২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেটে অবৈধ সিএনজি’র টোকনের বরকতে মাত্র ৭ বছরে কোটিপতি নুরুল !

অভিযোগ
প্রকাশিত এপ্রিল ২৪, ২০২১
সিলেটে অবৈধ সিএনজি’র টোকনের বরকতে মাত্র ৭ বছরে কোটিপতি নুরুল !

“সিলেটে অবৈধ সিএনজি’র টোকনের বরকতে মাত্র ৭ বছরে কোটিপতি নুরুল !”

 

 

স্টাফ রিপোর্টার :- সিলেটে কড়া লকডাউনের মধ্যে বন্ধ হয়নি শীর্ষ চাঁদাবাজ নুরুলের টোকেন বাণিজ্য। লকডাউন ও সকল নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট সড়কে প্রায় তিন হাজার অবৈধ রেজিস্ট্রেশন বিহীন (নম্বরবিহীন) সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নুরুলের বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে দেদারছে চলাচল করছে।

চাঁদাবাজ টোকেন নুরুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিউজ করায় সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন মান্নাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয় চাঁদাবাজ টোকেন নুরুল। পরে জনৈক সাংবাদিক নিজের নিরাপত্তা চেয়ে অদ্য ২০ এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখে শাহপরাণ (রহঃ) থানায় সাধারণ ডায়রী করেন। যাহার ডায়রী নং ৯৪৫।

সাধারণ ডায়রী সুত্রে জানা গেছে, চলমান কঠোর লকডাউনের সোমবার গত (১৯ এপ্রিল) বটেশ্বর সদর শেষ সীমান্তে সিএনজি চালিত অটোরিক্সাসহ সকল ধরণের যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন এসএমপির ট্রাফিক পুলিশ।

তখন জৈন্তাপুর থানার বালিপাড়া গ্রামের আব্দুল মনাফ উরফে গাছ মনাফের ছেলে তামাবিল মহাসড়কের টোকেন বানিজ্যর মূল হোতা নুরুল হকের টোকেনে চালিত কয়েকটি নম্বরবিহীন সিএনজি আটক করা হয়। অভিযান চলাকালীন সময়ে মোঃ রায়হান হোসেন মান্না ও সুরমা মেইল এবং দৈনিক পৃথিবীর কথা পত্রিকার সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহের জন্য দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টদের সাথে আলাপ করেন। ওই সময়ে আটককৃত নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ি গুলো ছাড়িয়ে নিতে বর্ণিত স্থানে উপস্থিত হয় টোকেন নুরুল। এক পর্যায়ে টোকেন নুরুল সাংবাদিকদের কর্তব্য কাজে বাঁধা প্রধান করে।

এমনকি ডিউটিরত পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের সামনে আমাকে মারার জন্য ধাওয়া করে এর পর ডিউটিরত পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের একান্ত সহযোগিতায় সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন মান্না টোকেন নুরুল হকের হাত থেকে রক্ষা পান। ক্ষিপ্ত টোকেন নুরুল সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন মান্নাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি প্রধান করে শাসিয়ে যায়। যাহার ভিডিও ডকুমেন্টস সাংবাদিকদের কাছে সংগ্রহকৃত আছে।

ডায়রী সুত্রে আরো জানা গেছে, যে বিগত দিনে সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন মান্না এই টোকেন সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে স্থানীয় দৈনিক ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় একাধিক নিউজ প্রকাশ করে থাকেন। সেই সময় থেকে নিউজ প্রকাশের জের-ধরে উনাকে বিগত দিনে এরকম প্রাণে মারার হুমকি-ধামকি প্রধান করিলে বিগত ০১/১১/২০২০ ইং তারিখে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে ওই টোকেন চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

টোকেন নুরুল হকের এহেন হুমকিতে উনার পরিবার সহ উনার ক্ষতিসহ প্রাণনাশের আশাঙ্খা রয়েছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, টোকেন নুরুলের বাবা জীবিকা নির্বাহ করতেন সিলেটের পুরাতন ব্রিজের নিচ থেকে শিকর মাটি কিনে এনে তার নিজ গ্রাম ও আশ-পাশের গ্রামের বাড়িতে হেটে প্রতিদিন শিকর মাটি বিক্রি করে। আর উনার পুত্র এই সেই নুরুল আজ থেকে ৭ বছর আগে হরিপুরে পলিথিন বেগ নিয়ে মাছ বাজারে দাড়িয়ে থাকতো কেউ মাছ বিক্রি করলেই দৌড়ে গিয়ে পলিথিনের বেগ দিতো ক্রেতাকে মাছ নেয়ার জন্য। বিভিন্ন বাজারে বাজারে সে বেশি সময় কাটাতো ও নিজ এলাকার বাজার হরিপুর বাজারে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়িতে অবৈধ টোকেন বিক্রি করে বনে গেছে রাতারাতি কোটিপতি। তাকে একসময় সমাজের মানুষ দূর-দূর করতেন আজ তাকে নিয়ে পার্সোনাল আড্ডা দেন অনেক ভূঁইফোড় নেতারা। অনেকে আবার টোকেন বানিজ্য করে আয়কৃত টাকার ভাগের কারনে থাকে শেল্টারও দিয়ে থাকেন বলে উঠে এসেছে।

সিলেটের জৈন্তাপুরে চলছে সিএনজি-অটোরিকশায় টোকেন বাণিজ্য। বৈধ-অবৈধ সিএনজি-অটোরিকশায় টোকেন বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা আদায় করছে সিএনজি চালক সমিতি নামে ভুঁইফোঁড় সংগঠনের নেতা টোকেন নুরুল। ফলে প্রতি বছর রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলার প্রশাসনের গাফিলতির কারণে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ যান চলাচল। বন্ধ হচ্ছে না সড়ক দূঘর্টনা ও লাশের মিছিল। শ্রমিক নেতারা টোকেনের টাকার একটি বড় অংশ পুলিশের পকেটে যাওয়ার দাবি করলেও পুলিশ এসব অস্বীকার করছে।

সিএনজি মালিকদের সুত্রে জানা গেছে,সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে জাফলং, তামাবিল, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর সহ বিভিন্ন উপজেলার লোকজন সিলেটে যাতায়াত করেন। কাগজপত্র ও ফিটনেস বিহীন সিএনজি-অটোরিকশা বর্তমানে মহাসড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিপাকে পড়েন মহাসড়কের পাশের এলাকার বাসিন্দারা। অবৈধ যানবাহন রোধে দায়িত্বরত প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তি, চাঁদাবাজ ও টুকেনবাজরা এ রোডে অবৈধ যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দিতে টোকেন চালু করেছে সিএনজি চালক শ্রমিক নামদারি জৈন্তাপুর উপজেলার ৫নং ফতেপুর (হরিপুর) ইউনিয়নের হরিপুর এলাকাধীন বালিপাড়া গ্রামের চাঁদাবাজ নূরুল হক (মেম্বার)। বিনিময়ে প্রতি মাসে অবৈধ যানবাহন থেকে কামাই করছেন লাখ-লাখ টাকা এবং তার সাথে এক শ্রেণির পুলিশের পকেটও ভারি হচ্ছে। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সরকার, চালক ও মালিকরা।

সরেজমিন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিলেট তামাবিল রোডে বৈধ যানবাহনের তিনগুন বেশি অবৈধ যানবাহন। যার সংখ্যা সাড়ে দুই হাজারেরও বেশি। এগুলোর মধ্যে সিএনজি অটোরিক্সার সংখ্যা প্রায় দেড় থেকে ৩ হাজার। বাদ বাকি অবৈধ লেগুনা ইমা, ও পিকাপ। এসব যানবাহনের মধ্যে অধিকাংশের রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত নেই, নেই চালকদের ড্রাইভিং লইসেন্সও। শুধুমাত্র ‘পরিচিতি টুকেনই’ এসব যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ও চালকদের মূল লাইসেন্স।

শ্রমিক ইউনিয়নের সুত্র মতে, সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জাফলং সহ ৩ উপজেলায় প্রায় সাড়ে দুই থেকে ৩হাজার সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার সিএনজি অটোরিকশা নিবন্ধনহীন। ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে মহাসড়কে সব ধরনের তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন সরকার।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30