১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আর কিছুক্ষণ পরেই ৭৪ তম জন্মতিথির হিরন্ময় মাহেন্দ্রক্ষণ স্পর্শ করবেন শেখ হাসিনাঃ ‘গাজীপুর জার্নাল’র ফুলেল শুভেচ্ছা

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
আর কিছুক্ষণ পরেই ৭৪ তম জন্মতিথির হিরন্ময় মাহেন্দ্রক্ষণ স্পর্শ করবেন শেখ হাসিনাঃ ‘গাজীপুর জার্নাল’র ফুলেল শুভেচ্ছা

আর কিছুক্ষণ পরেই ৭৪ তম জন্মতিথির হিরন্ময় মাহেন্দ্রক্ষণ স্পর্শ করবেন শেখ হাসিনাঃ ‘গাজীপুর জার্নাল’র ফুলেল শুভেচ্ছা

 

 

 

 

মো: ইয়াছিন শেখ,ঈশ্বরদী প্রতিনিধি :

আর এক ঘন্টা পরেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।যে হিরন্ময় মূহুর্তটিতে শুভ সূচনা ঘটবে গণতন্ত্রের মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৪ তম জন্মতিথির ফুলেল বারতা।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছার পাঁচ সন্তানের মধ্যে শেখ হাসিনা সবার বড়।

 

তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

 

১৫ আগস্টের সেই ভয়াল রাতের হত্যাযজ্ঞের সময় শেখ হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান এবং ১৯৮০ সালে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।

 

শেখ হাসিনা তাঁর অনুপস্থিতিতে ১৯৮১ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তখন তিনি নয়া দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

 

তাঁর ছয় বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসানের পর তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

 

শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর স্নাতক সম্পন্ন করেন। তিনি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক মহিলা কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদিকা ছিলেন।

 

ছাত্রজীবন থেকে শেখ হাসিনা সকল গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে শেখ তিনটি নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন।

 

তিনি ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দেন এবং সংবিধানের ৫১ এবং ৫৬ ধারা মোতাবেক শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক ফর্মুলা ঘোষণা করেন।

 

১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা দেশের পঞ্চম সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছিলেন। তিনি রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকারে পরিবর্তন করতে সংসদে সকল দলের নেতৃত্ব দেন।

 

অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য শেখ হাসিনা ১৯৯৪-১৯৯৬ সালে কঠোর আন্দোলন শুরু করেন।

 

তাঁর আন্দোলনের ফলে আমাদের সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংযোজিত হয়েছিল। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। নির্বাচনের পর ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেন।

 

১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা কৃষক এবং দুঃস্থ, ভূমিহীন এবং দারিদ্র্য-পীড়িত কৃষকদের কল্যাণে অনেক নব এবং বাস্তব কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দুস্থ এবং বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক লোকের জন্য শান্তিনিবাস স্থাপন, গৃহহীন মানুষদেরকে আশ্রয় দানের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন, একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠা।

 

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি ৫ বছর মেয়াদ সম্পন্নের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তার দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন যারা ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর ব্যাপক হত্যা, নির্যাতন এবং নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং শান্তির সপক্ষে একটি শক্তিশালী জনমত গড়ে তুলেছিলেন।

 

তিনি জীবনে কয়েকবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন। সবচেয়ে মারাত্মক ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট যখন ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তার জনসভায় এক ডজনেরও বেশি উচ্চ-প্রযুক্তির গ্রেনেড ছোড়া হয়েছিল। এই সুপরিকল্পিত হামলায় তার দলের ২২ জন নেতা-কর্মী মারা যান এবং ৫০০ এর অধিক নেতা-কর্মী আহত হন।

 

শেখ হাসিনা নিজেও ঐ হামলায় চোখে মারাত্মক আঘাত পান। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই মিথ্যা এবং কাল্পনিক অভিযোগে শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হন এবং জেলে যান। দেশে-বিদেশে প্রবল জনমতের মুখে প্রায় এক বছর পর ২০০৮ সালের ১১ জুলাই শেখ হাসিনাকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছিল।

 

১৯৯৬-২০০১ সালে তাঁর শাসনামলে তাঁর দূরদর্শী বৈদেশিক নীতি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে সফল অংশগ্রহণ বিদেশে আমাদের দেশের ইমেজ উজ্জ্বল করেছিল।

 

১৯৯৮ সালে পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে শান্তির দূত শেখ হাসিনা প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশ ভ্রমণ করেন এবং প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে বিস্ফোরোন্মুখ পরিস্থিতি শান্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এর ফলে বাংলাদেশের ইমেজ উজ্জ্বল হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাপক পরীক্ষা নিষেধাজ্ঞা চুক্তি (সিটিবিটি) স্বাক্ষর করে।

 

সামাজিক কর্মকাণ্ড, শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য অসাধারণ ভূমিকা রাখার জন্য শেখ হাসিনা সম্মানসূচক ডক্টর অব ল ডিগ্রিসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

 

১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্র“য়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান করে।

 

১৯৯৭ সালের ২৫ অক্টোবর যুক্তরাজ্যের আবের্টে বিশ্ববিদ্যালয়, ডান্ডি লিবারেল আর্টসে শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ফিলোসিফো ডিগ্রি প্রদান করে।

 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯৯ সালের ২৮ জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক দেশীকোত্তমা (ডক্টর অব লিটারেচার) ডিগ্রি প্রদান করেন।

 

শান্তি এবং গণতন্ত্রের জন্য অসাধারণ অবদানের জন্য অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ১৯৯৯ সালের ২০ অক্টোবর সম্মানসূচক ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান করেন।

 

গণতন্ত্র এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।

 

 

 

 

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30