৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

কমলগঞ্জে স্ত্রী মর্যাদার দাবিতে স্বামীর দরজায় স্ত্রীর অনশন

admin
প্রকাশিত জুলাই ২৮, ২০১৯
কমলগঞ্জে স্ত্রী মর্যাদার দাবিতে  স্বামীর দরজায় স্ত্রীর অনশন

Sharing is caring!

 

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ৬ নং আলীনগর ইউনিয়নের জালালিয়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। জানা যায় ওই গ্রামের মৃত্য মোবারক আলীর ছেলে দুবাই প্রবাসী ইয়াওর আলীর সাতে নরসিংদি জেলার খালার চর ইউনিয়নের মানারা কান্দি গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের মেয়ে রিমা আক্তার এর সাথে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়ে একই কোম্পানিতে দুজন কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে দেশে এসে। নরসিংদি জেলার কোর্টের কোর্ট ম্যারেজ
এর মাধ্যমে গত ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখে তাদের বিয়ে হয়। এবং মাস দেড়েক মেয়ের এলাকায় ছেলে একটি বাসা ভাড়া রেখে দুজন ঘর সংসারও করে আবার দুজন বিদেশ পাড়ি জমায়। এবং সেই থেকে মেয়ের সরলতার সুযোগে তার রুজি রোজগারের সমস্ত প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা তার কাছে রেখে স্ত্রীকে দেশে পাঠিয়ে দেয় স্বামী ইয়াওর আলী। এবং স্বামী তাকে বলে যে তুমি দেশে যাও পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়ে আমি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তোমাকে আমার বাড়িতে নিবো। স্ত্রী রিমা আক্তার স্বামীর এমন কথা শুনে সরল বিশ্বাসে দেশে আসার পরে বারবার চেষ্টা করেও আর স্বামীর সাথে মুঠোফোনে বা ইমু মারফতে যোগাযোগ করতে পারেননি যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে দেয় স্বামী ইয়াওর। স্ত্রী রিমা আক্তার কোম্পানির অন্যান্য লোক মারফত জানতে পারেন যে সে কিছুদিন আগে দেশে এসেছে। এ খবর পেয়ে কোর্ট ম্যারেজ কালীন সময়ে স্বামীর দেয়া এ এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মোবাইল ও স্বামীর পারিবারিক মোবাইলে এবং স্থানীয় মেম্বার হায়দার আলীর মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে মেয়ে মেম্বার সহ এলাকার লোক জন কে বিস্তারিত জানায়।
এবং সে। গত ২৬ জুলাই রোজ শুক্রবার দুপুর ২ টা থেকে এ এলাকায় এসে স্বামীর বাড়ির দরজায় স্ত্রীর পরিপূর্ণ মর্যাদা দেয়ার জন্য অনশন শুরু করে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এবং দফায় দফায় ছেলে পক্ষের সাথে মেয়ে পক্ষের এ এলাকায় অবস্থানকারী আত্মীয়-স্বজনের সাতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য গ্রাম্য মাতব্বররা সালিশ বৈঠক বসান। প্রভাবশালী ছেলে মেয়ে কে দেখামাত্র মেয়ের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে মেয়েকে লাঞ্চিত করার খবরও এলাকাবাসী সূত্রে পাওয়া যায়।এবং পরে ঘটনা বেগতিক দেখে ছেলে গত ৬ মাস আগে পাশের মথুরাপুর গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ করা দ্বিতীয় স্ত্রী কে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে এ এলাকায় কিছুদিন যাবত ছেলেধরা গুজব এবং দেওড়াছড়া চা বাগান এলাকায় একজন বৃদ্ধাকে পিটিয়ে নিহত করার ফলে প্রভাবশালী পরিবারটি গত কাল দুপুরের দিকে মেয়েটিকে এ বিষয় কে কাজে লাগিয়ে গণপিটুনি দিয়ে স্বামীর বাড়ির দরজা অবস্থান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে এমন খবর এলাকাবাসী সূত্রে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আসলে। স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী ওই বাড়িতে গেলে। মেয়েটি সেখান থেকে রক্ষা পায়। এবং গত রাত ৮ ঘটিকায় আবারো স্থানীয় মেম্বার হায়দার আলীর বাড়িতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য, মেয়েকে নিয়ে সালিশ বসে। মেয়ে কে প্রভাবশালী পরিবার তার বাবা-মা বা কোন ধরনের অভিভাবক এলাকার জনপ্রতিনিধি নিয়ে আসতে জানালে। সে তার বাবা মা অসুস্থ বলে জানায়। এবং শেষ পর্যায়ে মেয়ে কমলগঞ্জ থানার শরণাপন্ন হবে জানালে প্রভাবশালী পরিবারটি পুলিশি ভয়ে মেয়েটিকে আবারো তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। আজ দুপুর ১২ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মেয়েটি ওই বাড়িতেই অবস্থান করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মুঠোফোনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হায়দার আলী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি আমরা বিষয়টি মেয়ের সাথে থাকা কাগজপত্র দেখে বারবার সমাধান করার জন্য স্বামীর পরিবারকে অনুরোধ করলেও তাতে তারা কোন ধরনের কর্ণপাত করেনি।

স্বামীর পরিপূর্ণ মর্যাদা পাওয়ার দাবিতে অনশন কারী মেয়ে রিমা জানায়, পরিবারের শাশুড়ি সহ অন্যান্য লোকজন তাকে বাড়ি থেকে সরে যাবার জন্য হুমকি দিচ্ছে এতে করে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে। স্বামী ইয়াওর আলীর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোন ধরনের অভিযোগ কেউ করেনি অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে