শাহ মোঃ রেজাউল ইসলা, সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের ৬৪ হাজার গ্রামবাংলার গ্রাম, গঞ্জে! পাড়া মহল্লায়! সকলেরই সুপরিচিত একটি নাম হানিফ সংকেত।
তিনি একজন, উপস্থাপক, পরিচালক, অভিনেতা, প্রযোজক, লেখক; নানামাত্রিক গুণের এই মানুষটির নাম হানিফ সংকেত। বাংলাদেশে স্যাটেলাইট চ্যানেল তখনও এদেশে পা রাখেনি।
বাক্সে বন্দি সেই সময়ের, বিনোদনেরকি জনপ্রিয় মাধ্যম তখন ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।
সেই বিটিভিতে আশির দশক থেকেই তুমুল জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের নাম ‘ইত্যাদি’।
অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক হিসেবে কথার জাদু ছন্দে ছন্দে মন মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেশব্যাপী পরিচিতি পেয়েছিলেন হানিফ সংকেতও তার জনপ্রিয়তা এখনো বহমান। আজ নন্দিত জনপ্রিয় এই মানুষটির জন্মদিন।
বিবিসিসহ দেশের প্রতিটি জরিপ মতে, স্যাটেলাইট চ্যানেলের যুগে এসেও ‘ইত্যাদি’ দেশের সেরা টিভি অনুষ্ঠান এবং দেশের ৭৫ শতাংশ টিভি দর্শক এ অনুষ্ঠান দেখে থাকেন।
১৯৫৮ সালের এই দিনে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন হানিফ সংকেত।
প্রয়াত ফজলে লোহানীর ‘যদি কিছু মনে না করেন’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান দিয়ে প্রথম তার প্রতিভা প্রকাশ পায়।
হানিফ সংকেত তার পরিচালিত ও উপস্থাপিত অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে কেবল হাস্যরসকে তুলে ধরেন না, সামাজিক অসঙ্গতি, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম তুলে ধরেন।কিছুটা রম্যভাবে তিনি সমসাময়িক নিন্দিত ঘটনার বর্ণনা ও তার বিরোধিতা করে সামাজিক করণীয় তুলে ধরেন তিনি।
হানিফ সংকেত নিজের কাজের ব্যাপারে খুব সচেতন একজন মানুষ।
ক্যামেরার সামনে খুব বেশি এলেই যে তারকা বা ব্যক্তিত্ব হওয়া যায় না তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হানিফ সংকেত।নাটকেও সিদ্ধহস্ত হানিফ সংকেত।
তার পরিচালিত জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে ‘আয় ফিরে তোর প্রাণের বারান্দায়’ ‘দুর্ঘটনা’ ‘তোষামোদে খোশ আমোদে’ ‘কিংকর্তব্য’ ‘কুসুম কুসুম ভালোবাসা’, ‘শেষে এসে অবশেষে’ উল্লেখযোগ্য।
চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন হানিফ সংকেত। বেশ কয়েকটি ব্যঙ্গ ও রম্য রচনা লিখেছেন তিনি। ‘চৌচাপটে’, ‘এপিঠ ওপিঠ’, ‘ধন্যবাদ’, ‘অকাণ্ড কাণ্ড’, ‘খবরে প্রকাশ’, ‘ফুলের মতো পবিত্র… ’, ‘প্রতি ও ইতি’, ‘আটখানার পাটখানা’ অন্যতম।
এ ছাড়া তার লিখিত রম্য সাহিত্য পাঠক সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়।
সামাজিক কার্যক্রমের জন্য ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ সালে একুশে পদক পুরস্কার পান হানিফ সংকেত।
পরিবেশ শিক্ষা ও প্রচারের জন্য ২০১৪ সালের
জাতীয় পরিবেশ পদক দেয়া হয় তাকে। এ ছাড়া তিনি দেশে-বিদেশে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।