১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মনিরামপুর পৌর এলাকার জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে প্লাষ্টিক করাখানা

অভিযোগ
প্রকাশিত এপ্রিল ১৮, ২০২১
মনিরামপুর পৌর এলাকার জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে প্লাষ্টিক করাখানা

মনিরামপুর পৌর এলাকার জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে প্লাষ্টিক করাখানা, দুষিত হচ্ছে পরিবেশ, বৃদ্ধি পাচ্ছে নানাবিধ রোগ

 

নূরুল হক, মণিরামপুর থেকেঃ-
মনিরামপুর পৌর এলাকার মহাদেবপুর গ্রামে জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে একটি অবৈধ প্লাষ্টিক কারখানা। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ, জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র। তার ওপর রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে যত্রতত্রভাবে রাখা হয়েছে প্লাষ্টিকের স্তুপ। ফলে দূর্গন্ধে পরিবেশ হচ্ছে দুষিত।

এলাকায় নানাবিধ রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন রয়েছে স¤পূর্ন নির্বিকার।

সরেজমিনে দেখাযায়, পৌরশহরের মহাদেবপুর বটতলার পাশে গড়ে উঠেছে বিশ্বাস প্লাষ্টিক নামের কারখানাটি। রাস্তার পাশে ৫/৬ বিঘা জমির উপর মূলত: কারখানাটি নির্মান করা হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসে। কারখানাটিতে মূলত: প্লাষ্টিকের পুরাতন বোতল এবং বিভিন্ন পন্যসামগ্রি(প্লাষ্টিক ) মেশিনে মাড়াই করে তৈরী করা হয় প্লাষ্টিক কুচি। এসব কুচি এখান থেকে রপ্তানি করা হয় দেশের বিভিন্ন বাজারে। এখানে সব মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত: ২২/২৩ জন শ্রমিক কাজ করেন। কথা হয় প্রধান মিস্ত্রী শাহিনুর রহমানের সাথে।

তিনি জানান, বিভিন্ন ভাঙ্গাড়ীর দোকান থেকে তারা প্লাষ্টিকের পুরাতন বোতল ক্রয় করেন প্রতিকেজি ২০ টাকা দরে। অপরদিকে অন্যান্য প্লাষ্টিক সামগ্রি ক্রয় করেন ৩৫ টাকা কেজি দরে। তার পর এসব প্লাষ্টিক সামগ্রি তারা মেশিনের সাহায্যে পানি দিয়ে ওয়াশ করা হয়। পরে মাড়াই করে প্লাষ্টিকের কুচি মেশিনের মাধ্যমে শুকিয়ে বস্তাভর্তির পর রপ্তানি করা হয়। প্রতিদিন এ কারখানায় শতাধিক মন প্লাষ্টিক সামগ্রি ক্রয় করা হয়।

তবে কারখানাটি পরিবেশ বান্ধব নয়। কারখানার কোন বাউন্ডারী(প্রাচির) নেই। নেই কোন প্রধান গেট বা ফটক। রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে বড় বড় স্তুপ করে যত্রতত্রভাবে রাখা হয়েছে প্লাষ্টিক সামগ্রি। প্লাষ্টিক সামগ্রি যখন মেশিনের মাড়াই করা হয় তখন দূর্গন্ধে জনমানুষের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

এ কারখানার সামনে এবং আশপাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি বসত বাড়ি। স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোপাল মল্লিক জানান, প্লাষ্টিক সামগ্রি রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় রাখা এবং মাড়াইকরা প্লাষ্টিকের কুচির(টুকরো) দূর্গন্ধে রিতিমত পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। একই কথা জানান পাশ্ববর্তি বাড়ির মালিক কানাই মন্ডল।

তবে সরেজমিন খোজখবর নিয়ে জানাযায়, প্লাষ্টিক কারাখানা করা হলেও টানানো নেই কোন সাইনবোর্ড। আবার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র। এছাড়াও নেই জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্রসহ এনবিআরের(জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) ছাড়পত্র।

তবে এ ব্যাপারে কথা হয় বিশ্বাষ প্লাষ্টিক কারখানার ব্যবস্থাপক পরিচয়দানকারী রাকিব উদ্দিন জুয়েলের সাথে( মালিকের ছেলে)। তিনি জানান, পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের সনদ নিয়ে তারা কারখানাটি পরিচালনা করছেন।

বিশ্বাস প্লাষ্টিক কারখানার মালিক আবদুস সালাম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেও এখনও সনদপত্র পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুমন দাস জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়াই জনবসতি এলাকায় কিভাবে কারখানাটি পরিচালিত হচ্ছে তার বোধগম্য নয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, কোন অবস্থাতেই পরিবেশ দুষন করতে দেওয়া হবেনা। এ ব্যাপারে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30