাব-অনটন দূর করার আশায় ৫ লাখ টাকা ঋণ করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছে। কিন্তু সুদের টাকা পরিশোধ হয়নি দুই বছরেও। ফলে সংসারের হাল ধরতে বৃদ্ধ বয়সেও তাঁতের কাজ করতে হচ্ছে তাকে।
প্রতি সপ্তাহে ৯০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন সোমেলা বেওয়া। কখনও খেয়ে কখনও না খেয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছে এই পরিবারের সদস্যদের। সমেলা বেওয়ার মতো এমনই চরম বিপাকে রয়েছেন জরিনা, আরিফ, শাহালমসহ অন্যরাও।
একদিকে তাঁতশিল্প ক্রমেই লোকসানে পরে বন্ধ হচ্ছে অন্যদিকে আগের মজুরিতে এখন আর তাদের সংসার চালাতে পারছে না।
এদিকে তাঁত মালিকরা বলেন, আগের মতো এখন আর শীত নেই, যে কারণে শীতের চাদর উৎপাদন করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ তাঁত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মালিক না বাঁচলে শ্রমিকও বাঁচবে না।
টাঙ্গাইল বাসাইল উপজেলার বাথুলী এলাকায় গত ৩ বছর অ প্রায় সহস্রাধিক তাঁত ছিল। গত তিন বছরে লোকসানে পড়ে প্রায় ৭০০ তাঁত বন্ধ হয়েছে।