২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ,ভাতার টাকা যায় ভাতিজার পেটে

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৬, ২০২১
বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ,ভাতার টাকা যায় ভাতিজার পেটে
বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ,ভাতার টাকা যায় ভাতিজার পেটে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ২০ নম্বর কাইতলা ইউনিয়ন পরিষদের এক ইউপি সদস্যদের ভাতিজার বিরুদ্ধে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীর ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভিড় করে ভুক্তভোগীরা। এ সময় তারা ভাতার টাকা ফেরত পেতে এবং বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন।

তারা জানান, বিভিন্ন সময় সরকার থেকে দেওয়া প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ ভাতা পেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের ভাতা প্রপ্তিতে ব্যাঘাত ঘটতে থাকে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ বলা হয়, কাইতলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাছির মেম্বারের ভাতিজা মো. সাদ্দাম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে এবং নানা রকম কৌশলে তাদের সরলতার সুযোগে সিম ও পিন নম্বর সংগ্রহ করে তাদের টাকা না দিয়ে সে নিজেই আত্মসাৎ করছেন। বিষয়টি স্থানীয় জনতার হাতে ধরা খেলে তার চাচা বাছির মেম্বার ক্ষমতা দেখিয়ে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

 

প্রতিবন্ধী রুমা আক্তারের বাবা মোহাম্মদ রিপন মিয়া সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকা কে বলেন, প্রথমে প্রতিবন্ধী মেয়ের জন্য সরকার থেকে দেওয়া ২২০০ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পাই। পরবর্তীকালে টাকা না আসায় সাদ্দামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আমার কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে ভাতা কার্ড ঠিক করাতে নবীনগরে নিয়ে যান। তারপরেও ভাতা না আসায় ফের সাদ্দামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আবারও আমাকে নবীনগরে নিয়ে যান। পরে জানাই আমার ভাতা কার্ডে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এরপরেও কোনো ভাতা আসে নাই। আবারও সাদ্দামের সঙ্গে দেখা হলে তিনি আমাকে দিয়ে নতুন সিম কিনাই এবং এমআইএস করা হয়েছে বলে জানান। এরপরও ভাতার টাকা আর আসে নাই।

ছুফিয়া খাতুন নামে এক ৮০ বছরের বৃদ্ধা বাংলানিউজকে বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর মেয়ের আশ্রয়ে থাকি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়। প্রথমে টাকা পেলেও পরবর্তীকালে সাদ্দাম আমার বয়স্ক ভাতার কার্ড ও নাম্বার নিয়ে যায়। এরপর থেকে টাকা আর পাই না। আমি বৃদ্ধ মানুষ কিছু বুঝি না।

প্রতিবন্ধী সাইদুলের মা বলেন, আমার ছেলে প্রতিবন্ধী। পাশাপাশি অনেক শারীরিক সমস্যাও আছে। তাই আমি সাদ্দামকে বলছি একটা প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার জন্য সে আমার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে কার্ড দিলে প্রথমে দুই বার টাকা পেলেও পরে নগদ করায় টাকা সাদ্দামের নম্বরে চলে যায়। পরে সেখান থেকে ৫০০ টাকা করে কেটে রেখে বাকি টাকা আমাকে দেই। আমরা গরীব মানুষ এমনিতে চলতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে সরকার থেকে যে ভাতাটুকু পাই তা থেকেও আবার সাদ্দামকে উৎকোচ দিতে হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সাদ্দাম মিয়া সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকা কে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কারো ভাতার টাকা আত্মসাৎ করিনি।

অভিযোগের পর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. পারভেজ আহমেদ ঘটনার সত্যতা তদন্ত করে সরেজমিন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বলেন, আমরা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত কাজ শেষে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া হবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ২০ নম্বর কাউতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাটি সত্য। ভুক্তভোগীরা আমার কাছে এসেছিল। যেহেতু এটি সমাজ সেবার অধীনে। তাদের আমি সমাজ সেবার কার্যালয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইউএনও একরামুল সিদ্দিক মুঠো ফোনে সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকাকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। আমি তদন্তের জন্য সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30