১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হতে পারেন মিন্নি শরিফ

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ৭, ২০১৯
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হতে পারেন মিন্নি শরিফ

 

অভিযোগ ডেস্কঃ নতুন একটি সিসিটিভি ফুটেজে ‘স্বাভাবিকভাবে’ হাঁটার কারণে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বরগুনায় নিহত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।এ মামলার এক নম্বর সাক্ষী মিন্নি। যে কোনো সময় পুলিশি হেফাজতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা যায়।   মিন্নি বর্তমানে পুলিশি নিরাপত্তায় বরগুনায় তার বাবার বাসায় অবস্থান করছেন।

শনিবার বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায় । ভিডিওটি ৯ মিনিট ৩ সেকেন্ডের। ভিডিও ফুটেজটির ৫ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে দেখা যায়,  নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ ১০-১২ জন রিফাতকে মারধর করতে করতে বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে বের হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন পেছন থেকে রিফাতকে ধরে রেখেছে। বাকি দুজন দুইহাত ধরেছে। ৫ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডে ফুটেজে মিন্নিকে দেখা যায়, তার বাম হাতে একটি পার্স (বেনিটিব্যাগ) ছিল। সে পার্স হাতে স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিল। একবার ডানেও তাকিয়েছেন কলেজের দিকে।

৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে যখন নয়নের সঙ্গীরা রিফাতের মাথায় হাত দিয়ে আঘাত করেন তখনও স্বাভাবিক ছিলেন মিন্নি। ৫ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডে যখন সব বন্ধুরা একসঙ্গে রিফাতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তখন প্রথমবারের মতো দৌড়ে যান মিন্নি। প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তখন দা বের করে কোপানো শুরু হয়। পেছন থেকে মিন্নিকে প্রতিরোধ করতে দেখা যায়।

এ ঘটনার পর নয়নরা যখন পালিয়ে যায় তখন একজন মিন্নিকে তার পার্সটি মাটি থেকে হাতে তুলে দেন। মিন্নি স্বাভাবিকভাবে হেঁটে হেঁটে সামনের দিকে হাঁটতে থাকেন। এ ঘটনার ৮ মিনিট পর একটি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের দুইজন কর্মকর্তা।

ভিডিওটির পর নতুন করে আসে মিন্নির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন বলেন, তদন্ত স্বচ্ছ ও সাবলীল করতে যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। সে এই মামলার একজন সাক্ষী, তদন্তের স্বার্থে যদি একবার নয় প্রয়োজনে ১০ বার তার সঙ্গে বলা হবে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’

পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও পুলিশের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে ‘কো-অপারেট’ করছেন না মিন্নি। তার বাড়িতে গেলে সে ‘স্বামীর দুঃখে কাতর’ বলে পুলিশের সঙ্গে খুব বেশি কথা বলেনি। তবে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

https://l.facebook.com/l.php?u=https%3A%2F%2Fwww.youtube.com%2Fwatch%3Fv%3Dj11zyvkmflk%26fbclid%3DIwAR0_BDSDvjds4BaqLKTG_9tjy8b7ndlTYW5NgL6hmCokZU2auvE6lQgloco&h=AT0vGhZJJdgaB8v0DwHpvomeISPUFvziKXGvCp8YowMF-rmfbrGIU4R2b4KEtY27sTqFczdovN3RHgWwI7KFmvY-RHhLKmrUG5PQuztdD-NTUFs0Xu7J74ok9J45WYPtLvV8SilzSlbUXH4

রিফাতের ও মিন্নির বাসায় পুলিশি পাহারা
গত শুক্রবার থেকে রিফাত ও মিন্নির বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, মিন্নি এই মামলার প্রধান সাক্ষী। তার নিরাপত্তার জন্য তার বাড়ির বাইরে পুলিশ রাখা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি
শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন ভিডিও ফুটেজটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকেই মিন্নিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তোলেন।

শম্পা আক্তার নামে ঢাবির এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘মিন্নি জড়িত বোঝা যায়, তার কোন ভূমিকাই নাই যখন ধরে নিয়ে যায়। দেশবাসীর চাওয়া ওকে শাস্তি দেওয়া যেন হয়। এমন নোংরা মেয়ের জন্য সব ভালো মেয়েদেরও বদনাম হয়। ‘

ইতি আক্তার নামে একজন বিবিএ’র শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘রিফাতের স্ত্রী অবশ্যই জড়িত। এই ভিডিও দেখার পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করছে না কেন?’

জেসমিন জাহান নামে আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘মিন্নির হাঁটার গতি স্লো মোশনে রিপ্লে দেখানোর মতো।’

মুন্না নামের আরেকজন লিখেছেন, প্রথমে মিন্নির সামনে থেকে যখন দুর্বৃত্তরা তার স্বামীকে ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করছিল তখন মিন্নির ‘স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া’ দেখে আমি বিস্মিত।

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় শাহনেওয়াজ রিফাতকে। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের প্রাণপণ বাধা দিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাতের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পরদিন রিফাতের স্ত্রী মিন্নি ও তার সাবেক বন্ধু সাব্বির হোসেন নয়নকে (নয়ন বন্ড) নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিতে থাকে। অনেকে হত্যাকাণ্ডের জন্য মিন্নিকে দায়ী করছেন।

২ জুলাই (মঙ্গলবার) ভোররাতে বরগুনার পুরাকাটা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে মামলার প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড নিহত হন।

 

পুনম শাহরীয়ারঋতু ( বিশেষ প্রতিনিধি)

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031