Sharing is caring!
জাফলংয়ে বন রক্ষার বদলে বন উজার করে ডাম্পিং ইয়ার্ড ও পাথর উত্তোলণে সহয়তা করছে বিট কর্মকর্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নেরশান্তিনগর, সুনাটিলা, মোহাম্মদপুর, হমতপুর কানাইজুরী ,তামাবিল,এলাকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষার বদলে রাতের আধারে বনের গাছে কেটে পাথর রাখার ড্রাম্পিং ইয়ার্ড ও বন ভুমি উজার করে টিলা কেটে পাথর উত্তোলণে সহয়তা করছে এমন অভিযোগ রয়েছে সারী রেন্জের জাফলং বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম’র বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা জানান,বিট কর্মকর্তার যোগসাজসে দীর্ঘদিন থেকে এমন কর্মকান্ড চলে আসছে, সংরক্ষিত বনবিট এলাকায় কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণের নিয়ম না থাকলেও জাফলংয়ে বিট কর্মকর্তার বানানো নিয়মেই চলে। সংরক্ষিত বনবিট এলাকায় প্রতিটি স্থাপনা / বাড়ী থেকে নিয়মিত মাসোহারা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। কেউ প্রতিবাদ কিংবা মাসোহারা না দিলে তাকে বন আইনে মিথ্যা মামলার আসামী করা হয়। লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে হামলা করে পরের দিন হয়তো হামলার শিকার অসহায় পরিবার গাছ কাটার কিংবা সন্ত্রাসী মামলায় চৌদ্দ শিকের ভিতর থাকতে হয়। বিট কর্মকর্তার ভয়ে কেউ মুখ খোলতে সাহষ পায় না। বন বিভাগের দায়েরকৃত ২৬/৩০টি মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অনেকেই। অবৈধ ভাবে পাথর ড্রাম্পিং ও গাছ পাচার এবং টিলা কেটে পাথর উত্তোলণ করে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন বিট কর্মকর্তা। সম্প্রতি সময়ে রাতের আধারে টিলা কেটে পাথর উত্তোলণ করে রহমতপুর নেসারিয়া শাহী জামে মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে অসংখ্যক ট্রলি ভর্তি পাথর নিয়ে যাওয়ার শব্দে মসুল্লীদের নামাজে সমস্যা হয়, বিষয়টি বিট কর্মকর্তাকে জানালে বিট কর্মকর্তা পর দিন মসজিদটি সরকারী জায়গা হতে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়,মসজিদ না সরালে বুলডেজার দিয়ে ভেঙ্গে ফেলার হুমকিসহ এলাকার মামুষকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের মামলা হামলার ভয় দেখানো হয়। অবশেষে নিরুপায় হয়ে রহমতপুর নেসারিয়া শাহী জামে মসজিদ রক্ষায় স্মারকলিপি দিয়েছে মসজিদ পরিচালনা কমিটি।
গত ৬ জুন রবিবার সকাল রহমতপুর নেসারিয়া শাহী জামে মসজিদ রক্ষায় গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অফিসার ইনচার্জ গোয়াইনঘাট থানা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান’র কাছে স্মারকলিপি দেন এলাকাবাসী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটি।
এলাকাবাসী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষে মোঃ তোতা মিয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন ১৯৮৮ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার রহমতপুর এলাকায় বসতবাড়ি স্থাপন করে প্রায় ৩৩ বছর থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে।
রহমতপুর গ্রামে বসবাসরত শতভাগই মুসলমান। এরই প্রেক্ষিতে নিজেদের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষা এমনকি নিজেদের ইবাদত বন্দেগী করার জন্য গ্রামবাসী মিলে ২০০৩ সনে রহমতপুর নেসারিয়া শাহী জামে মসজিদ গড়ে তুলে।
এতদিন যাবৎ রহমতপুর গ্রামবাসী উক্ত এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে বসবাস করে আসলেও সম্প্রতি সময়ে জাফলং বনবিট কর্মকর্তা রহমতপুর গ্রামের একমাত্র মসজিদটি ভাঙ্গার জন্য মসজিদ পরিচালনা কমিটিসহ এলাকাবাসীকে নানা হুমকি ধামকি ও মামলার ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে।
রহমতপুর গ্রামের একমাত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রহমতপুর নেসারিয়া শাহী জামে মসজিদ রক্ষায় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন এলাকাবাসী। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। জাফলংয়ের সংরক্ষিত বনান্চল থেকে অবৈধ ভাবে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি দমন কমিশন ও এনবিআর এর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন জাফলংবাসী। জাফলংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে কার্যকারী পদক্ষেপ নিবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।