১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

বান্দরবানের লামায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলেন উপজেলা প্রকৌশলী

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ৩১, ২০১৯
বান্দরবানের লামায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলেন উপজেলা প্রকৌশলী

 

উনুয়ই মার্মা রুহি, বান্দরবান প্রতিনিধি,

বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মাতামূহুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মান কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে । অনিয়নের বিষয় গুলো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এলাকাবাসী হাতেনাতে ধরে দিলে ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের লোকজন মারধরের চেষ্টাসহ মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়। পরে শতাধিক এলাকা বাসির হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত নির্মান কাজ বন্ধ কর দিলো এলজিইডির প্রকৌশলী। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ এলাকাবাসি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর নিকট গত সোমবার অভিযোগ করেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খালেকুজ্জামান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ ওসমান গনি সকলের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের বলেন,
মাতামূহুরী সরকারারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনটি ঝুকি পূর্ণ হয়ে পড়লে চলতি বছরের জুন মাসের শেষের দিকে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর(এলজিইডি) থেকে ৯৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ শুরু করেন। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ শুরু থেকে লামা এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ জাকের হোসেনের সহায়তায় ঠিকাদার আজিজুর রহমান ভবনের বেইচ ঢালায়, সর্ট কলাম ঢালায়, গ্রেড বিম ঢালায় কাজে অনিয়ম করেছে। এসব কাজে নিম্ম মানের সামগ্রীসহ রড কম দেওয়া এবং এক বস্তা সিমেন্টে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৩ ফুট ৯ইঞ্চি ইটের কংকর পরিমান তিন টুকরি ও ১ ফুট দশ ইঞ্চি বালু দিয়ে(দুই টুকরি) মিশ্রণ করে ঢালাই দেওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে ঢালাই দেওয়া হয়েছে এক বস্তা সিমেন্টের সঙ্গে ৭ টুকরি কংকর ও ৪ টুকরি বালু। এ কারনে ভবনেটির ফাউন্ডেশন ঢালাইয়ের গ্রেডবিম, সর্ট কলাম ও বেইস ঢালায় অংশে সামান্য কিছু দিয়ে বাড়ি দিলে ভেঙ্গে যাচ্ছে।

লামা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার আটশত ছয় টাকা ব্যয়ে লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মাতামূহুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মান কাজ চলছে। নতুন ভবনটি ৯৮ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩১ ফুট প্রস্ত। ছয় কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মান হচ্ছে। নির্মানধিন ভবনটি মেসার্স নাহার এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করছেন। ভবনের এ পর্যন্ত ৩৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে লামা এলজিইডির সার্ভেয়ার জাকের হোসেনর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানে আমরা সার্বক্ষনিক উপস্থিত ছিলাম। ঢালাই কাজে প্রধান শিক্ষক ও এলাকাবাসির অভিযোগ অযাচিত।

বিষয়টি নিয়ে নির্মাধিন ভবনের ঠিকাদার মোঃ আজিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ভবনের কাজ করছি। আরো অন্যান্য কাজ থাকায় সব সময় কাজে গোড়ায় থাকতে পারিনা। তবে, আমার ছোট ভাই প্রধার মেস্তেরী হিসাবে সকল কাজ সারছেন। কাজে অনিয়ম হলে এলজিইডির লোকজন তা দেখতো। এলাকা বাসির অভিযোগে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার সোমবার ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ববিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে শিকার করেন।

এদিকে লামা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নাজিম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ শুনে ভবন নির্মান আপাতত বন্ধ করে দিয়েছি। তবে এ রকম উন্নয়ন কাজে সামান্য নয় ছয় হয়। সব গুলো দোষ ধরলে ঠিকাদাররা কাজ করবে কি করে। এ সব অভিযোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেকুজ্জামান সৃষ্টি করছে বলে তিনি জানান।

বিষয়টি নিয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে জান্নাত রুমি কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছি।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031