Sharing is caring!
সবুজ পাহাড় আর উঁচু-নিচু টিলার সমাহার। নান্দনিকতায় বিস্তীর্ণ পাহাড় ও বনাঞ্চল পরিবেষ্টিত এক জেলা। আরও আছে হাওর, নদী, ছড়া, ঝরনা ও জলপ্রপাত। বলছি, দুটি পাতা একটি কুড়ির প্রাচুর্যে ভরপুর সমৃদ্ধ শস্য ভাণ্ডার মৌলভীবাজার জেলার কথা।
এর সীমান্তবর্তী উপজেলা কমলগঞ্জ। এই জনপদ বহু ভাষাভাষী, বর্ণ-গোত্র আর ধর্মাবলম্বীদের এক অপূর্ব সূতিকাগার। প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় সিক্ত এই এলাকার জনজীবনও তেমনই সৌহার্দ্যপূর্ণ ও মমতায় ভরপুর। বলা হয়ে থাকে কমলগঞ্জ প্রকৃতির এক জীবন্ত জাদুঘর।
কমলগঞ্জ যেন পুরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। পযর্টনে বিপুল সম্ভাবনার কমলগঞ্জ। এ উপজেলার অনেক স্থানে অনাদরে অবহেলায় ছড়িয়ে আছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তাই হাঁটতে হাঁটতে এসব দৃশ্যেরই দেখা পাবেন যদি যান মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে।
এছাড়াও এ এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ‘পদ্মছড়া লেক’। কমলগঞ্জের অপরূপা ন্যাশনল টি কোম্পানির (এনটিসি) এই লেকটি এখন বিনোদনের অন্যতম এক স্থান।
বছরের যে কোনো সময়ে এই লেকে আনন্দ ভ্রমণ, পিকনিক বা বেড়ানোর জন্য বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজনদের নিয়ে আসতে পারেন। তবে এখনও দেশের অনেকের কাছেই অচেনা-অজানা এই পদ্মছড়া লেকটি।
পাহাড়ের বুকে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে মানুষের মাঝে প্রকৃতির সৌন্দর্য বিলিয়ে যাচ্ছে এটি। এখানে এলে দেখতে পাবেন সবুজের সমারোহ, নাকে এসে লুটোপুটি খাবে সবুজ পাতার গন্ধ। পলকেই আপনার মনকে চাঙা করে তুলবে সেখানকার প্রকৃতি। আপনি বিমোহিত হয়ে মিলিয়ে যাবেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে।
লেকের পানি, সুনীল আকাশ আর গাঢ় সবুজ পাহাড়, ছবির মতো চা বাগানের এই মনোরম দৃশ্য আপনাকে নিয়ে যাবে স্বপ্নের জগতে। চারদিকে পাহাড়-টিলার মাঝখানে অবস্থিত লেকটি সত্যি অপূর্ব। প্রতিদিনই পর্যটকরা ভিড় জমায় পদ্মছড়া লেকের সৌন্দর্য দেখতে।
তবে কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ পর্যটনের জায়গাটির দিকে নজর দেয়নি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লেকটিকে আকর্ষণীয়ভাবে সংস্কার ও পর্যটকদের জন্য আরও উপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব।
এদিকে পদ্মছড়া লেককে দৃষ্টিনন্দন করার লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও বাগান স্টাফদের উদ্যোগে কৃষ্ণচূড়া, বনজ ও ফলজ গাছের শতাধিক চারা রোপণ করা হয়েছে। চারা রোপণ কার্যক্রমে পদ্মছড়া চা-বাগানের প্রায় ৫০ জন চা শ্রমিক সহযোগিতা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিক রুহুল ইসলাম হৃদয় ও আহাদ মিয়া বলেন, ‘আসলেই সৌন্দর্যের ভান্ডার নিয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে এই লেকটি। চারদিকে সবুজের সমারোহ সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ।
তারা আরও বলেন, ‘প্রথম কেউ এখানে আসলে আর পরে আসতে না করবে না। এটি আসলেই দৃষ্টিনন্দন একটি লেক। শুধু বৈদেশিক আয়ই নয়, কমলগঞ্জেরও খ্যাতি বাড়বে।’
মাধবপুর চা বাগানের স্টাফ মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল বলেন,‘দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে মাধবপুর লেক। তার সঙ্গে কমলগঞ্জে মনোরম পরিবেশে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নিয়ে পদ্মছড়া লেক একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’
মাধবপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোতাহের আলী বলেন, ‘পদ্মছড়া চা-বাগানের লেকে অনেক পর্যটক আসছেন। তাই লেকটিকে আরো দৃষ্টিনন্দন করার লক্ষ্যে আমরা বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।’
‘পাশাপাশি পর্যটকদের বাইক বা গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও করেছি। এ বছর আমরা লেকের রাস্তার দু’পাশে প্রায় শতাধিক বৃক্ষ রোপণ করেছি। গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখতে স্থানীয়দের সহযোগিতা চাই’, বলে জানান তিনি।