১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সহজেই বাড়ান স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ

অভিযোগ
প্রকাশিত জুন ২২, ২০১৯
সহজেই বাড়ান স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ

—————এস আর, তথ্য ও প্রযুক্তিসম্পাদক :

স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় প্রায় সবারই ব্যাটারি লেভেল নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়। অনেকে ব্যাটারির চার্জ ফুরানোর ভয়ে ফোনের ব্রাইটনেস এত কমিয়ে রাখেন যে, স্ক্রিনে কিছু দেখাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এ পদ্ধতি ফোনের ব্যাটারি সাশ্রয় করে। এছাড়া আরো কিছু কৌশল আছে যেগুলো অনুসরণ করলে সহজেই স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধি পায়। চলুন সেগুলো জেনে নেই।

নেটওয়ার্ক

দুর্বল নেটওয়ার্ক ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপের জন্য ক্ষতিকর। যেসব স্থানের নেটওয়ার্ক দুর্বল, সেসব স্থানে ইন্টারনেট ও ভয়েস কল সেবা ব্যবহারে ব্যাটারির শক্তি অতিরিক্ত পরিমাণে খরচ হয়। কারণ, এটি বার বার রিকানেক্ট হয়। যদি আপনার ফোনে চার্জ কম থাকে, তবে এসব জায়গায় ফোনের ফ্লাইট মুড চালু করে রাখলে ব্যাটারি বেঁচে যাবে। যদিও ফ্লাইট মুড চালু করলে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে ফ্লাইট মুডে ফোনের ওয়াই-ফাই কাজ করে।

নোটিফিকেশন

ফোনে নানা ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করা হয়। এসব অ্যাপ বিভিন্ন ধরনের নোটিফিকেশন দেয়। ফেসবুক কমেন্ট, মেসেঞ্জারের মেসেজ বা ইমো’র মিসড কল প্রভৃতি নোটিফিকেশনের কারণে ফোনের ব্যাটারির চার্জ খরচ হয়। এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলো নির্দিষ্ট সময় পরপর নতুন বার্তা দেখানোর জন্য ব্যাকগ্রাউন্ডেই রিফ্রেশ হয়। তাই আপনি যদি ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পেতে চান, তাহলে ফোনের এসব অ্যাপের নোটিফিকেশন সেটিংসে গিয়ে যত কম সম্ভব নোটিফিকেশন পাওয়ার ব্যবস্থা করুন।

ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ

ফেসবুক, স্কাইপ, মেসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ প্রভৃতি অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ডেও চলতে থাকে। এদের নোটিফিকেশন প্রয়োজন না হলে এগুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড রিফ্রেশ বা অটো-স্টার্ট পারমিশন বন্ধ রাখা ভালো। এতে ব্যাটারি খরচ কম হয়।

জিপিএস, ব্লুটুথ, ওয়াইফাই
ব্লুটুথ বা জিপিএস এর মতো সার্ভিসগুলো ফোনের ব্যাটারির শক্তি খরচ করে। তাই প্রয়োজন না হলে জিপিএস, ব্লুটুথ বা ওয়াইফাই চালু না রাখাই ভালো।

ফটোগ্রাফি

আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, ছবি তুলতে এবং ভিডিও রেকর্ড করতে কী পরিমাণ চার্জের প্রয়োজন হয়। ছবি তুললে, বিশেষত ভিডিও করলে ক্যামেরার কাজের জন্য অনেক পরিমাণ চার্জের দরকার হয়। এ সময় আপনি ফোনের অন্য সার্ভিসগুলো বন্ধ করে শুধু ছবি বা ভিডিও করার দিকে মনোযোগ দিতে পারেন। এতে অন্তত কিছুটা হলেও ব্যাটারি সাশ্রয় হবে। আর প্রয়োজন ছাড়া ফ্ল্যাশ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

জিপিএস এর কৌশলী ব্যবহার

হ্যাঁ, চলাচলের সময় আপনি জিপিএস ব্যবহার করতেই পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ এসব অ্যাপে শুধু শুধু জিপিএস ব্যবহারের দরকার নেই। এমন ব্যবহারে আপনার ব্যাটারির অতিরিক্ত শক্তি খরচ হয়। তাই এটির পরিমিত ব্যবহার করুন। কোথাও যেতে চাইলে সেখানকার গুগল ম্যাপ ডেটা আগে থেকে ডাউনলোড করে নিলে পরে সেখানে গিয়ে অফলাইনে ম্যাপ ব্যবহার করতে পারেন- এতে নেটওয়ার্কিং এর জন্য শক্তি ব্যয় করতে হবেনা!

স্ক্রিন ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ

স্ক্রিনের অটো ব্রাইটনেস ফিচার বন্ধ রাখুন। এটি চালু থাকলে ফোনের সেন্সর সব সময় কাজ করে, আর আপনার চারপাশের আলো অনুযায়ী স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমায় ও বাড়ায়। এতে অতিরিক্ত ব্যাটারি শক্তি খরচ হয়। এর চেয়ে বরং নিজেই একটা নির্দিষ্ট স্ক্রিন ব্রাইটনেস লেভেল নির্ধারন করে নিন। প্রয়োজনে কিছুক্ষণ পর আবার পরিবর্তন করুন।

লাইভ ওয়ালপেপার ও উইজেট

ফোনের লাইভ ওয়ালপেপার সাধারণ ওয়ালপেপারের তুলনায় বেশি চার্জ খরচ করে। সুতরাং, ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি চাইলে লাইভ ওয়ালপেপার ব্যবহার করা বন্ধ করুন। বিভিন্ন উইজেট, যেমন আবহাওয়া, ইমেইল, নিউজ, প্রভৃতি, যেগুলো নির্দিষ্ট সময় পরপর আপডেট হয়, সেগুলো ব্যবহার কমালে তা ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উপকারী হবে।

খুব গরম বা খুব ঠান্ডা স্থানে

অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পরিবেশ ফোনের ব্যাটারি জন্য ক্ষতিকর। ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস হচ্ছে মোবাইলের ব্যাটারির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা। এর চেয়ে বেশি হলে সেটি কার্যক্ষমতা হারাবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কোন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি রাখা হলে প্রতি বছর সেটি ২০% ধারণক্ষমতা হারাবে। আর সর্বোচ্চ ৪০-৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় ব্যাটারিটি তাৎক্ষণিক ক্ষতি (যেমন বিস্ফোরণ) থেকে নিরাপদ থাকবে।

সফটওয়্যার আপডেট

আপনার ফোনের অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপস আপডেটেড রাখুন। কেননা ডেভেলপাররা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করেন ফোনের অ্যাপ্লিকেশন বেশি ব্যবহারবান্ধব করে তোলার। সুতরাং আপডেটেড সফটওয়্যার ব্যাটারির জন্য ভালো হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

টুজি/থ্রিজি/ফোরজি

থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্কে ফোন ব্যবহার করলে তা টুজি নেটওয়ার্কের চেয়ে বেশি ব্যাটারির শক্তি খরচ করে। যদিও টুজি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটের গতি কম থাকে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ভয়েসের মানও কিছুটা কম হয়, তাই আপনি চাইলে এই সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে শুধুমাত্র বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়ার জন্য টুজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারেন। ফোনের নেটওয়ার্ক সেটিংসে গিয়ে ২জি/৩জি/৪জি নেটওয়ার্ক বাছাই করা যাবে।

ভাইব্রেশন

ফোনের ভাইব্রেশন ফিচারটির জন্য মোবাইলের মধ্যে একটি ছোট মোটর দেয়া থাকে। এটি বেশ চার্জ খরচ করে। তাই টাচ ও অন্যান্য ইফেক্টের ক্ষেত্রে ভাইব্রেশন বন্ধ রাখা জরুরি। ফোন কলের ক্ষেত্রে ভাইব্রেশন বন্ধ করলে চলতি পথে সেটা আবার অসুবিধার কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে কেউ কল করলে আপনি হয়ত টের পাবেন না। সুতরাং কখন ভাইব্রেশন থাকবে, আর কখন থাকবে না, সেটাও আপনাকেই ঠিক করতে হবে।

পাওয়ার সেভিং মুড

প্রতিটি স্মার্টফোনেই ব্যাটারি সেভিং বা পাওয়ার সেভিং মুড থাকে। আইফোনে এটাকে বলে ‘লো পাওয়ার মুড’। এই মুডগুলো চালু করলে ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ অধিকাংশই বন্ধ থাকে। স্ক্রিনের ব্রাইটনেসও কমে যায়। এটি আপনার ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ বৃদ্ধির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031