Sharing is caring!
মারুফ রানা,দোহা (কাতার) থেকেঃ গত ১৬ অক্টোবর কাতারের মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতভাবে নতুন শ্রমনীতির নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ফলে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকরা আগের চেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।
কাতারের শ্রমমন্ত্রী ইউসুফ বিন মুহাম্মদ উছমান ফখরু আন্তর্জাতিক শ্রম সস্থার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানিয়েছেন।
নতুন আইনটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এটি আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।
এই আইনে বিদেশি শ্রমিকরা যেসব উল্লেখযোগ্য সুবিধা পাবেন, সেগুলোর মধ্যে তিনটি সুবিধা সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য।
কাতারে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সর্বনি মজুরি বা বেতন নির্ধারিত করা হবে। ফলে কোনো কোম্পানি এর চেয়ে কম বেতন নির্ধারণ করতে পারবে না।
বর্তমান কোম্পানির সাথে চুক্তি থাকার পরও প্রয়োজনে যদি কেউ কোম্পানি পরিবর্তন করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে দু পক্ষের কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি বিবেচনায় রেখে কোম্পানি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।
কাতারে সাধারণত এখন দেশে যেতে কোম্পানির অনুমতির প্রয়োজন নেই।
তবে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ব্যক্তিদের বেলায় অনুমতি নিতে হয়। নতুন আইন চালু হলে এটিও উঠিয়ে নেওয়া হবে এবং যে কোনো বিদেশি শ্রমিক কফিল বা কোম্পানির অনুমতি ছাড়া দেশে যেতে পারবেন। এমনকি ঘরে যারা কাজ করেন, তারাও।
শ্রমিকদের সুরক্ষা ও অধিকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে কাজ করে আসা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গাই রাইডার কাতার সরকারের শ্রমনীতি সংস্কারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এসব পদক্ষেপ অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার যেমন নিশ্চিত করবে, তেমনি তাদের মাধ্যমে কাতারের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতাও বাড়বে, অর্থনীতিও সুসংহত হবে।
আইএলও বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি টুওমো পোটিয়াইনেন বলেন, ‘কাতারে যে ৪ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক আছেন, তাদের ৭৫ শতাংশই নির্মাণশিল্পে জড়িত। নতুন সংস্কারের কারণে তারা সরাসরি উপকৃত হবেন। এর ফলে বৈষম্যআহীন মজুরি ও শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
কাফালা বা স্পনসরশিপ ব্যবস্থাটি কাতারে শুরু হয়েছিল ১৯৫০ সালে। দেশটির অর্থনৈতিক বিকাশের ওই সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত শ্রমিক সরবরাহ এবং প্রয়োজন ফুরালে দ্রুত ফেরত পাঠানোর সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছিল এই ব্যবস্থায়। গালফ সহযোগিতা কাউন্সিল বা জিসিসি সদস্য ভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি জর্ডান ও লেবাননে এখনও এ ব্যাবস্থাটি কার্যকর রয়েছে।
কাফালা ব্যাবস্থায় অভিবাসী শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তনের জন্য নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) বাধ্যতামূলক ছিল।
সামরিক বাহিনী বাদে অন্য কর্মস্থলের শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তন ও বহির্গমনের জন্য অনাপত্তিপত্র বাধ্যতামূলক নয় মর্মে কাতারের মন্ত্রিসভায় একটি ডিক্রিও অনুমোদন করেছে।