যমুনা অয়েলের ঢাকা অফিসের এজিএম কেমিক্যাল আব্দুল্লাহ রশিদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত বিপুল সম্পদ অর্জন এবং নগদ অর্থের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি অবৈধ অর্থে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট তৈরী করেছেন। যা এসএটিভির ক্যামেরায় উঠে এসেছে। ২০১৭ সালে চট্টগ্রামে যমুনা অয়েলে দায়িত্ব পালনকালে চাঁদপুরের ইরাবতি জাহাজ থেকে ৭ লাখ লিটার তেল চুরির ঘটনায় ঢাকায় শাস্তিমূলক বদলি ও চাকুরি থেকে অব্যাহতির পরও রহস্যজনকভাবে তিনি অফিসে বসে সেই আগের কাজেই ব্যস্ত রয়েছেন। পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান এসএটিভির কাছে বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।

অনলাইন-অফলাইন গণমাধ্যমের লাল-কালো শিরোনামে প্রতিনিয়তই যমুনা অয়েলের তেল চুরির ঘটনা ফলাও করে প্রকাশিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় এই সম্পদ চুরি করে এ সেক্টরের অসংখ্য রাঘববোয়াল কর্মকর্তারা কোটি কোটি টাকা বানিয়েছেন। তেল উধাওয়ের ঘটনায় সংস্থাটির প্রভাবশালী কর্মকর্তারা সিন্ডিকেটের মূলহোতা হয়েও তারা থেকে যান ধরাছোয়ার বাইরে। মাঝেমধ্যে লোক দেখানো শাস্তিভোগ করতে হয় নিম্নশ্রেণীর কর্মচারীদের।

প্রভাবশালীদের একজন আব্দুল্লাহ রশিদ। বর্তমানে যমুনা অয়েলের ঢাকা অফিসে এজিএম কেমিক্যাল হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের প্রধান কার্যালয়ে ছিলেন এজিএম ডিপো অপারেশনের দায়িত্বে। ওই সময় তেল চোর সিন্ডিকেটের সাথে সম্পৃক্ত থেকে বিপুল অর্থ লোটার প্রমাণ মেলায় তাকে বদলি করা হয় ঢাকায়। তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান করছে দুদক।

এস এ টিভির অনুসন্ধানে জানা যায়, যমুনা অয়েলের প্রভাবশালী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ রশিদের ধানমন্ডি ৬ নাম্বার রোডের ৩৫ নাম্বারের এই বাড়িতে রয়েছে একটি অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট। এখানেই তিরি পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। এসএটিভির পরিচয়ে কেয়ারটেকারের মাধ্যমে ইন্টারকমে কথা বলতে চাইলে আব্দুল্লাহ রশিদ বাসায় নেই বলে ফোন কেটে দেয়া হয়।

ধানমন্ডি-২ এর ৫০ নাম্বারে নির্মাণাধীন ভবনে প্রায় ৬ কোটি টাকায় কিনা আরো একটি ফ্ল্যটের সন্ধান পায় এসএটিভি ।

এরপর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ায় যাত্রা এসএটিভি টিমের। লালমাটিয়ার ‘ই’ ব্লকে ৩/১৩ প্লটের তৃতীয় তলার সি-২ ফ্ল্যাটটিও আব্দুল্লাহ রশিদের।

নেমপ্লেটে এখনো নাম না ওঠায় কেয়ারটেকারও জানে না এই ফ্ল্যাটের মালিক কে?

এবার যাত্রা উত্তরায়। ১১ নাম্বার সেক্টরের ৭ নাম্বার রোডের ২৪/২৬ মুনসুন ভবনে এফ-৪/সি ফ্ল্যাটটির মালিকও নাকি আব্দুল্লাহ রশিদ।

এতসব অভিযোগের সত্যতা জানতে যমুনা অয়েলের প্রধান কার্যালয়ে আব্দুল্লাহ রশিদের মুখোমুখি হয়ে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন পরে ফোন করে আসবেন।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, উপরের প্রভাবেই দুর্নীতিকারীরা বেপরোয়া।

পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান জানান, দুর্নীতির নানা অভিযোগে আব্দুল্লাহ রশিদকে এরই মধ্যে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

অব্যাহতির পরও কিভাবে আব্দুল্লাহ রশিদ অফিস করছেন– জানতে চাইলে চেয়ারম্যান তার জবাব দেন।