Sharing is caring!
আবু ছালেক ( বুলবুল মুন্সী):
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আশুরাঃ আশুরা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। ইসলামি পরিভাষায় মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। সৃষ্টির শুরু থেকে মহররমের ১০ তারিখ, তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।আল্লাহ তাআলা এদিন আসমান, পাহাড়-সমুদ্র এবং লওহে মাহফুজ ও কলম সৃষ্টি করেছেন। হযরত আদম আলাইহিস সালামও এদিনই সৃষ্টি হয়েছে। এ দিনই আদমকে জান্নাতে প্রেরণ করা হয়েছে। হযরত ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ আলাইহিস সালাম এদিন জন্মগ্রহণ করেছেন। ফেরাউন সদলবলে এদিনই সাগরে নিমজ্জিত হয়। হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম এ দিনই রোগজনিত মুসিবত হতে মুক্তি লাভ করেন। ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম হয় এবং এদিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে ইত্যাদি। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নির্মম ও হৃদয় বিদারক ঘটনা কারবালার ময়দানে সংঘটিত হয়েছিলো এ দিনই। ৬১ হিজরি সনের ১০ মুহাররম ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালার ময়দানে ক্ষমতালোভী, পাপিষ্ট, দুশ্চরিত্র ইয়াযিদের নির্দয় সেনাবাহিনীর হাতে দোজাহানের কান্ডারী রাহমাতুলি্লল আলামীন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু’র নয়নের তারা খাতুনে জান্নাত ফাতেমা (রাঃ)- এর কলিজার টুকরা, বেহেশতে যুবকদের সর্দার ইমাম হোসাইন (রাঃ) শহীদ হন। তাঁর পরিবারের সদস্য ও আহলে বাইতের শুভাকাঙ্খীসহ ৭২ জন শাহাদাত বরণ করেছেন।আর এই কারবালার পরই ইসলাম পুনর্জীবিত হলো।
তাই আশুরা দিনটি অধিক মর্যাদাবান।ইসলামে আশুরার রোযার বিশেষ গুরুত্ব আছে। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। অতঃপর যখন রমযানের রোযা ফরয হল আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়। তবে নফল রোজার মধ্যে আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত পূর্ণ। রাসুল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আশুরার রোজার ফজিলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন এ রোজা বিগত বছরের গুনাহ মুছে দেয়।
আশুরা উপলক্ষে দুই দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। রাসুল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমান তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখ এবং উহাতে ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ কর। (তাহারা শুধু আশুরার দিন রোজা রাখে) অতএব তোমরা ১০ তারিখের পূর্বে বা পরে একদিন বাড়িয়ে রোজা রাখ।
রাসুল (দঃ) ফরমান যে ব্যক্তি আশুরার দিনে পরিবার-পরিজনের জন্য মুক্ত হস্তে ব্যয় করিবে, আল্লাহ তায়ালা তাহাকে সারা বছরের স্বচ্ছলতা দান করিবেন।
তাই আশুরার দিনে প্রত্যেক জামাতি ও মহব্বতী গণের বাড়িতে কোরআন শরীফ খতম, দরুদ শরীফ, কালেমায়ে তাইয়্যেবা সোয়ালাখ খতম, জিকির-আযকার, মিলাদ কিয়াম, মাজার জিয়ারত, নফল নামাজ, নফল রোজা, দান-খয়রাত,তাবারুক বিতরণ বেশি বেশি আদায় হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে আশুরার ফজিলত, মহরম মাসের ফজিলত হাসিল করার তৌফিক দান করুক আমিন।