নির্বাচনী সহিংসতায় বৈধ অস্ত্র কী অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, নাকি অবৈধ অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে সে ব্যাপারে পুলিশ অন্ধকারে। কারণ নির্বাচন কমিশন কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো বৈধ অস্ত্র জমা অথবা আগ্নেয়াস্ত্র বহনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেনি।
ফলে ধামরাই উপজেলায় ৭৭টি বৈধ অস্ত্রের মধ্যে পিস্তল, রিভলবার, শর্টগান, এক ও দো-নলা বন্দুকের মধ্যে ৩৭টি বৈধ লাইসেন্সধারী ব্যক্তিদের হাতেই রয়েছে। এতে নির্বাচনে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
গতকাল বুধবার রাতে সোমভাগ ইউনিয়নের কাইটামারা (বানেশ্বর পশ্চিমপাড়া) এলাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজাহার আলীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী আউলাদ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে উভয়পক্ষের মধ্যে আউলাদ হোসেন, তার ছোট ভাই কামরুজ্জামান বাবু, জামান, সাইফুল ইসলাম, কবির হোসেন সুরুজ, আলমগীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, খোরশেদ আলী, এমদাদ, কাউসারসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় বিদ্রোহী প্রার্থী আউলাদ হোসেন পিস্তল উঁচিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন বলে আজাহার আলীর সমর্থক কবিরসহ অনেকে অভিযোগ করেন। তবে অস্ত্রটি বৈধ না অবৈধ তা তারা জানেন না।
এদিকে থানা সূত্রে জানা গেছে, আউলাদ হোসেনের নামে একটি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। এসব ঘটনায় আজাহার আলীর পক্ষ থেকে ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজাহার আলী বলেন, নৌকার জনপ্রিয়তায় ঈর্শান্বিত হয়ে আউলাদ হোসেনের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই সে আমার সমর্থকদের বিভিন্নভাবে অস্ত্রের ভয় দেখাচ্ছে। তবে আউলাদ হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আজাহার আলীর সমর্থকরা আমার ও আমার সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকজনকে রক্তাক্ত জখম করেছে।
এদিকে বালিয়া ইউনিয়নে বালিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মধুর ব্যবহৃত গাড়ি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুজিবুর রহমানের সমর্থকরা ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় পাঁচজন আহত হন। এছাড়া একই ইউনিয়নের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগের নুরে আলম সিদ্দিকী নান্নুর সমর্থক নৌকা প্রতীকের মুজিবুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শরিফুল, রাজিব, ভাসানীসহ পাঁচজন আহত হন। আমতা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল ইসলাম খান লাবু ও নৌকা প্রতীকের আরিফ হোসেনের সমর্থকদের হুমকি প্রদর্শন ও মারধরের ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন অফিসারের নিকট অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মনিরুল ইসলাম খান লাবু।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আয়শা আক্তার বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নে সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ছোটখাটো নির্বাচনী আচরণ ভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনির হোসাইন খান জাতীয় সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকা কে বলেন, বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে এখনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুর রহমান বলেন, বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার নির্দেশ পাওয়া যায়নি। তবে বৈধ হোক আর অবৈধ হোক, যেকোনো অস্ত্র প্রতিপক্ষের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। বিভিন্ন ইউনিয়নে সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে। পুলিশি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।