১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সরকারি কর্মচারীরা জনগণকে সেবা দিতে বাধ্য

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৬, ২০২১
সরকারি কর্মচারীরা জনগণকে সেবা দিতে বাধ্য

সরকারি কর্মচারীরা জনগণকে সেবা দিতে বাধ্য

নাসরিন আক্তার রুপা ঢাকাঃ সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা সবসময় জনগণের সেবা করতে বাধ্য।

বুধবার (০৬ অক্টোবর) আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ২১ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা সার্বক্ষণিকভাবে জনগণকে সেবা দিতে বাধ্য। আমি আশা করি, আপনারা এ সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করবেন।

“আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে দেয় এ গরিব কৃষক! আপনার মাইনে দেয় ওই গরিব শ্রমিক। আপনার সংসার চলে ওই টাকায়। আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন। ওরাই মালিক।” ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বক্তব্য উদ্ধৃত করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দেশের মালিক জনগণ। আমাদের সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদেও এই কথাটা বলা আছে। কাজেই সেই শিক্ষাটাই তিনি (বঙ্গবন্ধু) দিতে চেয়েছিলেন এবং সেই বার্তাটাই পৌঁছাতে চেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমিও আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে—যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছি, নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নয়, জনগণের সেবক হিসেবে দেখি। আমি মনে করি, এই দায়িত্ব আমার জনগণের সেবা করার। আপনাদের কাছেও আমি এটা চাই—আপনারাও জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবেন।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, আপনাদের প্রতিদিনের দাপ্তরিক কার্যক্রমে উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিতে হবে। …নিজেদের নিবেদিত করবেন জনগণের সেবায়। নাগরিকসেবায় উদ্ভাবন, সেবাবান্ধব প্রশাসন গড়ে উঠুক, এটাই সবার কাম্য।

দেশের উন্নযন ত্বরান্বিত করতে মেধা কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, আপনারা আপনাদের প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান, মেধা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সম্মিলিতভাবে দেশের উন্নয়নকে আরো ত্বরান্বিত করবেন। মাঠ প্রশাসনে জনগণের সেবা করার যে অবারিত সুযোগ রয়েছে, তা কাজে লাগাবেন।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে আজকে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বয়ানের যুগে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমরা কিছুতেই পিছিয়ে থাকতে চাই না।

মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়, প্রশাসনের সেবা পায়
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইন ও প্রশাসনের কর্মচারীদের নিবেদিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন ও প্রশাসন কোর্স থেকে অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সময়োপযোগী উন্নয়ন প্রশাসন গড়ে তুলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আপনারা নিবেদিত থাকবেন, জনগণের পাশে থাকবেন। মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায় সেটা নিশ্চিত করবেন।

তিনি বলেন, বিচারের বাণী যেন কখনো নিভৃতে না কাঁদে, মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়, মানুষ যেন প্রশাসনের সেবাটা পায়।

বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে। কারণ, আমি তার ভুক্তভোগী। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর যারা খুনি তাদের বিচার যাতে না হয়, সে জন্য ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। বিচারের হাত থেকে তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আমরা যারা বাবা-মা হারিয়েছি, স্বজন হারিয়েছি, আমাদের অধিকার ছিল না মামলা করার বা বিচার চাইবার।

সরকারি কর্মচারীদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মচারীদের অন্যতম বড় প্রণোদনা হলো তাদের পদোন্নতি। ২০০৯ সাল হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে সব ব্যাচকে তাদের প্রাপ্য পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের তাদের উদ্যমী কার্যক্রমের স্বীকৃতি দিতে আমরা একাধিক পুরস্কারেরও ব্যবস্থা করেছি। জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে ‘জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা শুধু বাড়ানোই নয়, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ-নির্মাণ-ঋণ, গাড়ি কেনার জন্য ঋণ দেওয়া হচ্ছে এবং গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসিক আর্থিক সুবিধা দিচ্ছি। আবাসনের জন্যও উন্নত ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30