২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সাফল্যের শীর্ষে মহব্বতপুর সঃপ্রাঃবিঃ প্রধান শিক্ষক কাজল রানী রায়

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
সাফল্যের শীর্ষে মহব্বতপুর সঃপ্রাঃবিঃ প্রধান শিক্ষক কাজল রানী রায়

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নোয়াখালী পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডে সোনাপুর ক্লাষ্টার এলাকায় অবস্থিত মহব্বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পুর্বে ১৯৩০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
৩০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত প্রায় শতবছরের কাছাকাছি এই সরকারি প্রাথমিক স্কুলটিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২৫৬ জন।

৭ জন শিক্ষক ও ১ জন কর্মচারী নিয়ে দক্ষতার সাথে নোয়াখালী সদর উপজেলার এ গ্রেড ভূক্ত এই বিদ্যালয়টি পরিচালনা করছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক কাজল রানী রায়।

২০০১ সালে তিনি এ স্কুলে যোগদানের পরেই স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার চিত্র পাল্টে যায়।

অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী হওয়ায় দিনে দিনে স্কুলের পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার প্রতি মনোনিবেশ এবং অভিভাবকদের হৃদয়ে স্থান করে নেন তিনি।

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্কুলে আসেন সবার আগে। সদা হাসিমুখ ও বাচন ভংগিতে মুগ্ধ স্কুলের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী আর সর্ব স্তরের জনগণ।

শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই তাঁকে দিদিমণি বলেই সম্মোধন করে।

যার মেধা, প্রজ্ঞা আর পরিশ্রমে ২০০২ইং সাল থেকেই প্রাথমিক বৃত্তি পরিক্ষায় স্কুলটির পাশের হার শত ভাগে উন্নীত হয়েছে।

অভিভাবক তথা স্থানীয় এলাকায় কাজল দিদির রয়েছে বেশ সুনাম। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোজ খবর নেন তিনি।

শিশুদের সাথে মায়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

তাঁর ভালোবাসা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রত্যন্ত এলাকার এস্কুলটি আজ জেলা থেকে বিভাগীয় পর্যায়েও পরিচিতি লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।

তাঁর দুরদর্শীতায় ২০০৩ ও ২০০৯ সালে জাতীয় শিশু প্রতিযোগীতায় বিভাগীয় পর্যায়ে সংগীত ও কেরাত এবং খেলাধূলায় ৪ জন শিক্ষার্থী পুরস্কার লাভ করে।

২০০৯ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষায় ৫ জন শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুল বৃত্তি অর্জন করে।

যার ধারাবাহিকতায় ২০১০ইং সাল থেকে গড়ে ৫ জন শিক্ষার্থী প্রতি বছর A+ প্রাপ্ত ও বৃত্তি লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।

শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলায় অবদান রেখেছে মহব্বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে উপজেলা পর্যায়ে ও ক্লাষ্টার পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে।

 

এছাড়াও আন্তঃ প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতায় বিভাগীয় ২য় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে স্কুলটি।

সরকারী অর্থকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছেন যাতে স্কুলের মনোরম পরিবেশ, ফুলের শোভা বর্ধন, দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি, বঙ্গবন্ধুর জীবনী, শেখ রাসেল কর্নার, মুজিব কর্নার, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদ্যাপন সহ দেয়ালিকা প্রকাশ, ছাদ বাগানসহ নানান পরিকল্পিত উন্নয়ন ঘটাতে সচেষ্ট ও সক্ষম হয়েছেন।

নিয়মিত পাঠদানের বাহিরেও পিছিয়ে পড়া শিশুদের বিদ্যালয় সময়ের পরে ২ ঘন্টা সম্পূর্ণ বিনামুল্যে নিজে পাঠদান করে থাকেন। প্রতিদিন ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করে মাল্টিমিডিয়ায় পাঠদান করেন। করোনাকালে প্রতিদিন গুগল মিটে শিক্ষার্থীদের ৩৫২ টি ক্লাস নিয়েছেন। তিনি নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সংলাপ টিভিতে বিভিন্ন শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নিয়েছেন।

 

ছাত্র ছাত্রী দের সাপ্তাহিক, মাসিক পরিক্ষা নিয়ে মেধা যাচাই সহ শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও শৃংখল রাখার লক্ষে প্রতিদিন শরীর চর্চা, মিড ডে মিল, হাত ধোওয়া, পরিস্কার পরিছন্নতা প্রতিটি কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর ভালোবাসায় ডুবন্ত ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা নিযমিত স্কুলে আসছে বলে অভিভাবকরা জানান। সাপ্তাহিক বিতর্ক ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন, কাবিং কার্যক্রম, গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞান মেলা, English Language Club ইত্যাদি কার্যক্রম অব্যাহত রেখে পড়ালেখার মানোন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছেন।
স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদর খোজ নিযে তাদের সংবর্ধনা জানানো, অভিভাবক সমাবেশ করে অভিভাবকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অভিভাবক, শ্রেষ্ঠ মায়েদের,ও মেধাবী বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তিনি পুরস্কৃত করে এক অভিন্ন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

তিনি ১৯৯৬, ২০০৭, ২০০৯, ২০১৫ সাল সহ ইতিপূর্বে চার বার নোয়াখালী জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এবং সরকারি ভাবে স্টাডি ট্যুরে থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন।

তাঁর প্রাক্তন বহু শিক্ষার্থী দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। সব মিলিয়ে একজন দক্ষ, পরিশ্রমী মানুষ গড়ার কারিগর মহব্বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল রানী রায়।

 

প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্কুল ম্যানেজিং কমিটি এবং তার সাথে প্রতিদিন কাজ করা শিক্ষক মহল তাকে নিযে গর্ব করে। তারা মনে করেন তিনি গোটা জাতীয় শিক্ষক সমাজের অলংকার ও গৌরবের এক অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক, যিনি নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত শিক্ষায় আলোকিত করতে চান।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30