Sharing is caring!
স্টাফ রিপোর্টার
সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলরুটের রংপুরের কাউনিয়া থেকে গাইবান্ধার বোনারপাড়া পর্যন্ত রেলপথে প্রয়োজনীয় তুলনায় পাথর নেই। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ট্রেন চলাচল।
বাংলাদেশ রেলওয়ে গাইবান্ধার সুুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলীর (পথ) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট বিভাগের আওতাধীন সান্তাহার-লালমনিরহাট রেলরুট। এর মধ্যে উত্তরে রংপুরের কাউনিয়া থেকে গাইবান্ধার বোনারপাড়া পর্যন্ত রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭১ কিলোমিটার। এ অংশে দীর্ঘদিন থেকে প্রয়োজনীয় তুলনায় পাথর নেই।
নিরাপদ ট্রেন চলাচলের জন্য রেলপথের পারের নিচে পাথরের স্তর ছয়-আট ইঞ্চি থাকার কথা কিন্তু বর্তমানে আছে তিন থেকে চার ইঞ্চি। এছাড়া রেলপথের দুপাশে পাথরের স্তর কমপক্ষে নয় ইঞ্চি থাকতে হবে তা বর্তমানে চার থেকে পাঁচ ইঞ্চি স্তর রয়েছে। সময়মত রক্ষণাবেক্ষণের না করার কারণে সেগুলোও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। এদিকে প্রায়ই রেলপথ সংস্কারের কাজ চলমান থাকার জন্য এদিকে শতকরা পাঁচভাগ পাথর গুড়া হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পাথর শূন্য হয়ে পড়েছে রেলপথ।
কাউনিয়া-বোনারপাড়া রুটে রেলপথের কয়েক কিলোমিটার অংশ সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রেল পারের নিচে ও দু’পাশে প্রয়োজনীয় পাথর নেই। কাঠ কিংবা লোহার রেল পারের উপর রেলপথ শোভা পাচ্ছে। কোথাও কোথাও রেলপথে সামান্য পাথর থাকলেও সেগুলো আগাছায় ঢেকে রয়েছে। এদিকে গাইবান্ধা ও বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনে আগাছা দিয়ে রেলপথ ঢেকে গেছে। এছাড়া বামনডাঙ্গা, নলডাঙ্গা, কামারপাড়া, কুপতলা, গাইবান্ধা, ত্রিমোহিনী, বাদিয়াখালি ও বোনারপাড়া এলাকায় রেলপথে পাথরের পরিমাণ খুবই কম। সে কারণে রেলপথে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ রুটে চলাচলকারি একজন ট্রেনচালক বলেন, রেলপথে পর্যাপ্ত পাথর না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করতে হচ্ছে। কখনো ধীরগতিতে কখনো প্রতিঘন্টায় সর্বোচ্চ ৬৫ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাতে হচ্ছে। অথচ বোনারপাড়া থেকে সান্তাহার পর্যন্ত রুটে প্রতিঘন্টায় ৭২ কিলোমিটার এবং সান্তাহার থেকে নাটোর পর্যন্ত রুটে প্রতিঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলছে। ব্রডগেজ লাইনে ট্রেন চলে প্রতিঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে। এনিয়ে চালকরাও উদ্বিগ্ন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক প্রকৌশলী বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না কারণ রেলপথে পর্যাপ্ত পাথর না থাকলে যে কোন সময় লাইন সড়ে যেতে পারে। রেলপথের লাইন সড়ে যাওয়ার সমস্যাটি বর্ষাকালে এ আশংকা বেশি রয়েছে। তিনি বলেন, বিগত ছয় ( ৬) বছর ধরে এ রুটে পাথর ফেলা হচ্ছে না। এ ছাড়া এ রুটের রেলপথও ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন ১৯৮৮ সালে এ রুটে রেলপথ সংস্কার করা হয়। ( ৩৪) বছর ধরে সংস্কার হচ্ছে না।
এসব বিষয়ে বামনডাঙ্গা ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী (পথ) পলাশ হোসেন জানান, কাউনিয়া থেকে বোনারপাড়া রেলপথ তাঁর বিভাগের আওতাধীন। বর্তমানে রেলপথের এই অংশে পর্যাপ্ত পাথর নেই। সে কারণে ট্রেন ৬৫ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করছে। তারপরও তা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন। তিনি আরও বলেন, পাঁচ মাস আগে পাথরের বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। অদ্যবধি বরাদ্দ আসেনি।