Sharing is caring!
“সিলেটে শিল্পপতি বাবুলের মামলা নিয়ে তোলপাড়”
কামরুল ইসলাম লিমন, সিলেট থেকেঃ-
ছেলে মমিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন সিলেটের শিল্পপতি পিতা নজরুল ইসলাম বাবুল। অভিযোগ করেছেন- ছেলে মমিন তার কাছে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। কথামতো চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ও সিলভ্যালী ফ্ল্যাটে গিয়ে হামলা, গুলি চালিয়েছে। এদিকে নজরুল ইসলাম বাবুলের এই মামলা নিয়ে সিলেটে তোলপাড় চলছে।
নজরুল ইসলাম বাবুল ফিজা অ্যান্ড কোং (প্রা.) লি. ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সিলেট শহরে শিল্পপতি হিসেবে তিনি বহুল পরিচিত। মামলার আসামি আজহারুল ইসলাম মমিন হচ্ছে তার দ্বিতীয় ছেলে। লন্ডনে ছিলেন মমিন।
সম্প্রতি তিনি হঠাৎ করেই দেশে এসেছেন। সিলেটের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় পিতা-পুত্রের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ পায়। কোয়ারেন্টিন শেষ করে মমিন শাহী ঈদগাহস্থ ভ্যালী সিটি সোসাইটির বেদানা ভিলায় যাওয়ার পর থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়। মমিন ফিজা অ্যান্ড কোং-এর পরিচালকও। মামলার আরেক আসামি হচ্ছে মমিনের বন্ধু শাহজালাল উপ-শহরের মো. সামী। পুলিশ জানিয়েছে, গত ৮ই মার্চ কোতোয়ালি থানায় শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুল বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মামলার এজাহারে শিল্পপতি বাবুল জানান, মামলার প্রথম আসামি মমিন তার দ্বিতীয় ছেলে। সে সন্ত্রাসী, মাদকসেবন, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কারণে তার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়। বিগত কয়েক দিন ধরে মমিন তিনটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তার ক্রমাগত হুমকির মুখে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৭ই মার্চ আসামি সামী ও ১০-১২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে সে নগরীর মেন্দিবাগের ছাত্তার ম্যানশনের ফিজা অ্যান্ড কোং-এর শোরুমে হামলা চালায়।
এ সময় সেখানে ভাঙচুরও চালায়। এক পর্যায়ে দেশে তৈরি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনপূর্বক ক্যাশ বাক্সে রাখা ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একই দিন রাত ১১টার দিকে আজহারুল ইসলাম মমিন তার সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসী দলকে নিয়ে নগরীর তেলীহাওরস্থ সিলভ্যালী টাওয়ারে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
এ সময় তিনি ভয়ে বাসাতে ছিলেন বলে জানান নজরুল ইসলাম বাবুল। বাসা থেকে বের না হওয়ায় মমিন তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মমিন তার সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসী দলকে নিয়ে চলে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে পিতার দায়ের করা আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শেখ মিজানুর রহমান। তিনি গতকাল প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামি সামীর বাসায় অভিযান ও তল্লাশি চালালেও তাকে পায় নি। পুলিশ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
একই সঙ্গে মামলার তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি। পিতার মামলা দায়েরের পর অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছেন আজহারুল ইসলাম মমিন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। তবে অজ্ঞাত স্থান থেকে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার পিতা বাবুল তাকে ফোন করে সিলভ্যালী টাওয়ারে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর তিনি দেখেন রড হাতে কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়ে আছে। তিনি কাছে যেতেই তার পিতা বাবুল বন্দুক দিয়ে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েন।
এ সময় তাৎক্ষণিক তিনি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। পরে জানতে পারেন ছিনতাই মামলা করা হয়েছে। মমিন জানান, ‘আমি তাকে তিন রাউন্ড গুলি করছি। এই তথ্য একদম মিথ্যা। বরং পূর্বপরিকল্পনা করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাবা গুলি করেন। বাবার তালতলাস্থ সিলভ্যালী টাওয়ারের বাসা এবং পার্কিংয়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। ফুটেজ দেখলে সব সত্যতা জানবেন।’