আব্দুল করিম চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ঃ-
যখন বৃষ্টি হতো হা করে পান করতাম। কিন্তু মাছ আমার বাহুতে, ঘাড়ে কামড়াচ্ছিলো। দিন রাত কখনো ঘুমাইনি। বাবা, মা, ছেলে আর মেয়ের মুখটি ভেসে উঠছিল।
উত্তাল সাগরে ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর এমভি জাওয়াদ-এর মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় জেলে রবীন্দ্রনাথ দাশ (কানু দাশ) এভাবেই সমুদ্রে ভেসে থাকার স্মৃতিচারণ করছিলেন।
কেএসআরএম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের জাহাজ এমভি জাওয়াদ গত বুধবার (১০ জুলাই) বেলা পৌনে একটার দিকে কুতুবদিয়া থেকে ওই জেলেকে উদ্ধার করে।
আজ শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে পতেঙ্গার বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি জেটিতে তাকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি করা হয়। বাংলানিউজ
স্মৃতিচারণের সময় রবীন্দ্রনাথ দাশ বার বার কৃতজ্ঞতা জানান এমভি জাওয়াদ, কেএসআরএম, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি।
রবীন্দ্রনাথ দাশ বলেন, ‘সমুদ্রে বাঁশ ধরে ভাসছিলাম। ১৫ জন মানুষ। আমি ছাড়া সবার লাইফ জ্যাকেট ছিল। একে একে তলিয়ে যাচ্ছিলেন সহকর্মীরা। সব শেষে ছিলাম ভাইপো আর আমি। উদ্ধারের ৩ ঘণ্টা আগে ভাইপো তলিয়ে গেল।’
এতটুকু বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বঙ্গোপসাগরে উত্তাল ঢেউ আর নোনা পানির সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে যাওয়া ভারতীয় এই জেলে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)-এর মেরিটাইম এম্বেসেডর ড. সাজিদ হোসেন, কেএসআরএম-এর সিইও প্রকৌশলী মেহেরুল করিম, এমভি জাওয়াদের ক্যাপ্টেন এসএম নাসির উদ্দিন, মাস্টার পুলক কুমার ভাস্কর, মেরিন সুপার ওসমান গনি, ডিপিএ-সিএসএ ফয়েজ আহমদ জুকব, ডাক্তার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্রান্ড ম্যানেজার মনিরুজ্জামান রিয়াদ, মিজানুল ইসলাম প্রমুখ।
তারপর রবীন্দ্রনাথ দাশকে কোস্টগার্ড কার্যালয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়।