২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম ও দুর্নীতি

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ১, ২০১৯
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম ও দুর্নীতি

এইচ এম আমান, কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজিতে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে কক্সবাজার ট্রাফিক অফিস। অফিসের কার্যক্রমে ভেঙ্গে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। কর্মকর্তাদের মধ্যে চলছে ভয়াবহ অস্থিরতা। ৮ জন টিআই এর মধ্যে সব ক্ষমতা একজন মাত্র টিআই কুক্ষিগত করে রাখায় অন্য টিআইদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ¦লছে। পাশাপাশি অফিসের ভেতরে বাইরে সমানতালে চলছে অনিয়ম দূর্নীতি। অবৈধ আয়ে অনেক কর্মকর্তা কাড়ি কাড়ি টাকা, জমি ও গাড়ীর মালিক হয়েছেন। জড়িয়ে পড়েছেন অনৈতিক কর্মকান্ডেও। শুধু তাই নয়, প্রতিযোগিতামূলক ভাবে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে টিআই ও সাজের্›টরা। বিশেষ করে চিহ্নিত কয়েকজন কর্মকর্তাদের ঘনঘন বিমানে চড়া, অভিজাত হোটেলে মাস্তি ও চলাফেরার জৌলুস দেখলে আয় ব্যয়ের বিরাট ফারাকের বিষয়টি যে কারো চোখে ধরা পড়ে। ধারাবাহিকভাবে ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম দুর্নীতি চাঁদাবাজি চলতে থাকলেও তাদের লাগাম টেনে ধরার যেন কেউ নেই। ভূক্তভোগিরা অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাক্ষী গোপালের ভুমিকায় থাকায় এ পরিস্থিতি উত্তরণের সকল প্রচেষ্টাই বার বার মার খাচ্ছে।
ভূক্তভোগিরা জানিয়েছেন, বর্তমানে কক্সবাজার ট্রাফিক অফিস নিয়ন্ত্রণ করছেন টিআই কামরুজ্জামান বকুল। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বাড়াবাড়ি, বেপরোয়া ও অনৈতিক জীবন যাপনের অভিযোগ ওঠেছে। ওই ট্রাফিক কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঘনিষ্ট লোকের কাছের মানুষের নাম ভাঙ্গিয়ে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত শাসিয়ে থাকেন। এমনকি আঞ্চলিকতার ধোয়া তুলে নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং ও বিবেদ তৈরী করে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করছেন। তার অনৈতিক হস্তক্ষেপ ও দাপটের কাছে অন্যান্য টিআইসহ সার্জেন্ট ও কনষ্টেবলরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এমনকি তার ক্ষমতার দাপট এতোই বেশী যে, ট্রাফিক পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল চন্দ্র বণিকও তার কাছে অসহায়। বিভিন্ন সময় কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি বাবুল চন্দ্র বণিকের শরানপন্ন হলে তিনি অকপটে তার অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করেন। টিআই কামরুজ্জামানের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে অনেকেই কক্সবাজার ট্রাফিক অফিস থেকে চলে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু অফিস নয়, অফিসের বাইরেও তিনি লোকজনের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। কোন ব্যক্তি কোন কাজে তার কাছে গেলে তিনি তাদের সাথে অভদ্র ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এসব কারণে চাকরি জীবনে একাধিকবার শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন টিআই কামরুজ্জামান বকুল।
ভূক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি এখন স্বাভাবিক ঘটনা! প্রতিদিন শহরতলীর লিংক রোড, বাস টার্মিনাল, কলাতলী মোড়, সুগন্ধা পয়েন্ট, গোল চত্তর, শহীদ স্বরণী মোড়,সহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট বসানো হয়। এসব চেক পোস্টে সারাদিন নানা অজুহাতে শত শত সিএনজি, মটর সাইকেল আটক করা হয়। আটক এসব গাাড়ী নিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় বাণিজ্য। গভীর রাত পর্যন্ত চলে দেনদরবার। রফাদফার পর এক একটি গাড়ী ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত বিভিন্ন ফিগারে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে একটি গাড়ীরও দেখা মিলে না ট্রাফিক অফিসে। এভাবে চলছে ট্রাফিক অফিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম। জরিমানার নামে এসব টাকা আদায় করা হলেও আদায়কৃত অর্থ ব্যাংকে জমা করা হয় না। মাসশেষে নিজেরে মধ্যে ভাগভাটোয়ারা করা হয় এই টাকা। ট্রাফিক অফিসের একজন টিআই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সব টাকা আমাদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়, তা নয়। এ টাকার বড় একটি অংশ চলে যায় জেলা পুলিশের বড় কর্তার কাছে। একবার বড় কর্তার ভাগ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়। অনেকের দাবী বড় কর্তা উপরি নেন না। অথচ তার নামে টাকার বড় একটি অংশ কেটে রাখা হয়। এ টাকা যায় কোথায়, এ নিয়ে বাকবিতন্ডা চলে। পরে এ নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেন টিআই কামরুজ্জান বকুল। বলেন, বাড়াবাড়ির পরিনতি ভাল হবে না। কামরুজ্জামান বকুলের এ হুমকির পর সবাই চুপসে যান।
আবার রাস্তার মোড়ে মোড়ে দায়িত্ব পালনের সময়ও প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি আর ঘুষ গ্রহনের একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ঘুষ না দিলে গাড়ির চালকদের রাস্তায় ফেলে পিটানো, নিদিষ্ট ধারা উল্লেখ ছাড়াই কথিত মামলা দায়ের এবং আদালতে প্রেরন না করা, জরিমানার নামে আদায়কৃত অর্থ ব্যাংকে জমা না করা সহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীর নিকট ব্যক্তির কাছের লোক কাছের লোক পরিচয় দিয়ে সরাকে ধরা জ্ঞান করছে।
ভুক্তভোগী চালক ও মালিকরা আরও জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন বাস, ট্রাক, মটর সাইকেল, সিএনজি ধরে লাইসেন্স চেক করার নামে চাঁদাবাজী করছেন টিআই কামরুজ্জামান সিন্ডিকেট। তাদের কাছে যানবাহনের মালিক ও ড্রাইভাররা এক প্রকার অসহায় হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সড়কে চলাচলকারী প্রতিটি যানবাহন থেকে নিদিষ্ট রেটে টাকা তুলেন টিআই ও সার্জেন্টরা। ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র চেক করার নামে চাঁদা আদায় করে প্রতিনিয়ত। কাগজপত্র দেখার নামে বৈধ-অবৈধ যানবাহন থামিয়ে হয়রানি করে। গাড়ী বৈধ হলেও ট্রাফিক পুলিশের হাতে চাঁদা না দিয়ে রেহাই মিলছে না বলেও অভিযোগ চালকদের।
গাড়ী অবৈধ হলে সেসব গাড়ী থেকে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এসবের পেছনে সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান বকুল। তার নেতৃত্বে টিআই নাসির উদ্দিন ভূইয়া,আসাদুজ্জামান, বিল্লাল হোসেন, বিনয় কুমার বড়–য়া, জালাল হোসেন, আরিফুল ইসলাম. মুহিবুল ও মনিরুজ্জামান পুরো কক্সবাজার শহর ও শহরতলীতে আটক বাণিজ্যে ব্যস্ত থাকেন।
মোড়ে মোড়ে আটক গাড়ীর মালিক বা চালক চাহিদা মতো টাকা না দিলে সে গাড়ী আইনের মারপ্যাচে অবৈধ হয়ে যায় এবং মামলার স্লিফ ধরিয়ে দেয়া হয়। আর টাকা দিলে মুহুর্তের মধ্যে সেই গাড়ী বৈধ হয়ে যায়। এভাবে প্রতিনিয়ত ২০ হাজার ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে শত শত যানবাহন ছেড়ে দেয় ট্রাফিক পুলিশ। যে সব গাড়ী মামলার স্লিফ দিয়ে ট্রাফিক অফিসে নিয়ে আসা হয়, সেগুলো নিয়ে চলে গভীর রাত পর্যন্ত বাণিজ্য।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী চালক এ প্রতিবেদককে জানান, কলাতলী থেকে আমার সিএনজি কাগজপত্র দেখার নামে নিয়ে আসা হয়। ট্রাফিক পুলিশ কার্যাল

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30