৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

চট্রগ্রাম ফৌজদারহাট সড়কে মৃত্যুর মিছিল

admin
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৩, ২০২০
চট্রগ্রাম ফৌজদারহাট সড়কে মৃত্যুর মিছিল

Sharing is caring!

 

আব্দুল করিম, চট্রগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধানঃ

চট্রগ্রাম- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে জেব্রা ক্রসিংয়ের সংকেত একে চালকদের সতর্ক করার উদ্যোগ নিয়েছে ফৌজদারহাট ট্রাফিক কার্যালয়। গতকাল রবিবার দুর্ঘটনাপ্রবণ ঐ স্থানে সাদা রংয়ের জেব্রাক্রসিং একে ধীরে ধীরে যান চলাচল করতে গাড়ি চালকদের নির্দেশনা দেন ঐ কার্যালয়ের পুলিশ সদস্যরা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু- অংশে প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গত ১৫ দিনে এখানে নিহত হয়েছে অন্তত ১২জন। এদিকে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটলেও এখানে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে উপজেলার ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে। শুধু এই স্থানে গত ১৫ দিনে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৪জন। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই সড়কে চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম ও ঢাকামুখী তিনটি রোডের সংযোগ থাকায় প্রচুর যানবাহন আসা যাওয়া করতে গিয়ে বারবার দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে।এতে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দূরাগত যাত্রীরা আতংকিত হয়ে উঠেছে।পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২৮ ডিসেম্বর উপজেলার সর্ব দক্ষিণের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে কার দুর্ঘটনায় মারা যান বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ন পরিচালক সাইফুজ্জামান খান মন্টু ও তার দুই মেয়ে। এ ঘটনায় আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে। এরপর দিন একই স্থানে মারা যান পথচারী আম্বিয়া খাতুন। এরপর ৭ জানুয়ারী ফের দুর্ঘটনা ঘটে ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে। এই ঘটনায় নিহত হন আড়ং এর এক গাড়ি চালক বাবলু ফকির, এ ঘটনার একদিন পর ৯ জানুয়ারী কুমিরায় দুর্ঘটনায় আব্দুল্লাহ ও মেজবা উদ্দিন নামক দুইজন ও সলিমপুর ফকিরহাটে আরেকটি দুর্ঘটনা দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধ মহিলা নিহত ও তার সাথে থাকা শিশু আহত হয়। এরপর ১১ জানুয়ারি আবারো দুর্ঘটনা ঘটে ফৌজদারহাটের একই স্থানে। বন্দর সংযোগ সড়কে এদিন গাড়ি চাপা পড়ে মারা যান দুই মোটরসাইকেল আরোহী। এরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল মো. আলমগীর ও ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম এবং সর্বশেষ গতকাল রবিবার ফের দুর্ঘটনা ঘটে উপজেলাধীন মহাসড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকায়। এ দুর্ঘটনায় নিহত হন তসলিম উদ্দিন নামক বাঁশবাড়িয়া এলাকার এক যুবক।
এদিকে উপজেলার অন্যান্য স্থানের তুলনায় ফৌজদারহাট-বন্দর লিংক রোডে দুর্ঘটনা বেশি হবার কারণে নড়ে চড়ে বসেছে কাছাকাছি থাকা ফৌজদারহাট ট্রাফিক কার্যালয়ের সদস্যরা। এই কার্যালয়ের ইনচার্জ টি.আই রফিক আহমদ মজুমদার উদ্যোগ নিয়ে গতকাল এখানে সুবিশাল আকারে জেব্রা ক্রসিংয়ের চিহ্ন এঁকেছেন। সেখানে লেখা হয়েছে থামুন, ধীরে ধীরে চলুন। শুধু লিখেই কর্তব্য শেষ করেননি তিনি। সেখানে কার্যালয়ের সদস্যদের মাধ্যমে সংকেতের মাধ্যমে ক্রসিংকালে গাড়িগুলোকে ধীরে চলতে বাধ্য করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফৌজদারহাট ট্রাফিক কার্যালয়ের ইনচার্জ রফিক আহমেদ মজুমদার বলেন, সীতাকু-ের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে বারবার দুর্ঘটনায় প্রানহানি হচ্ছে। এ কারণে বাড়তি সচেনতার প্রয়োজন। দূর থেকে যেন গাড়ি চালকরা এই চিহ্ন দেখে যানবাহন সাবধানে চালান সেটাই আমাদের লক্ষ। তাই সেখানে আমাদের পুলিশ সদস্যদের দাড়িয়ে থেকে গাড়িগুলোকে এই সংকেত মানাতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। তিনি বলেন, আমাদের এই কাজের পাশাপাশি যদি চালকরাও একটু সতর্ক হন তাহলে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা কমবে বলে আমি মনে করছি। এ বিষয়ে বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ইনচার্জ পরিদর্শক মো. আবদুল আওয়াল বলেন, এখানে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাবার পেছনে প্রধান কারণ হলো অসচেতনতা। এখানে বেশিরভাগ মৃত্যু হচ্ছে গাড়ি না দেখে দৌঁড়ে মহাসড়ক পারাপার হতে গিয়ে। আর ফৌজদারহাট-বন্দর লিংক রোডে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ গাড়ি চালকদের অসতর্কতা। তারা ইউর্টানের সময় অন্য গাড়ির দিকে না তাকিয়ে দ্রুত অতিক্রম করতে গিয়ে এসব দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছেন। চালক ও পথচারীরা সচেতন হলেই কেবল প্রাণহানি কমতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন তিনি।