২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

করোনায় সুন্দরগঞ্জে বন্ধ রয়েছে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, শিল্পীদের মানবেতর জীবনযাপন

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ৯, ২০২১
করোনায় সুন্দরগঞ্জে বন্ধ রয়েছে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, শিল্পীদের মানবেতর জীবনযাপন

করোনায় সুন্দরগঞ্জে বন্ধ রয়েছে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, শিল্পীদের মানবেতর জীবনযাপন

মো: আ: রহমান শিপন, রংপুর বিভাগীয় ব‍্যুরো প্রধান

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গভীর সংকটে নিমজ্জিত সাংস্কৃতিক অঙ্গন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছে সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। মঞ্চে আলো জ্বলছে না। মঞ্চে নেই নাটকের দৃশ্য, নৃত্যশিল্পীর নূপুরের নিক্কন অথবা বাচিক শিল্পীদের কণ্ঠের মধুরতা। ধারায় বসন্ত এলেও কোকিলের ডাক উপেক্ষা করেই সবকিছু যেন নিশ্চুপ। নেই কোথাও কোনো পদধ্বনি।মঞ্চকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানকে যাঁরা পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, তাঁরা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ কেউ পেশা টিকিয়ে রাখতে না পেরে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেকেই সাংস্কৃতিকে ভালোবেসে এখন স্বস্থানেই আছেন। তারা চাইছেন শুধু স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের সহযোগীতা। তাদের চাই শুধু বেচে থাকার অনুপ্রেরণা। সাংস্কৃতিক কর্মীরা চায় দেশের সংকটময় সময়ে গানের ভাষায় জনসচেতনতা মূলক কথা মেসেজ হিসাবে পৌঁছে দিতে। তারাও চায় জনগণের পাশে দাঁড়াতে। এ বিষয়ে একাধিক সাংস্কৃতিক কর্মীর সাথে কথা হলে তাহারা জানান, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ আছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সকল শিল্পচর্চা। এরমধ্যে শিল্পীরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে তাদের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রবীণ শিল্পীরা এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও তরুণরা মোটামুটি তাদের সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু এতে পূর্ণ তৃপ্তি পাচ্ছে না নবীন-প্রবীণ দুই শ্রেণীর সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তবে করোনাকালীন সময়ে অনলাইনের এ চর্চা অন্তত সাংস্কৃতিক শিল্পীদের মনের খোরাক যোগাতে পারছে, এমনই মনে করছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক কর্মীগণ।
এদিকে সাংস্কৃতিক কর্মী শাহাবুল ইসলাম জানান যেকোন সাংস্কৃতিক চর্চাই নির্ভর করে দর্শকের উপর। দর্শক আর মঞ্চ একই সুতায় গাঁথা। তবে এমন অপ্রাপ্তির মাঝে কিছুটা প্রাপ্তি হচ্ছে দেশের মাটিতে বসে অনলাইনের বদৌলতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা। এখানে বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ঘর বন্দি অবস্থায় অনলাইনভিত্তিক কিছু অনুষ্ঠানে শিল্পীরা অংশগ্রহণ করলেও সেখানে নেই কোনো আয়। তাই আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছে সুন্দরগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। করোনাকালীন কেমন কাটছে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের দিনকাল।
সাংস্কৃতিক কর্মীরা আরো জানান, দীর্ঘ দিন থেকে আমরা কোন অনুষ্ঠান গান বাজনা করতে পারছিনা। পারছি না অর্থ উপার্জন করতে। চলে না ঠিক ঠাক সংসার। বড়ই কষ্টে করতেছি আমরা দিনাতিপাত।তারা বলেন জীবনের এদুঃসময়ে যদি সরকার কোনভাবে আমাদের সহযোগীতা করতো তাহলে হয়তো আমরা আমাদের পেশা ও পরিবার দুটি ঠিক রাখতে পারতাম।সাংস্কৃতিক কর্মীরা স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা প্রশাসন সহ সরকার প্রধানের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে যায় থিয়েটার হল ও মঞ্চের অনুষ্ঠান। ফলে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সংস্কৃতিচর্চা ও বিনোদনের সব কার্যক্রম। কোথাও কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30